সুনামগঞ্জের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত, আশ্রয়কেন্দ্রে ছুটছে মানুষ
টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জের সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। শহরের নিচু এলাকায় পানি প্রবেশ করছে। আশ্রয়কেন্দ্রে ছুটছে বানভাসী মানুষ।
সুনামগঞ্জ সদর, ছাতক, তাহিরপুর, দোয়ারাবাজার, বিশ্বম্ভরপুর, মধ্যনগরসহ ছয় উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। তলিয়ে গেছে রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ি। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন এসব এলাকার পাঁচ লাখের বেশি মানুষ।

শহরতলীর হাছননগরের কৃষক কাউছার মিয়া চলতি বছর ১০ একর জমিতে বোরো ধানের আবাদ করেন। সেখান থেকে ধান পেয়েছিলেন ৭০ মণ। এরমধ্যে ৫০ মণ ধান বিক্রি করে দেন। বাকি ৩০ মণ ধান খাওয়ার জন্য রেখে দেন। বন্যার পানি ঘরে ওঠায় বস্তাবন্দি ধানগুলো ঠেলাগাড়ি করে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে যান।
কাউছার মিয়া বলেন, বন্যায় ঘরের সব ধান পানিতে ভেসে যায়। এ বছর ঘরে পানি প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গে ধানগুলো আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে যাচ্ছি।

আরও পড়ুন: আশ্রয়কেন্দ্রে ছুটছে মানুষ
দেশি-বিদেশি মুরগি বিক্রি করে সংসার চলে শাহীন মিয়ার। গত বছর বন্যার পানিতে ৫০টি মুরগি মারা যায়। এ বছরও বন্যার পানি ইতোমধ্যে বসতভিটায় উঠে গেছে। তাই স্ত্রী-ছেলেকে আশ্রয় কেন্দ্রে রেখে মুরগিগুলো খুঁজছি।
সুনামগঞ্জের নিচু এলাকা ও সীমান্তবর্তী নিম্নাঞ্চলে বন্যার পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ায় ৫-৬ লাখেরও বেশি মানুষ ভোগান্তিতে পড়েছেন। অনেকে বসতভিটার গুরুত্বপূর্ণ আসবাবপত্র নৌকায় নিয়ে ছুটছেন আশ্রয়কেন্দ্রে। আবার অনেকে কোনো রকম ছেলে-মেয়েদের নিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছেন।

তবে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বন্যা মোকাবিলায় ৪৪৯ মেট্রিক টন জিআর চাল, ২২ লাখ টাকা ও দুই হাজার শুকনা খাবার মজুত রাখা হয়েছে।
স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক জাকির হোসেন বলেন, নিম্নাঞ্চলের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়লে তাদের উদ্ধারে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
লিপসন আহমেদ/আরএইচ/জেআইএম