বিক্রি না হওয়ায় ঘরে ফিরে এলো টাইগার বাবু
শেরপুরের কোরবানির হাট কাঁপানো জেলার সবচেয়ে বড় ও ‘স্মার্ট’ গরু খ্যাত ‘টাইগার বাবু’ বিক্রি হয়নি। মালিকভক্ত টাইগার বাবুর দাম হাঁকা হয়েছিল ১৬ লাখ টাকা। তবে ৪০ মণ ওজনের টাইগারের স্থানীয় বাজারে আট লাখ টাকা দাম উঠলেও ঢাকার উত্তরা দিয়াবাড়ির হাটে তার সর্বোচ্চ দাম ওঠে ছয় লাখ টাকা। তাই টাইগারকে নিজের বাড়িতে ফিরিয়ে এনেছেন খামারি রঞ্জু ইসলাম লিখন।
শেরপুরের নকলা উপজেলার পলাশকান্দি এলাকার বাসিন্দা খামারি রঞ্জু ইসলাম লিখন বলেন, আমার পালের গরু এই টাইগার বাবু। পরম যত্নে আমরা বড় করেছি। টাইগার খুব শান্ত স্বভাবের। দুই বছর আট মাস বয়সী টাইগারের প্রতি আমাদের পরিবারের সবারই মায়া জন্মে গেছে। এরপরও যেহেতু ঈদের জন্য টাইগারকে প্রস্তুত করা হয়েছিল, তাই হাটে বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। কাঙ্ক্ষিত দাম না পাওয়ায় ফিরিয়ে এনেছি। আমি যেহেতু কৃত্রিম উপায়ে মোটা তাজা করিনি, তাই আমার কোনো শঙ্কা নেই। আমি আরও কিছুদিন ঘরে রেখে ন্যায্যদামে টাইগারকে বিক্রি করতে পারবো বলে আমার বিশ্বাস।

খামারি লিখনের তথ্যমতে, তার খামারের ১৬টি গরুর মধ্যে সবচেয়ে আকর্ষণীয় টাইগার। ছয় দাঁতের এ ষাঁড়ের খাবার ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য দিনে ১৬০০ টাকা খরচ করতে হয়। টাইগারের প্রিয় খাবার নেপিয়ার ঘাস। সরকার অনুমোদিত ওষুধ ও খাদ্যের বাইরে কোনো খাবার খাওয়ানো হয় না তাকে।
তিনি বলেন, ঢাকায় নিয়ে যাওয়া-আসার পরও এখন পর্যন্ত কোনো অস্বাভাবিক আচরণ করেনি টাইগার। তাই তাকে আরও কিছুদিন পরিচর্যা করতে চাই।

লিখন বলেন, এবার ঈদের হাটে বড় গরুর দাম খুব কম ছিল। সবার টার্গেট ছিল দেড়-দুই লাখের মধ্যে গরু কেনার। তাই বড় গরুর চাহিদা খুব কম ছিল। টাইগারের সর্বোচ্চ দাম বলেছে ছয় লাখ টাকা। এ দামে গরু বিক্রির কোনো ইচ্ছা আমার নেই। তাই ফিরিয়ে এনেছি। পরে বিক্রি করবো।
নকলা উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. সুজন মিয়া বলেন, এক বছর আগে আমি এ উপজেলায় জয়েন করার পর থেকেই টাইগারের মালিক নিয়মিত আমাদের দপ্তরে যোগাযোগ করতেন। যেকোনো প্রয়োজনে আমরা তাকে পরামর্শ দিতাম। সময় মতো কৃমিনাশকসহ নিয়মিত পরিচর্যায় টাইগার এখন জেলার সবচেয়ে বড় গরু। যেহেতু ঈদে বিক্রি হয়নি, টাইগারকে আরও কিছুদিন লালন পালন করা যাবে। এমনকি মালিক চাইলে সামনের ঈদে বিক্রি করতে পারেন। কারণ টাইগারের স্বাস্থ্যগত কোনো ত্রুটি নেই।
ইমরান হাসান রাব্বী/এফএ/জিকেএস