ভরা মৌসুমেও মাছশূন্য নদীতে জেলেদের হাহাকার

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি কুড়িগ্রাম
প্রকাশিত: ০৬:১৫ পিএম, ১১ জুলাই ২০২৩

কুড়িগ্রামে সবকটি নদ-নদী পানিতে টইটম্বুর। খাল, বিল, জলাশয় ভরে গেছে বৃষ্টির পানিতে। বর্ষার এ মৌসুমে জেলেদের আশা মাছও ধরা পড়বে বেশি। তবে এ বছর সেই আশার গুড়ে বালি পড়েছে জেলেদের। জেলেরা নদীতে নামলেও আশানুরূপ মাছ না পেয়ে খালি হাতে ফিরছেন। এতে সংকটে পড়েছে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করা জেলে পরিবারগুলো।

অনেকে ঋণ করে নৌকা, জাল কিনলেও নদীতে মাছ না পাওয়ায় ঋণ পরিশোধ নিয়ে পড়েছেন দুশ্চিন্তায়। ঋণ পরিশোধ তো দূরের কথা মাছ বিক্রি করে দু’বেলা ভাতও জুটছে না বলে জানিয়েছেন জেলেরা।

বিজ্ঞাপন

jagonews24

সরেজমিনে দেখা যায়, কুড়িগ্রামের ধরলা নদীতে মাছ ধরতে এসেছেন জেলে রহিম সাধু, ময়নাল, তারা মিয়া ও গণেশচন্দ্রের দল। তারা চারজনে মিলে প্রায় ৭৫ হাজার টাকা খরচ করে কিনেছেন জাল, নৌকাসহ মাছ ধরার সরঞ্জাম। গত এক সপ্তাহ থেকে তারা সারারাত নদীতে পড়ে থাকলেও মাছ পাচ্ছেন না। যেসব মাছ পাচ্ছেন তা নিতান্ত হতাশাজনক। ভরা নদীতে বড় মাছের পরিবর্তে পাচ্ছেন ছোট ছোট পুঁটি, মলা ও ইছা মাছ। সারারাত জেগেও কষ্টের দাম পাচ্ছেন না তারা।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

তারা জানান, দলবেঁধে মাছ ধরতে গিয়ে জুটছে তিন থেকে চার কেজি মাছ। এ মাছ বিক্রি করে ভাগে পাচ্ছেন ১০০ থেকে ১৫০ টাকা মাত্র। অথচ এই মৌসুমে পাওয়ার কথা ১-২ মণ মাছ।

jagonews24

কথা হয় কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার মাঝিপাড়া গ্রামের সুশান্ত রায়ের সঙ্গে। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, সারা বছর নদীতে মাছ ধরে সংসার চালাই। গত কয়েক বছর ধরে নদীতে তেমন মাছ পাচ্ছি না। আমরা আশায় থাকি নতুন পানি এলে নদীতে মাছ বেশি পাবো। তিনমাস মাছ বিক্রি করে সারা বছরের খোরাক মিটাবো। কিন্তু এ বছর যা দেখছি তা খুবই হতাশাজনক। ঋণ করে নৌকা বানিয়েছি, নতুন জাল কিনেছি। গত কয়েক মাস ধরে নদীতে মাছ ধরতে যাই। কিন্তু মাছ পাই না।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

মোগলবাসা ধরলা নদীর পাড় এলাকার অনন্ত কুমার বলেন, সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ছিটকি জাল নিয়ে নদীতে দাঁড়িয়ে আছি। নদীতে পানি থাকলেও মাছ নেই। এখন পর্যন্ত নিজেদের খাওয়ার মাছই জুটলো না।

জাগোনিউজের খবর পেতে ফলো করুন

কুড়িগ্রাম জেলা মৎস্য কর্মকর্তা কালিপদ রায় বলেন, বর্ষা মৌসুমে নদ নদীতে পানি থাকায় বড় মাছ ধরা পড়ার খবর পাই। তবে ছোট মাছ আশানুরূপ থাকে না। এবার চিত্রটা ভিন্ন। কেননা মাছের বংশ বৃদ্ধির সময় পোনা মাছগুলো ধরার কারণে মাছের এই সংকট। এছাড়া নদীর নাব্য না থাকায় মাছের বংশবৃদ্ধিতে অনেকটা প্রভাব পড়ে। আমরা উন্মুক্ত জলাশয় ও পুকুরে মাছের পোনা ছেড়েছি। এছাড়া নিষিদ্ধ জাল দিয়ে মাছ ধরা, মাছের বংশ বৃদ্ধির সময়টা জেলেরা যাতে মাছ না ধরে এ বিষয়েও সচেতন করা হয়।

ফজলুল করিম ফারাজী/এফএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন jagofeature@gmail.com ঠিকানায়।