সাতক্ষীরায় পানিবন্দি শতাধিক পরিবার
সাতক্ষীরার আশাশুনিতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে খাজরা ও বড়দল ইউনিয়নের অন্তত পাঁচ গ্রাম। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন ওই এলাকার শতাধিক পরিবার।
স্থানীয়রা জানান, কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে উপজেলার গজুয়াকাটি, ফটিকখালী, রাউতাড়া, পাঁচপোতা ও বাইনতলা গ্রামের নিম্নাঞ্চলে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে। পানি ওঠায় ব্যহত হচ্ছে স্থানীয় গজুয়াকাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম।

তেজেন্দ্র নাথ বৈদ্য নামের স্থানীয় একজন জানান, আগে থেকে এসব গ্রামে সুপেয় পানির সমস্যা ছিল। এরপর চারদিকে লোনা পানি জমায় সুপেয় পানির সমস্যা আরও তীব্র হচ্ছে।
আরও পড়ুন: কুয়াকাটা পৌরসভার শতাধিক পরিবার পানিবন্দি
গজুয়াকাটি গ্রামের সত্য চন্দ্র বৈদ্য বলেন, ২৮ জুন থেকে ২ জুলাই পর্যন্ত টানা বর্ষণে পাশের লোনাজলের চিংড়ি ঘের প্লাবিত হয়ে খাজরা ইউনিয়নের গজুয়াকাটি, ফটিকখালী, রাউতাড়া এবং বড়দল ইউনিয়নের পাঁচপোতা ও বাইনতলা গ্রামে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। লবণ পানিতে তলিয়ে গেছে শতাধিক বসতঘর। ১৩ দিন অতিবাহিত হওয়ার পরও জল অপসারণ না হওয়ায় আমরা চরম অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে পড়ে আছি।
তিনি বলেন, আমাদের এলাকার অধিকাংশ মাটির ঘর। দীর্ঘদিন জল জমে থাকলে এক এক করে ভেঙে পড়বে। রান্না খাওয়ার যেমন সমস্যা হচ্ছে তেমন চারদিকে লোনা জলে ডুবে থাকায় গবাদিপশু নিয়ে চরম বিপাকে আছি।
শিবপ্রসাদ মণ্ডল নামের এক শিক্ষক জাগো নিউজকে জানান, জলাবদ্ধতা নিরসনে কালকির স্লুইসগেট অবমুক্ত করা প্রয়োজন। কিন্তু স্লুইসগেটের সামনে পলি জমে থাকায় পানি অপসারণ করা যাচ্ছে না। বিকল্প পথ হিসাবে যদি বামনডাঙ্গা ও তুয়ারডাঙ্গা স্লুইসগেট অবমুক্ত করা যায় তবে জলাবদ্ধতা সমস্যার সমাধান হতে পারে।
তিনি আরও জানান, এক ফসলি আমন ধানের এলাকা এটি। জলাবদ্ধতার কারণে উপরোক্ত পাঁচ গ্রামের প্রায় ১০ হাজার বিঘায় আমন ধানের চাষাবাদ অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। নিচু ঘরবাড়িতে বিষাক্ত সাপ-পোকার ভয়ে আতঙ্কে রয়েছি।

খাজরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহনেওয়াজ ডালিম জাগো নিউজকে বলেন, স্লুইসগেটের পলি অপসারণ করার চেষ্টা করেছি। কিন্তু সেটি সম্ভব হয়নি। বিকল্প পথে পানি নিষ্কাশন না হলে ভোগান্তি চরমে পৌঁছে যাবে। বিষয়টি জেলা প্রশাসককে জানিয়েছি।
এ বিষয়ে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মো হুমায়ুন কবির জাগো নিউজকে বলেন, জনপ্রতিনিধিদের কাছ থেকে বিষয়টি জানার পর তাৎক্ষণিক উপজেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের জলাবদ্ধতা নিরশনে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে নিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আশা করছি কয়েক দিনের মধ্যে পানি অপসারণ করা সম্ভব হবে।
আহসানুর রহমান রাজীব/আরএইচ/জিকেএস