নীলফামারীর প্রত্যন্ত অঞ্চলেও ছড়াচ্ছে ডেঙ্গু

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি নীলফামারী
প্রকাশিত: ০২:৪৪ পিএম, ২৬ জুলাই ২০২৩

ডেঙ্গুর প্রকোপ শহরাঞ্চলে বেশি থাকলেও দিন দিন ছড়িয়ে পড়ছে নীলফামারীর প্রত্যন্ত অঞ্চলে। এ জেলায় এখন পর্যন্ত শিশুসহ ২৪ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন।

কর্তৃপক্ষ বলছেন, শুধু ঢাকা নয়, গ্রামীণ জনপদেও ছড়িয়ে পড়েছে ডেঙ্গু। ভ্রমণ ছাড়াও এ রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকে।

জেলার ছয়টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শুধুমাত্র নীলফামারী সদর জেনারেল হাসপাতালেই ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন ১৭ জন। এছাড়া কিশোরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তিনজন, সৈয়দপুর ১০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে দুজন, ডিমলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একজন এবং ডোমার ও জলঢাকা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স দুজন ডেঙ্গুর চিকিৎসা নিয়েছেন। এরমধ্যে নীলফামারী ও ডোমার মিলে এখনো এ রোগে চিকিৎসা নিচ্ছেন ছয়জন।

আরও পড়ুন: সাধারণ জ্বর নাকি ডেঙ্গু বুঝবেন যেসব লক্ষণে

এদিকে কোনো প্রকার ভ্রমণ ছাড়াই ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন নীলফামারী সদর উপজেলার চড়াইখোলা ইউনিয়নের মাইনুল হোসেন ও তার সাত বছরের ছেলে মো. তামিম। ইপিজেডে চাকরির সুবাদে গত চার বছরে নিজ উপজেলার বাইরে কোথাও বেড়াতে যাননি মাইনুল। গত বুধবার জ্বর নিয়ে হাসপাতালে গেলে তিনি জানতে পারেন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন।

এছাড়া জলঢাকা উপজেলা বালাগ্রামের প্রত্যন্ত গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক নামের এক ব্যক্তিও আক্রান্ত হয়েছেন ডেঙ্গু জ্বরে। গত ১০ বছর নিজ উপজেলার বাইরে কোথাও বেড়াতে না গেলেও ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন তিনি। ফলে এ অঞ্চলেও ডেঙ্গুর প্রকোপ ছড়িয়েছে বলে ধারণা বিশেষজ্ঞদের।

আরও পড়ুন: শিশুর ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ কী কী ও কখন হাসপাতালে নেবেন?

মো. মাইনুল হোসেন বলেন, আমি ইপিজেডে চাকরি করি। ৪-৫ বছর ধরে কোথাও যাইনি। জ্বর নিয়ে হাসপাতালে গেলে ডেঙ্গু হয়েছে জানতে পারি। সঙ্গে আমার সাত বছরের ছেলেরও ডেঙ্গু হয়েছে। এখন মশার কামড়ে হলো, না কি অন্য কারণে হলো তা জানি না।

জলঢাকা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. রেজওয়ানুল কবীর বলেন, আমাদের এখানে আব্দুর রাজ্জাক নামের একজন রোগী এসেছিলেন। অবস্থা খারাপ থাকায় উনাকে রেফার করা হয়েছে। উনি নীলফামারীতে হয়তো চিকিৎসা নিয়েছেন। উনার কোনো ভ্রমণ হিস্ট্রি ছিল না। এতে বলা যায়, এই অঞ্চলে এডিস মশার প্রকোপ আছে।

কিশোরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. আবু শফি মাহমুদ জাগো নিউজকে বলেন, চলতি সপ্তাহে দুজন রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। এর আগে একজন ছিলেন। দিন দিন বাড়ছে রোগী। সবারই ভ্রমণ হিস্ট্রি পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়া জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা তুলনামূলক বেড়েছে।

আরও পড়ুন: ডেঙ্গু রোগীকে যেসব খাবার খাওয়ানো জরুরি

নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. আবু আল হাজ্জাজ জাগো নিউজকে বলেন, এখন পর্যন্ত আমাদের এখানে ১৭ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। বর্তমানে ছয়জন চিকিৎসা নিচ্ছেন। ভ্রমণ হিস্ট্রি ছাড়াও ডেঙ্গু আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকে। এমন রোগী আমরা কয়েকটা পেয়েছি। ধারণা করছি এ অঞ্চলে ডেঙ্গুর প্রকোপ ছড়িয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ডেঙ্গুর প্রকোপ ঠেকাতে আমাদের সচেতন হতে হবে। বাড়ির আশপাশে জঙ্গল, ঝোপঝাড় বা পানি জমে থাকে এমন স্থান রাখা যাবে না। সচেতনতাই পাড়ে ডেঙ্গু ঠেকাতে।

এদিকে ডেঙ্গু প্রতিরোধে প্রচার-প্রচারণা ও পরিচ্ছন্নতা অভিযান শুরু করেছে নীলফামারী পৌরসভা। এছাড়া জেলার অন্য পৌরসভা ও উপজেলাগুলোতে ডেঙ্গু প্রতিরোধে প্রচারণা চালানো হচ্ছে।

নীলফামারী পৌরসভার মেয়র দেওয়ান কামাল আহম্মেদ বলেন, বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় পৌর মার্কেট এলাকা থেকে ডেঙ্গু প্রতিরোধে শহরে প্রচারণা ও পরিচ্ছন্নতা অভিযান শুরু করি। এছাড়া আমরা নিয়মিত মশানিধন স্প্রে করছি। মানুষকে সচেতন করা হচ্ছে।

রাজু আহম্মেদ/জেডএইচ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।