মোংলায় দুই হাজার ঘরবাড়িতে পানি, তলিয়ে গেছে ৭২০ চিংড়ি ঘের

উপজেলা প্রতিনিধি উপজেলা প্রতিনিধি মোংলা (বাগেরহাট)
প্রকাশিত: ০৮:৪৭ পিএম, ০৭ আগস্ট ২০২৩

মোংলায় ভারী বৃষ্টিপাতে ২ হাজার ২৮৩টি বসতঘরে পানি উঠেছে এবং ৭২০টি চিংড়ি ঘের তলিয়ে গেছে। কোনো ঘরে হাঁটু পানি জমায় রান্নাবান্না বন্ধ হয়ে গেছে।

পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডের বেশিরভাগ এলাকাতেই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টির পানি জমার সঙ্গে যোগ হয়েছে জোয়ারের পানিও। তাই জলাবদ্ধতার চরম দুর্ভোগে পড়েছেন শহর ও শহরতলীর নিম্নাঞ্চলের বাসিন্দারা।

মূলত রোববার রাত থেকে সোমবার (৭ আগস্ট) বিকেল পর্যন্ত টানা মুষলধারে বৃষ্টিতে পৌর শহর ও উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের বাড়িঘর ও চিংড়ি ঘের তলিয়ে গেছে।

Mongla-1.jpg

রোববার রাত থেকে সোমবার বিকেল ৩টা পর্যন্ত মোংলায় ১৬৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মোংলা আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ মো. হারুন অর রশিদ। তিনি বলেন, মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে এমন বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকবে আরও কয়েকদিন। সোমবারও মোংলা সমুদ্র বন্দরে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত বহাল রয়েছে।

এদিকে, টানা ভারী বৃষ্টিপাতে চরমভাবে বিঘ্নিত হয়েছে মোংলা বন্দরে অবস্থান বিদেশি জাহাজের পণ্য খালাস ও পরিবহনের কাজ। বন্দরের হারবার বিভাগের ওয়ারলেস অপারেটর আল শাহরিয়ার সজীব বলেন, সোমবার বন্দরে আটটি বিদেশি বাণিজ্যিক জাহাজ অবস্থান করছে। সেগুলোতে কাজ চলছে। তবে বৃষ্টির কারণে মাঝে মধ্যে কাজের বিঘ্ন ঘটছে।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. রানা বলেন, ভারী বর্ষণে মোংলার ২ হাজার ২৮৩টি বসতঘর তলিয়ে গেছে। এছাড়া কানাইনগর এলাকায় বেড়িবাঁধ ভেঙে ওই এলাকা প্লাবিত হয়েছে।

Mongla-1.jpg

উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, সোমবারের ভারী বৃষ্টিপাতে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ৩১৪ হেক্টর জমির ৭২০টি চিংড়ি ঘের তলিয়ে চাষিদের প্রায় ৩৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। তবে বেশি ক্ষতি হয়েছে চাঁদপাই ইউনিয়নে। এছাড়া চিলা, সুন্দরবন ও বুড়িরডাঙ্গা ইউনিয়নেও কিছু ক্ষতি হয়েছে।

মোংলা পৌর মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ আ. রহমান বলেন, ভারী বৃষ্টিপাতে পৌর শহরের ৯টি ওয়ার্ডেই কমবেশি জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এতে হাজারো পরিবারের রান্নাবান্না সমস্যা তৈরি হয়েছে।

Mongla-1.jpg

তিনি বলেন, বিভিন্ন এলাকার পানি নিষ্কাশনের কাজ করছেন পৌর কর্মচারীরা। তবে এ থেকে পরিত্রাণ পেতে অবশ্যই পরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থা তৈরি করতে হবে। এজন্য এরইমধ্যে রাস্তা ও ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দীপংকর দাশ বলেন, অতি বৃষ্টিতে বেড়িবাঁধের দুই-এক জায়গায় ক্ষতিসহ বাড়িঘর ও চিংড়ি ঘের তলিয়েছে। এই ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি উল্লেখ করে জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে কোনো বরাদ্দ ও সহায়তা এলে তা ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে বিতরণ করা হবে।

আবু হোসাইন সুমন/এমআরআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।