গাজীপুরে নৌকা ভ্রমণের নামে অশ্লীল নাচ-গান

বর্ষা মৌসুমের শুরুতেই গাজীপুরের তুরাগ নদীর ভাঙ্গা ব্রিজ ও বেলাই বিল এলাকায় দেখা মেলে নৌকা ভ্রমণের দৃশ্য। এসময় প্রতিদিনই ওই এলাকাগুলোতে ছোট-বড় অসংখ্য নৌকা চলে। কিন্তু নৌকা ভ্রমণের নামে নদীতে বাজানো হয় অতিরিক্ত শব্দে সাউন্ড বক্স। হিন্দি ও ডিজে গানের তালে তালে চলে অশ্লীল নৃত্য, অসামাজিক কার্যকলাপ ও মাদক সেবন।
তবে এ বিষয়ে প্রশাসনের কোনো অভিযান বা তৎপরতা দেখা যায়নি। ফলে নৌকা ভ্রমণের নামে অপসংস্কৃতির চর্চা, শব্দ দূষণ, মাদক সেবনসহ নানা অপরাধের অভিযোগ তুলেছেন নদীপাড়ের বাসিন্দা ও স্থানীয় সচেতন মহল।
টঙ্গী বাজার ও আব্দুল্লাহপুর ব্রিজ নৌকাঘাটসহ আশপাশের এলাকা ঘুরে দেখা যায়, সেখানে চলছে ছোট-বড় অনেক ভ্রমণ নৌকা। নৌকাগুলো বিভিন্ন ভঙ্গিতে সাজানো। প্রতিটি নৌকায় ৫০ থেকে ৮০ জন উঠছেন। হিন্দি ও ডিজে গানের তালে চলছে অশ্লীল নৃত্য। নৌ ভ্রমণে অংশ নেওয়াদের পরনে দৃষ্টিকটূ পোশাক।
আরিচপুর নদীপাড়ের বাসিন্দা মো. আলী আকবর বলেন, নৌকা ভ্রমণের নামে চলে নানা অসামাজিক কার্যকলাপ। দিনরাত মাত্রাতিরিক্ত শব্দে সাউন্ড বক্স বাজিয়ে চলে নৌকা। সেখানে কথিত নর্তকী, যৌনকর্মী ও তৃতীয় লিঙ্গের লোকদের অশ্লীল নৃত্য ও মাদক সেবন করতে দেখা যায়। মূলত মোটা অঙ্কের টাকায় তারা এ নৃত্য করে।
তিনি আরও বলেন, দিনে নৃত্যের মাধ্যমে ‘আনন্দ’ দিলেও রাতে অসামাজিক কার্যকলাপে লিপ্ত হয় অনেকেই। এতে যে কোনো সময় ধর্ষণ, যৌন নিপীড়ন, নৌকাডুবি, হানাহানিসহ নানা অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে।
স্থানীয় সিরাজ উদ্দিন সরকার বিদ্যানিকেতন অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো. ওয়াদুদুর রহমান বলেন, নৌকা ভ্রমণ আনন্দদায়ক। কিন্তু কিছু উঠতি বয়সী ছেলেমেয়েরা ভ্রমণটাকে নষ্ট করছে। ভ্রমণের নামে তারা অশ্লীল নৃত্য ও অসামাজিক কার্যকলাপ চালায়। এছাড়া তারা ক্লাস চলাকালে মাত্রাতিরিক্ত শব্দে সাউন্ড বক্স বাজিয়ে ছাত্রছাত্রীদের ক্ষতি করছে। এ বিষয়ে প্রশাসনের নজরদারি বাড়ানো উচিত।
আইচি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-ব্যবস্থাপক মো. আমিনুল ইসলাম মোড়ল বলেন, নৌকা ভ্রমণের নামে উচ্চ শব্দে গান বাজানো নিয়ে রাজধানীর উত্তরা ও টঙ্গী থানা পুলিশকে একাধিকবার লিখিত ও মৌখিক অভিযোগ দিয়েছি। গত কয়েক বছর ধরে আইচি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের রোগীদের নিয়ে এ সমস্যায় ভুগছি।
যোগাযোগ করা হলে গাজীপুর মেট্রোপলিটন দক্ষিণ বিভাগের (ক্রাইম) উপ-পুলিশ কমিশনার মো. মাহবুব-উজ-জামান বলেন, নৌপথে অভিযানের জন্য নৌপুলিশ রয়েছে। তবুও বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে। যেহেতু আগে বিষয়টি গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের নজরে আসেনি, পরবর্তীতে তুরাগ নদীতে নৌকা ভ্রমণের দিকে থানা পুলিশ নজর রাখবে।
মো. আমিনুল ইসলাম/এমআরআর/এমএস