ভোলায় মুক্তা চাষে সফলতার হাতছানি

জুয়েল সাহা বিকাশ
জুয়েল সাহা বিকাশ জুয়েল সাহা বিকাশ , জেলা প্রতিনিধি, ভোলা ভোলা
প্রকাশিত: ০৮:১০ এএম, ১১ আগস্ট ২০২৩

 

ভোলায় প্রথমবারের মতো মুক্তা চাষ করে স্বপ্ন বুনছেন দৌলতখান উপজেলার দুই যুবক জিহাদ ও জাহিদ। ইউটিউব দেখে মুক্তা চাষের উদ্যোগ নিয়েছেন তারা। এরই মধ্যে তাদের চাষ করা মুক্তা প্রায়ই বিক্রির উপযোগী হয়ে উঠেছে। তাদের দেখাদেখি মুক্তা চাষে আগ্রহী হচ্ছেন অনেকে।

দৌলতখান উপজেলার শিবপুর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের শিবপুর গ্রামের বাসিন্দা মো. জিহাদ ও জাহিদ হোসাইন। তারা সম্পর্কে চাচাতো ভাই। ২০২২ সালের দিকে ইউটিউব দেখে মুক্তা চাষে আগ্রহী হন তারা। এরপর ওই বছরই ডিসেম্বর মাসের দিকে নওগাঁ থেকে ঝিনুক ও মুক্তার ডিজাইন এনে তাদের বাড়ির পাশে দৌলতখান উপজেলার মেদুয়া ইউনিয়নের মেদুয়া গ্রামের ২৪ শতাংশ জমির পুকুরে শুরু করেন মুক্তা চাষ।

jagonews24

তারা এক হাজার ঝিনুক ও ডিজাইন এনে ৩৫টি খাঁচায় ভরে পুকুরে ছেড়ে দেন। এতে তাদের সবমিলে ৬৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। প্রতি ১৫ দিন পরপর তারা পুকুরে সার ও চুন দেন। এজন্য খরচ হয় ৫০০ টাকা।

জিহাদ ও জাহিদ জাগো নিউজকে জানান, তাদের মুক্তার আটটি ডিজাইন রয়েছে। এখন তাদের মুক্তার বয়স প্রায় ৯ মাস। আগামী মাসের মধ্যেই তারা মুক্তা বাজারে বিক্রি করতে পারবেন।

jagonews24

আরও পড়ুন: মাছের পুকুরে মুক্তা চাষে বিপ্লব

প্রতিপিস মুক্তার পাইকারি বাজারদর দুই থেকে আড়াইশ টাকা। প্রথমবারই মুক্তা চাষ করে ব্যাপক লাভবান হওয়ার আশা করছেন এ দুই যুবক। মুক্তা চাষের কথা শুনে প্রতিদিনই সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত তাদের খামারে স্থানীয় বেকার যুবকরা ভিড় জমাচ্ছেন। তাদের কাছ থেকে পরামর্শ নিয়ে ২-৩ জন মুক্তা চাষ শুরু করেছেন বলেও জানান জিহাদ ও জাহিদ।

একই ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মো. জিলন জাগো নিউজকে জানান, তিনি জিহাদ ও জাহিদের দেখাদেখি মুক্তা চাষে আগ্রহী হন। তাদের কাছ থেকে পরামর্শ নিয়ে তিনিও জুলাই মাসের শেষের দিকে তাদের বাড়ির সামনের ৩০ শতাংশ পুকুরে ১৮০০ পিস ঝিনুক নিয়ে মুক্তা চাষ শুরু করেছেন। তিনিও জিহাদ ও জাহিদের মতো মুক্তা চাষ করে সফল হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন।

jagonews24

মেদুয়া গ্রামের বাসিন্দা ফয়সাল ও রাসেল বলেন, তাদের গ্রামে পুকুরে যখন জিহাদ ও জাহিদ মুক্তা চাষ শুরু করেন, তখন অনেকে হাসি-ঠাট্টা করেছেন। কারণ তাদের ধারণা ছিল, গ্রামের পুকুরে মুক্তা চাষ সম্ভব নয়। কিন্তু এখন তাদের মুক্তা চাষের সফলতা দেখে গ্রামবাসী অবাক।

দৌলতখান উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মাহাফুজ হাসনাইন জাগো নিউজকে বলেন, নতুন নতুন অনেক যুবকই মৎস্য অফিসে ছুটে আসছেন মুক্তা চাষের জন্য। কিন্তু মৎস্য বিভাগ থেকে তাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা না থাকায় সেটি দিতে পারছেন না। বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন।

jagonews24

জিহাদ ও জাহিদের সফলতা দেখে দৌলতখান উপজেলায় দিন দিন মুক্তা চাষির সংখ্যা বাড়বে বলে আশা করেন তিনি।

এসআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।