মা ‘হত্যা’র বিচার দাবির সংবাদ সম্মেলনে নানির কোলে শিশু ইয়ামিন
ভোলায় নানির কোলে চড়ে মা রিপা বেগমের (২৪) ‘হত্যা’র বিচার দাবির সংবাদ সম্মেলনে এসেছে ১৪ মাস বয়সী শিশু ইয়ামিন। বুধবার (১৬ আগস্ট) দুপুরে ভোলা প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এমনই দৃশ্য দেখা গেছে। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন নিহত রিপা বেগমের বাবা মো. রফিকুল ইসলাম, মা ছিকু বেগম, চাচি মমেনা বেগম, ইয়ানুর বেগম ও ফুফাতো ভাই জিলন।
সংবাদ সম্মেলনে রিপার বাবা রফিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ভোলা সদর উপজেলার দক্ষিণ দিঘলদী ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কোড়ালিয়া গ্রামের বাসিন্দা আমি। কৃষিকাজ ও মাছ ধরে সংসার চালাই। ২০২০ সালে সদরের ভেলুমিয়া ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের চন্দ্রপ্রসাদ গ্রামের রাবেক গাজীর ছেলে মো. ইসমাইলের সঙ্গে মেয়ে রিপা বেগমের বিয়ে দেই। বিয়ের পর থেকেই মেয়ের জামাই ও তার পরিবারের সদস্যরা যৌতুকের দাবিতে রিপার ওপর নির্যাতন করে আসছিল। এমনকি তাদের একাধিকবার বিভিন্ন জিনিস ও টাকা দেওয়া হয়েছিল।
আরও পড়ুন: চলাচলের রাস্তায় বাড়ি-সীমানা প্রাচীর নির্মাণ, অবরুদ্ধ ৩০ পরিবার
তিনি আরও বলেন, গত ২৪ জুলাই আবারও যৌতুকের জন্য রিপার ওপর জামাই ও শ্বশুড়বাড়ির লোকজনের নির্যাতন চালায়। তখন রিপা আমাকে ফোন করে কান্নাকাটি বলে তার খুবই বিপদ। এ কথা শুনে আমি মেয়ের শ্বশুরবাড়ি যেতে চাই। তবে পরে মেয়ে না করায় আর সেখানে যাইনি। কিন্তু ওই রাতেই রিপাকে জামাই ইসমাইল, শ্বাশুড়ি, শ্বশুর, দেবরসহ নির্যাতনের পর হত্যা করে ঝুলিয়ে রাখে।
পরের দিন সকালে খবর পেয়ে রিপার শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে মরদেহ চৌকির ওপর দেখতে পাই। মরদেহে অনেকগুলো আঘাতের চিহ্নও দেখতে পেয়েছি। এরপর ৩০ জুলাই ভোলা আদালতে রিপার স্বামী ইসমাইল, দেবর শাকিব, শ্বশুর বারেক গাজী, শাশুড়ি রূপবান বেগম, খালু কালাম গাজী, সেকান্দার গাজীর বিরুদ্ধে একটি মামলা করি। মামলাটি থানায় আসলেও পুলিশ এখনও পর্যন্ত কোনো আসামিকেই গ্রেফতার করতে পারেনি। দ্রুত আসামিদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি।
ভোলা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহীন ফকির বলেন, রিপার ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আমাদের কাছে এসে পৌঁছেছে। রিপোর্টে আত্মহত্যা এসেছে। নিহতের পরিবার থেকে একটি হত্যা মামলা করা হয়েছে। আমরা বিষয়টি তদন্ত করেছি। আমরা দ্রুত কোর্টে রিপার মৃত্যুর সব তদন্ত ও ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেশ করবো।
জুয়েল সাহা বিকাশ/জেএস/জিকেএস