বাদাঘাট বাজার
মিষ্টি-কাপড়ের দোকান নিয়ে গড়ে ওঠা বাজারে এখন মাসে বেচাকেনা ১০ কোটি

সুনামগঞ্জ জেলা শহর থেকে ৪৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত বাদাঘাট বাজার। প্রতিদিন ভোর থেকে রাত পর্যন্ত চলে বাজারটিতে বেচাকেনা। এই বাজার থেকে প্রতিমাসে প্রায় ১০ কোটি টাকার বিভিন্ন ধরনের পণ্য বেচাবিক্রি হয়।
জানা গেছে, সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকায় একটি মিষ্টি ও দুটি কাপড়ের দোকান দিয়ে গড়ে ওঠে বাদাঘাট বাজার। যে বাজারটি শতবছরে ডালপালা ছড়িয়ে এখন প্রায় পাঁচ হাজার দোকানপাটে পরিণত হয়েছে। তিন থেকে চার কিলোমিটার এলাকাজুড়ে বসা বাজারটি এখন সুনামগঞ্জ জেলার সবচেয়ে বড় বাজার হিসেবে পরিচিত। বাজারটিতে মাসে প্রায় ১০ কোটি টাকার পণ্য বিক্রি হয়।
বাদাঘাট বাজারের ব্যবসায়ী ইউনুস মিয়া। বাবার হাতে গড়া মিষ্টি মেলা রেস্টুরেন্ট এখন তিনিই দেখাশোনা করেন। তার এই রেস্টুরেন্টের মিষ্টির স্বাদ এখন উপজেলা ছাড়িয়ে জেলা পর্যায়ে পরিচিতি পেয়েছে। তাই তো ছুটির দিনে লোকজন বাদাঘাটের ইউনুস মিয়ার মিষ্টির দোকানে ভিড় করেন।
ইউনুস মিয়া জাগো নিউজকে জানালেন, প্রতিদিন রাতে ৩০ থেকে ৪০ কেজি মিষ্টি বানিয়ে রাখেন তিনি। আর সেগুলো পরদিন ভোর থেকে বিক্রি করেন।
শুধু ইউনুস মিয়া নন, বাজারটিতে আরও বিভিন্ন ধরনের পাঁচ হাজারের বেশি দোকানপাট রয়েছে। তারমধ্যে অন্যতম মাটির আসবাবপত্র, বিভিন্ন ধরনের চাল, রকমারি ফল, মুড়ি, রকমারি সুতা, পান-সুপারি, জামা-কাপড়, ব্যাগ, জুতা, ইলেকট্রনিক্স, প্রসাধনী, গৃহস্থালি সামগ্রীসহ সব ধরনের পণ্য এই বাজারে পাওয়া যায়।
ভোর থেকে রাত পর্যন্ত বেচাকেনা চলে বাজারে। তবে সবচেয়ে বেশি এই বাজারে বেচাকেনা হয় বৃহস্পতি ও রোববার। এই দুইদিন দেশের বিভিন্ন স্থান ব্যবসায়ীরা রকমারি পণ্য এনে এই বাজারে বিক্রি করেন। যে কারণে কিছুটা কম দামেই পণ্য মেলে।
তবে সুনামগঞ্জ হাওর এলাকা হওয়ায় এখনো অনেক জায়গায় সরাসরি সড়ক পথে যানচলাচল করে না। আর যোগাযোগব্যবস্থা ভালো না হওয়ায় তার প্রভাব পড়ে এই প্রাচীন বাজারটিতে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, প্রাচীন এই বাজারটি সব ধরনের পণ্য পাওয়া যায়। তাই যোগাযোগব্যবস্থা ভালো হলে বাজারটি এই অঞ্চলের মানুষের জীবনমান উন্নতিতে সহায়ক হতো। সেইসঙ্গে এই অঞ্চলের অর্থনীতি আরও চাঙা হতো।
বাদাঘাট বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি সেলিম হায়দার জাগো নিউজকে বলেন, বাদাঘাট বাজার সুনামগঞ্জের বৃহত্তর বাজার। এখানে মাসে প্রায় ১০ কোটি টাকার মালামাল বেচাবিক্রি হয়। তবে যোগাযোগব্যবস্থা ভালো না হওয়ায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মালামাল নিয়ে আসতে ব্যবসায়ীদের অনেক ভোগান্তিতে পড়তে হয়। যোগাযোগব্যবস্থা ভালো হলে বাজারটির পণ্য বিক্রি আরও বাড়বে, সরকারও বেশি রাজস্ব পাবে।
বাদাঘাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন জাগো নিউজকে বলেন, আমাদের দীর্ঘদিনের দাবি বাদাঘাটের সঙ্গে সুনামগঞ্জের সরাসরি সড়ক পথে যোগাযোগব্যবস্থা হবে। আশা করি, সরকার বিষয়টিতে নজর দেবে।
তিনি আরও বলেন, প্রতিবছর এই বাজার থেকে সরকার ৫০ লাখ টাকার বেশি রাজস্ব পায়। তবে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো হলে একদিকে যেমন সরকারের রাজস্ব আয় বাড়বে অন্যদিকে এই অঞ্চলের অর্থনীতি চাঙা হবে।
লিপসন আহমেদ/এমআরআর/জিকেএস