সাবেক ধর্মমন্ত্রী মতিউর রহমান আর নেই

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি ময়মনসিংহ
প্রকাশিত: ০২:২০ এএম, ২৮ আগস্ট ২০২৩

সাবেক ধর্মমন্ত্রী ও ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যক্ষ মতিউর রহমান (৮১) মারা গেছেন। (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।

রোববার (২৭ আগস্ট) রাত ১১টার দিকে ময়মনসিংহের নেক্সাস কার্ডিয়াক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।

বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যক্ষ মতিউর রহমান ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। তিনি কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ছিলেন। তিনি ২০১৪ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

নেক্সাস কার্ডিয়াক হাসপাতালের ম্যানেজার মৃদুল কুমার সরকার জাগো নিউজকে বলেন, বেশ কিছুদিন ধরে বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যক্ষ মতিউর রহমান। সম্প্রতি তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে ঢাকায় নিয়ে চিকিৎসা করানো হয়। সেখান থেকে ফিরে নিজ বাড়িতেই বসবাস করতেন। রোববার দুপুরে তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে নেক্সাস হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়।

অধ্যক্ষ মতিউর রহমান ১৯৪২ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি ময়মনসিংহ সদর উপজেলার আকুয়া গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম আবদুর রেজ্জাক এবং মায়ের নাম মেহেরুন্নেসা খাতুন।

বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অবিচল থেকে পথ চলতে অভ্যস্ত এ প্রবীণ রাজনীতিক আকুয়া মডেল প্রাইমারি স্কুল থেকে ১৯৫৩ সালে প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করেন। এসময় তিনি বৃহত্তর ময়মনসিংহ জেলায় প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় প্রথমস্থান অধিকার করেন। ১৯৫৪ সালে ময়মনসিংহ জেলা স্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি হন এবং সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত লেখা পড়া করেন। এরপর তিনি নকলা উচ্চ বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণি সম্পন্ন করেন। নবম ও দশম শ্রেণি পর্যন্ত ময়মনসিংহের মৃত্যুঞ্জয় স্কুলে পড়াশুনা করেন এবং ১৯৫৮ সালে মেট্রিকুলেশন পরীক্ষায় কৃতিত্বের সঙ্গে উত্তীর্ণ হন। ময়মনসিংহ আনন্দমোহন কলেজ থেকে ১৯৬১ সালে বিজ্ঞান বিভাগে উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করেন। 

এরপর ১৯৬৪ সালে আনন্দমোহন কলেজ থেকে বিএসসি পাস করেন। এ সময় তিনি গফরগাঁও থানার পাঁচবাগ উচ্চ বিদ্যালয় এবং মনোহরদি হাতিরদিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে বিএসসি শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এরপর ১৯৬৬ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাণিবিদ্যা বিভাগে ভর্তি হয়ে ১৯৬৭ সালে এমএসসি সম্পন্ন করেন। এমএসসি পাসের পর তিনি জামালপুর জেলার নান্দিনা কলেজ এবং ময়মনসিংহের নাসিরাবাদ কলেজে প্রাণিবিদ্যার শিক্ষক হিসেবে চাকরি করেন। তিনি স্বল্পকালীন ময়মনসিংহ কলেজেও শিক্ষকতা করেন।

অধ্যক্ষ মতিউর রহমান একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষক ও সফল সংগঠকের দায়িত্ব পালন করেছেন। মুক্তিযুদ্ধের রণাঙ্গনে তিনি সরাসরি অংশগ্রহণ করেন। মহান মুক্তিযুদ্ধে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের ঢালু যুব শিবিরের ইনচার্জ ছিলেন। তার নেতৃত্বে ১০ ডিসেম্বর ময়মনসিংহ হানাদারমুক্ত হয়।

মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে একুশে পদক পান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, সামরিক স্বৈরাচার বিরোধী সব গণতান্ত্রিক আন্দোলনের অন্যতম এই নেতা।

মঞ্জুরুল ইসলাম/কেএসআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।