কেসিসির ৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ট্রাক টার্মিনাল অকেজো


প্রকাশিত: ১২:১৩ পিএম, ২১ মার্চ ২০১৬

খুলনা মহানগরীর যানজট নিরসনের জন্য সোনাডাঙা থানা এলাকায় নির্মিত ট্রাক টার্মিনাল কোনো কাজেই আসেনি। যে কারণে নগরীর ৯০ ভাগ ট্রাকই ৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই টার্মিনালটিতে না থেকে বাইরে থাকছে। অপরদিকে একটি টার্মিনাল পড়ে থাকতেই আরো একটি ট্রাক টার্মিনাল নির্মাণ করতে শুরু করেছে কেসিসি।

খুলনা সিটি কর্পোরেশন সূত্র জানায়, খুলনা মহানগরীর যানজট নিরসনের লক্ষ্যে ২০০১ সালে নগরীর সোনাডাঙায় প্রায় ৭ একর জমির উপর ট্রাক টার্মিনালটি নির্মাণ করা হয়। সে সময় ট্রার্মিনালটি সিটি কর্পোরেশনের আয়ের অন্যতম একটি মাধ্যম বলে ফলাও করে প্রচার করা হয়। তবে ট্রার্মিনালটি খুলনা ব্যবসা কেন্দ্র বড় বাজার এলাকা থেকে ৩/৪ কিলোমিটার দূরে হওয়ায় ব্যবসায়ীরা তাদের আমদানি ও রফতানি পণ্য বোঝাই ট্রাকগুলো বরাবরই নগরীর কেডিঘোষ রোড, ভৈরব স্ট্র্যান্ড রোড, কালীবাড়ি রোড, মজিদ স্মরণি রোডে রেখে পণ্য বোঝাই ও খালাস কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। ফলে ট্রাকগুলো টার্মিনালে প্রবেশই করছে না। এতে করে যানজট কমে আসার পরিবর্তে দিনদিন বেড়েছে।

কর্পোরেশনের সূত্র আরও জানা যায়, বিশাল বাজেটের টার্মিনাল কাজে না লাগায় সেখানে কাঁচাবাজার স্থাপন করা হয়। বর্তমানে টার্মিনালের চেয়ে কাচাঁ বাজার হিসেবেই বেশি ব্যবহৃত হচ্ছে টার্মিনালটি। অনেকেই এখানে ট্রাক রাখছেন মেরামত করার জন্য। কেসিসির মোট পাঁচজন জনবল দিয়ে এ টার্মিনালটি পরিচালিত হয়।
 
সোনাডাঙার টার্মিনালটি ব্যবহার অনুপযোগি হওয়ায় নগরীর ৭নং ঘাট এলাকায় কেসিসির তত্ত্বাবধানে তৈরি হচ্ছে মিনি ট্রাক টার্মিনাল।

ট্রাক টার্মিনালের সমস্যা নিয়ে কথা হয় খুলনা ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি কাজী সারোয়ারের সঙ্গে। তিনি জানান, নগরীর স্টেশন রোডে যত্রতত্র ট্রাক রেখে যানজট তৈরি হয় সে বিষয়টিকে মাথায় রেখে ৭নং ঘাট এলাকায় একটি মিনি ট্রাক টার্মিনাল তৈরি করার লক্ষ্যে সেখানে ইটের সলিং করা হয়েছে।

ট্রাক টার্মিনালের প্রবেশপথ মেরামতের বিষয়ে কেসিসির প্রধান প্রকৌশলী নাজমুল আলম বলেন, অচিরেই রাস্তা মেরামতে পদক্ষেপ নেয়া হবে। নগরীর ৭নং ঘাট এলাকায় একটি মিনি ট্রাক টার্মিনাল হলে বড় বাজারের ট্রাক জট কমে আসবে।

খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আনিসুর রহমান জানান, নগরীর সোনাডাঙায় আগে থেকেই একটি ট্রাক টার্মিনাল নির্মাণ করা হয়েছে। সেখানে একটি পাইকারী কাঁচা বাজারও রয়েছে। এখানে কিছু কিছু ট্রাক থাকে। কিন্তু নগরীর স্টেশন রোড ও বড় বাজার এলাকায় প্রতিদিন একশ থেকে দেড়শ ট্রাকে মালামাল লোড-আনলোড করা হয়। এর ফলে নগরীর রেল স্টেশন এলাকা ও বাজার এলাকায় প্রতিদিন তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে নগরবাসীকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

নগরবাসীর দুর্ভোগ ও যানজটমুক্ত করতে এবং নতুন আধুনিক রেল স্টেশন এলাকা সুন্দর ও যানবাহন ও পথচারী চলাচল স্বাভাবিক রাখতেই নগরীর জোড়াগেট এলাকায় নতুন করে একটি পার্কিং স্পেস করা হচ্ছে। এর আগে জোড়াগেট থেকে বড় বাজারের কদমতলা পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার পাকা সড়ক প্রায় ৪০ কোটি টাকায় নির্মাণ করা হয়েছে। এর ফলে জোড়াগেটের ট্রাক পার্কিং এলাকা থেকে সহজেই মালামাল স্টেশন রোড ও বড় বাজার এলাকায় লোড-আনলোড করা যাবে যানজট ছাড়াই।

তিনি আরও জানান, এই ট্রাক পার্কিং স্পেস নির্মাণের পর নগরীতে দিনের বেলায় কোনো ট্রাক ঢুকতে দেয়া হবে না। এই প্রকল্পটি সাবেক মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেকের সময় নেয়া হয়েছিল।  

আলমগীর হান্নান/এফএ/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।