কদমতলী ইউপি নির্বাচন : উৎসবের আমেজেও সংঘাতের শংকা


প্রকাশিত: ১২:২২ পিএম, ২১ মার্চ ২০১৬

দীর্ঘ ১৩ বছর পর মঙ্গলবার চন্দ্রঘোনা কদমতলী ইউপি নির্বাচন। প্রথম ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চট্টগ্রামের একটি মাত্র ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। পৌরসভায় রূপান্তর ও সীমানা জটিলতা, ভোটার হালনাগাদ জটিলতায় দীর্ঘ ১৩ বছর স্থগিত থাকার পর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে রাংগুনিয়া উপজেলার কদমতলী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন।

নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন ৩ চেয়ারম্যন প্রার্থী। তবে তৃণমূলে জনপ্রিয়তা যাচাইয়ের এ ভোটে স্বাভাবিকভাবেই মূল লড়াই হবে আওয়ামী লীগের নৌকা ও বিএনপির ধানের শীষের মধ্যে। এদিকে দীর্ঘদিন পর অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এ ভোট ঘিরে উৎসবের আমেজের মধ্যেও উঁকি দিচ্ছে সংঘাতের শংকা।

নির্বাচন কমিশন সূত্র জানায়, চন্দ্রঘোনা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে তিনজন, সংরক্ষিত মহিলা আসনের মেম্বার পদে ১০ জন এবং সাধারণ ওয়ার্ডের মেম্বার পদে ৪৭ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ইউনিয়নের নয়টি ওয়ার্ডে এবার মোট ১৯ হাজার ৬শ ৮১ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১০ হাজার ৩শ ৯৮ জন, মহিলা ভোটার ৯ হাজার ২শ ৮৩ জন।

নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে লড়ছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও বতর্মান চেয়ারম্যান ইদ্রিছ আজগর, ধানের শীষ প্রতীকে বিএনপির প্রার্থী বিএনপি নেতা মুজিবুল হক, স্বতন্ত্র প্রাথী মো. জাহাঙ্গীর আলম আনারস প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন।

স্থানীয় সূত্র জানায়, নির্বাচনকে ঘিরে আওয়ামী লীগে উৎসব মুখর পরিবেশ থাকলেও বিএনপি নীরব। বিএনপি নির্বাচন সুষ্ঠু না হওয়ার আশংকা করলেও আওয়ামী লীগ প্রার্থীর দাবি সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। গতকাল মধ্যরাত থেকে বন্ধ হয়ে গেছে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা।

বিএনপির প্রার্থী মজিবুল হক বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু না হওয়ার আশংকা রয়েছে। তার ‘আমার প্রচার প্রচারণায় বাধা দেয়া হয়েছে। পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে। এ অবস্থায় আগামীকালের ভোট কতটুকু সুষ্ঠু হবে বুঝতে পরছি না।’

এসময় তিনি তার নিজস্ব ভোটব্যাংক রয়েছে জানিয়ে তিনি জানান, সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আমি জয়ী হবো। স্বতন্ত্র প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলমও একই আশংকা করেছেন।

আওয়ামী লীগ প্রার্থী ইদ্রিছ আজগর বলেন, ‘চন্দ্রঘোনার উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের চাকা চলমান রাখতে জনগণ আমাকে নির্বাচিত করবেন।’ এসময় তিনি নির্বাচন গনতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় অবাধ সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হবে বলে আশবাদ ব্যক্ত করেন।

চন্দ্রঘোনা কদমতলি ইউনিয়নে মোট ১০টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ হবে। ৭টি কেন্দ্রকে অতি ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে প্রশাসন।

চট্টগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বিশেষ শাখা) কাজী আব্দুল আওয়াল বলেন, ঝুঁকি বিবেচনায় স্বাভাবিকের চাইতে বেশি আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। ভোট গ্রহণে নিরাপত্তা বিধানের জন্য ২৫০ জনের বেশি পুলিশের পাশাপাশি আনসার সদস্যরা দায়িত্ব পালন করবেন।

তিনি আরো বলেন, স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে থাকবে র্যাব ও বিজিবির টহল টিম, তারা ইতোমধ্যে টহল শুরু করেছে। প্রতিটি ভোট কেন্দ্রে আইন শৃংখলা নিয়ন্ত্রণে একজন উপ-পুলিশ পরিদর্শক, একজন সহকারী উপ পুলিশ পরিদর্শক, ছয়জন কনস্টবল ও ১৭ জন আনসার সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করবেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও রিটার্নিং অফিসার সাইফুল ইসলাম মজুমদার বলেন, ‘অতীতে কী হয়েছে তা বলতে পারব না। এবারের প্রেক্ষাপট ভিন্ন। নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে যা যা প্রয়োজন আমরা তা করব।’

তিনি আরো বলেন, সোমবার দুপুরের পর থেকে নির্বাচনী সরঞ্জাম কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। একজন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও তিনজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ভোটের দিন সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করবেন।

জীবন মুছা/এসএইচএস/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।