নৌকায় বসে অপকর্মে হাইব্রিডরা

নব্য আওয়ামী লীগারদের হাতে মার খাচ্ছেন ত্যাগী নেতাকর্মীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক বগুড়া
প্রকাশিত: ০৯:২২ পিএম, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৩

বগুড়ায় ক্ষমতার ‘ক্রিম’ খেতে অনেকেই নৌকায় উঠেছেন। সুবিধা নিচ্ছেন। কেউ হঠাৎ করেই আঙুল ফুলে কলাগাছ হয়েছেন। আবার কেউ নিজের সম্পদ রক্ষায় আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যুক্ত হয়েছেন।

দেখা গেছে, যারা কখনই বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাসী ছিলেন না তারাই আজ বগুড়ায় আওয়ামী লীগের দাপুটে নেতা। ভিন্ন দল থেকে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে অনেকেই এখন প্রভাবশালী। হাইব্রিড এসব নেতা চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, দখল, লুটপাট, সন্ত্রাসী কার্যক্রমসহ বিভিন্ন অভিযোগে অভিযুক্ত।

অনুসন্ধানকালে দেখা গেছে বিএনপি, জামায়াত-শিবির, জাতীয় পার্টি, ফ্রিডম পার্টি থেকে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে জাদুর কাঠির ছোঁয়ায় গুরুত্বপূর্ণ পদ-পদবি পেয়েছেন সবাই। এদের মধ্যে কেউ কেউ উপজেলা, ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ও পৌর মেয়রও হয়েছেন দলীয় প্রতীক নৌকা নিয়ে। কোথাও নব্য আওয়ামী লীগারদের হাতে ত্যাগী আওয়ামী লীগ বা তার সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা মার খাচ্ছেন। অপমান-অপদস্ত হচ্ছেন। তাদের পক্ষে এখন আওয়ামী লীগ করাই দুরূহ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার গোহাইল ইউপি চেয়ারম্যান আলী আতোয়ার তালুকদার ফজু উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক। বিএনপি ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের মনোনয়ন না দেওয়ায় ২০১৬ সালে ১৮ এপ্রিল আওয়ামী লীগে যোগদান করে সহ-সভাপতি হন। ক্ষমতাসীন দলে এসেই ভোল পাল্টে ফেলেন ফজু। ২০১৯ সালের মে মাসে স্থানীয় একটি স্কুলের অনিয়ম তদন্ত করাকে কেন্দ্র করে পুলিশের সামনেই মারধর করেন গোহাইল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রবীণ নেতা ইউসুফ আলীকে। তার রেকর্ডের ঝুলিতে আরও রয়েছে দখলবাজি, মারধর, সরকারি রাস্তার ইট তুলে নিয়ে যাওয়াসহ একাধিক অভিযোগ। যদিও ফজু এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি অপরাজনীতির শিকার। এসব মিথ্যা প্রচারণা।

আরও পড়ুন: ‘হাইব্রিডদের ভিড়ে যেন আসল কর্মীরা হারিয়ে না যায়’

শাজাহানপুর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুজ্জামান অনেকটা উড়ে এসে জুড়ে বসেন। ২০১০ সালে আওয়ামী লীগ শীর্ষ নেতা আসাদুর রহমান দুলুর হাত ধরে দলে প্রবেশ করেন। এরপর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ পান। বর্তমানে ইট-বালি-মাটির সিন্ডিকেট করে কোটি কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন। অল্প সময়ে নুরুর হয়ে গেছে একাধিক বাড়ি, গাড়ি আর কোটি কোটি টাকার ব্যাংক-ব্যালেন্স।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি নাসির উদ্দিন বাবলুকে প্রকাশ্যে লাঞ্ছিত করা, যুবলীগ নেতা সাজু মিয়ার পা কাটা থেকে শুরু করে হত্যা, অস্ত্র মামলাসহ হাফ ডজনের বেশি মামলা রয়েছে তার বিরুদ্ধে। সর্বশেষ সরকারি নথি চুরির অপরাধে তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। তবে অভিযোগের বিষয়ে নুরুজ্জামান দাবি করেন, দলের জন্য কাজ করতে গিয়ে অনেকের চক্ষুশূল হয়েছেন। প্রতিপক্ষের লোকজন তাকে নিয়ে ষড়যন্ত্র করছেন।

সিরাজুল ইসলাম খান রাজু বর্তমানে আদমদীঘি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান। তিনি ২০০৮ সালে জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক পদ ছেড়ে আওয়ামী লীগে যোগদান করেন। বর্তমানে ক্ষমতার দাপটে উপজেলার সব সরকারি খাসপুকুর তার নিয়ন্ত্রণে। অভিযোগ রয়েছে, এসব পুকুরের রাজস্বও তিনি ঠিকমতো দেন না। এছাড়া কমিটি বাণিজ্য, সরকারি খাস সম্পত্তি থেকে অবৈধ ইনকামের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। তবে রাজু বলেন, আমি ব্যবসা করি। অবৈধ ইনকামের অভিযোগ ঠিক নয়।

আব্দুর রাজ্জাক বর্তমানে সান্তাহার পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। ২০১৪ সালের আগে তিনি বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। এখন ক্ষমতাসীন দলে যোগ দিয়ে করছেন থানার দালালি, রেলওয়ের দোকান থেকে নিয়মিত চাঁদা আদায়সহ নানা অপকর্ম করছেন।

আব্দুল হক আবু আদমদীঘির ছাতিয়ানগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি। আগে তিনি সান্তাহার শহর ফ্রিডম পার্টির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ২০১৬ সালে ইউনিয়ন নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত হন। এরপর শুরু করেন বিভিন্ন প্রকল্প লুট করা। এলাকায় টাকা ছাড়া কোনো কাজ না করায় তার নাম হয়েছে ‘মানি চেয়ারম্যান’।

হেদায়েতুল ইসলাম গামা ধুনটের বেলকুচি গ্রামের বাসিন্দা। তিনি বিএনপির অঙ্গ সংগঠন জাসাসের ধুনট উপজেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ১০ বছর আগে তিনি কৌশলে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক পদ বাগিয়ে নেন। এরপর থেকে নিয়োগ বাণিজ্য, চাঁদাবাজি, টিআর, কাবিখা, কাবিটা, বিদ্যুৎ অফিসের তদবির, থানার দালালি ও জুয়ার আসরের নিয়ন্ত্রণ করে এখন কাড়িকাড়ি টাকা কামিয়েছেন। নেতাকর্মীরা অভিযোগ করে বলেন, গামার কারণে ওই এলাকায় দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। তবে, অভিযোগ অস্বীকার করে গামা বলেন, নেতাকর্মীদের চালাতে গেলে কিছুটা এদিক সেদিক করতে হয়। সব অভিযোগ সঠিক নয়।

আরও পড়ুন: অনুপ্রবেশকারী সুবিধাবাদী কারা, তালিকা চাইলেন প্রধানমন্ত্রী

বেড়েরবাড়ি গ্রামের নবাব আলী ছিলেন ইউনিয়ন বিএনপি নেতা। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর দলে যোগ দেন। বাগিয়ে নেন নিমগাছি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক পদ। এরপর শুরু করেন অবৈধ বালু বাণিজ্য, মাদকের কারবার, জুয়ার আসর বসানোসহ নানা অপকর্ম। এছাড়া আধিপত্য বিস্তার নিয়ে এক যুবলীগ নেতাকে খুনের অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এছাড়া তিন বছর আগে ১৫ টাকা কেজি দরের সরকারি চাল চুরি করে ধরা পড়ার পরও বহাল তবিয়তে তিনি।

এম এ তারেক হেলাল এলাঙ্গী ইউনিয়ন জাতীয় ছাত্র সমাজের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তারপর ইউনিয়ন জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক হন। আওয়ামী লীগ ক্ষমতার আসার পর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। তিনি নিয়োগ বাণিজ্য, থানার দালালি, মাদক কারবারের নিয়ন্ত্রণ, অবৈধ দখলদারিত্ব, বালু বাণিজ্যসহ বিভিন্নভাবে অর্থ আয় করে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

বিএনপি নেতা ইলিয়াস উদ্দিন ইংলিশ। সারিয়াকান্দি থানায় মাদক মামলার আসামি। ২০১৩ সালে বিএনপি-জামায়াতের জ্বালাও পোড়াও এবং পেট্রলবোমা হামলার ঘটনায় তালিকাভুক্ত আসামি। ২০১৬ সালের ১৪ অক্টোবর বগুড়া-১ আসনের প্রয়াত এমপি আব্দুল মান্নানের হাতে ফুলের তোড়া দিয়ে আওয়ামী লীগে যোগদান করেন। পেয়ে যান সদর ইউনিয়নের নির্বাহী পদ। এরপর শুরু করেন দখল বাণিজ্য। মাদকসহ সারিয়াকান্দি থানা পুলিশের হাতে গ্রেফতারও হন তিনি।

ইসলামী ছাত্রশিবির দিয়ে রাজনীতির হাতেখড়ি নিয়ে সারিয়াকান্দি বিএনপির থানা কমিটির সদস্য শওকত আলী এখন চালুয়াবাড়ি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে শওকতের কারণে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী পরাজিত হন। তিনি প্রতিপক্ষ প্রার্থীর কাছ থেকে টাকা নিয়ে দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে কাজ করেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

চালুয়াবাড়ি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান শওকত আলী ছিলেন জামায়াত নেতা। ক্ষমতাসীন দলে যোগ দিয়ে ২০১৬ সালে হয়েছেন স্থানীয় সংসদ সদস্যের আস্থাভাজন। এলাকার সব বড় কাজের ঠিকাদার এখন তিনি। চেয়ারম্যান থাকতেও অন্য ইউনিয়নের সব চেয়ারম্যানের ৫০ শতাংশ বরাদ্দ তাকে বাধ্যতামূলক দিতে হতো।

আরও পড়ুন: ‘অপকর্মকারীরা’ই অনুপ্রবেশকারী, শিগগিরই অভিযান

জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র কয়েকজন নেতা বলেন, ক্ষমতার স্বাদ পেতে বিভিন্ন দলের নেতাকর্মীরা নৌকায় উঠতে শুরু করেন। আওয়ামী লীগের টানা তিন মেয়াদে ক্ষমতায় থাকার সুবাদে দলে অনুপ্রবেশ ঘটেছে। কত সংখ্যক বিএনপি-জামায়াতের লোক এখন ‘আওয়ামী লীগ’ করে এর হিসাব মেলানো কঠিন। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পর বিএনপি-জামায়াতের অসংখ্য নেতাকর্মী ক্ষমতাসীন দলে যোগ দেন। এটা অব্যাহত থাকে ২০১৬-১৭ এমনকি ২০১৮ সালেও। তাদের কারণেই এখন দলে ত্যাগী ও দুঃসময়ের নেতারা কোণঠাসা।

জানা গেছে, বগুড়ায় আওয়ামী লীগ, যুবলীগসহ বিভিন্ন অঙ্গ সহযোগী সংগঠন ও ভুইফোঁড় সংগঠনের কমিটিতে দাপটের সঙ্গে রয়েছেন এই হাইব্রিডরা। চারটি নাশকতা মামলা মাথায় নিয়ে যুবদল নেতা সেতু খন্দকার ২০১৬ সালে যুবলীগে যোগ দেন। তিনি এখন শহর যুবলীগের সহ-সভাপতি, শহর জাতীয় পার্টির সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল মতিন প্রাংও ২০১৪ সালে হন শহর যুবলীগের সহ-সভাপতি। ছাত্রদল নেতা আজিজুল হক বিপুল শহর যুবলীগের সদস্য।

নন্দীগ্রামে জাসদের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত থাকা আনিছুর রহমান ২০১২ সালের শুরুতে আওয়ামী লীগে যোগ দেন। এর ৯ মাসের মধ্যেই পেয়ে যান উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ। শুরু থেকেই দখল, চাঁদাবাজিসহ মাদক সেবন ও বিক্রির অভিযোগ ছিল তার বিরুদ্ধে। ২০২০ সালের এপ্রিলে সরকারি চাল কালোবাজারির মাধ্যমে মজুত করার অভিযোগে র‌্যাবের হাতে গ্রেফতার হন। এ ঘটনায় তার সহযোগী ছিলেন নন্দীগ্রাম সদর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আনছার আলী।

নন্দীগ্রামের জামায়াত নেতা বুড়ইল ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ ২০০৯ সালে দল পাল্টে এখন নৌকার নেতা। একইভাবে ভাটগ্রাম ইউনিয়ন জামায়াত নেতা জুলফিকার আলী ফোক্কার তার নিজ এলাকায় নৌকার পোস্টার লাগাতে দিতেন না। তিনিই এখন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি। জামায়াত সমর্থক শাহীন হোসেন ধুন্দার ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি। এলাকায় বিভিন্ন অপকর্মে সবার আগে নাম আসে তার।

দুপচাঁচিয়ার সাবেক পৌর মেয়র বেলাল হোসেন ছিলেন উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক। তার নামে তিনটি নাশকতা মামলা ছিল। ২০১৮ সালে আওয়ামী লীগে যোগ দেন। পেয়ে যান উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি পদ। এখন তিনি এলাকার আওয়ামী লীগের দাপুটে নেতা। টেন্ডারবাজি, দখলসহ একাধিক অভিযোগ তার বিরুদ্ধে। দুর্নীতি দমন কমিশনও একাধিক অভিযোগ তদন্ত করছে।

আরও পড়ুন: আওয়ামী লীগের প্রস্তাবিত কমিটিতে স্বাধীনতাবিরোধী পরিবারের সদস্য!

শিবগঞ্জ উপজেলা যুবলীগ সভাপতি আব্দুস সাত্তার জাতীয় পার্টির রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন একসময়। বিএনপি সমর্থক রাজা চৌধুরী এখন মোকামতলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। জাসদ নেতা আব্দুল করিম দল পাল্টে আওয়ামী লীগের নেতা হয়েই পেয়েছিলেন জেলা পরিষদ সদস্য পদ।

গাবতলী উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রস্তাবিত কমিটির যুগ্ম সম্পাদক জিয়াউর রহমান জুয়েল ছিলেন সোনারাই ইউনিয়নের শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক। আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে চাকরির তদবির করে অনেক টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। উপজেলা বিএনপির সভাপতি মোরশেদ মিল্টনের ক্যাডার শাহ আলম এখন শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক। টেন্ডারবাজিসহ বিভিন্ন অনিয়মের সঙ্গে তার রয়েছে সম্পৃক্ততা। তিনিও নানা অপকর্ম করে অনেক টাকার মালিক হয়েছেন আওয়ামী লীগের ব্যানারে।

সোনাতলা উপজেলা বালুয়াহাট এলাকার জামায়াত নেতা জাহিদুল ইসলাম ২০২০ সালে দল পরিবর্তন করেন। তিনি এখন সোনাতলা উপজেলা শ্রমিক লীগের আহ্বায়ক। ২০১৭ সালে সোনাতলা উপজেলার দিগদাইড় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সম্মেলনে শরিফুল ইসলাম সাজুকে সভাপতি বানানো হয়। যিনি নিজে এবং তার ভাই উভয়েই নাশকতা মামলার আসামি। তার নেতৃত্বে ওই এলাকায় চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চলে। চালুয়াবাড়ী ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বানানো হয়েছে বকুল হোসেন নামে একজনকে। তিনি অস্ত্র মামলার আসামি। বিগত সময়ে দেড় কেজি গাঁজাসহ গ্রেফতার হন। এছাড়া পুলিশ বকুলের বাড়ি থেকে আটটি চোরাই মোটরসাইকেল উদ্ধার করে।

মধুপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের বর্তমান সভাপতি রেজাউল করিম রেজা ছিলেন শিবির ক্যাডার। ২০১৬ সালের দিকে এলাকার ত্যাগী আওয়ামী লীগ নেতা দবির মণ্ডলকে সরিয়ে ক্যাডার রেজাকে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি করা হয়। এরপর থেকে শুরু হয় তার নানা কুকীর্তি।

বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবর রহমান মজনু বলেন, অন্য দল থেকে এলে মায়ামমতা কম থাকে এটাই স্বাভাবিক। অনেকে ভালো করছে। আবার বিভিন্ন সময় অনেক অপকর্মের খবর শুনি, দলীয় ব্যবস্থাও নেই। আসলে এ ধারাবাহিকতা একদিনের নয়। এগুলো ঠিক করতে সময়ের প্রয়োজন।

জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি সাজেদুর রহমান শাহীন বলেন, প্রতিনিয়ত বিভিন্ন অভিযোগের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছি। আবার অনেক সময় শত্রুতা করেও প্রতিপক্ষরা মিথ্যা অভিযোগ ছড়ায়। তবে আমরা দলীয়ভাবে কঠোর। কেউ দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করলে ছাড় দেওয়া হবে না।

আওয়ামী লীগের রাজশাহী বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন বলেন, আমি মৌখিক অনেক অভিযোগ পাই। কিছু নেতার ছত্রছায়ায় এরা চলে এটাও বুঝি। কিন্তু কেউ অভিযোগ করে না। লিখিত অভিযোগ না থাকলে দলীয় ব্যবস্থা নেওয়া যায় না। তারপরেও নেত্রীর নির্দেশনা মতো সতর্ক রয়েছি। কোনো ঘটনা সামনে এলে অবশ্যই পদক্ষেপ নেবো।

এমআরআর/এসএইচএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।