ফোনে হেসে কথা বলায় অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে হাতুড়ি পিটিয়ে হত্যা

উপজেলা প্রতিনিধি উপজেলা প্রতিনিধি ভৈরব (কিশোরগঞ্জ)
প্রকাশিত: ০৯:০৮ পিএম, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩

ফোনে অন্যের সঙ্গে হেসে কথা বলার ক্ষোভে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী সেলিনা বেগমকে (৪০) হত্যা করেন স্বামী ফয়েজ উদ্দিন (৪১)। আদালতে তিনি এমনটিই জবানবন্দি দিয়েছেন।

শুক্রবার (২৯ সেপ্টেম্বর) রাত ৮টার দিকে কিশোরগঞ্জ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. রিয়াজুল কাউছার ১৬৪ ধারায় তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন। অন্যের সঙ্গে ফোনে হেসে কথা বলার ক্ষোভে তিনি হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে সেলিনাকে হত্যা করেন বলে স্বীকারোক্তি দেন।

শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মো. শাহাদাত হোসেন গণমাধ্যমকর্মীদের এই তথ্য জানান।

পিবিআই সূত্রে জানা যায়, ফয়েজ উপজেলার কালিকাপ্রসাদ ইউনিয়নের ঝগড়ারচর গ্রামের মৃত মুসলিম উদ্দিনের ছেলে। তিনি পাদুকা ব্যবসায়ী। সেলিনা একই উপজেলার শিবপুর ইউনিয়নের ভাটি কৃষ্ণনগর গ্রামের জাহের মিয়ার মেয়ে। ২০ বছর আগে তাদের বিয়ে হয়। তাদের তিন সন্তান। চলতি বছরের ৩১ জুলাই নিজ ঘরে ফয়েজের হাতুড়ির আঘাতে সেলিনার মৃত্যু হয়। সেলিনা অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। এ ঘটনায় পরদিন সেলিনার ছোট ভাই নাহিদুল ইসলাম বাদী হয়ে ভৈরব থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলায় প্রধান আসামি করা হয় ফয়েজকে।

২০ আগস্ট মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় পিবিআই। তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় পিবিআই কিশোরগঞ্জের উপপরিদর্শক আবু কালামকে। সেই মামলায় ফয়েজকে গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত দুইটার দিকে ঢাকার লালবাগ থানাধীন নবাবপুর রোডের ক্লাবপাড়া এলাকা থেকে গ্রেফতার করে পিবিআই।

জবানবন্দিতে ফয়েজ উল্লেখ করেন, নিজ বাড়িতেই তার জুতার কারখানা। ঘটনার রাতে ফয়েজ চার ডজন জুতা সেলিনার কাছে এনে কাগজের প্যাকেট করার জন্য বলেন। এই কথা বলে ফয়েজ ঘর থেকে বের হয়ে যান। কিছুক্ষণ পরে এসে দেখেন, সেলিনা ফোনে হেসে হেসে কথা বলছেন। তখনো জুতার প্যাকেট করা হয়নি। এতে ফয়েজ ক্ষুব্ধ হন এবং কার সঙ্গে হেসে হেসে কথা বলছিলেন জানতে চান।

ফয়েজের ধারণা, সেলিনা কোনো পুরুষের সঙ্গে কথা বলছিলেন। এই নিয়ে দুজনের মধ্যে কথা কাটাকাটি শুরু হয়। একপর্যায়ে হাতে থাকা জুতা তৈরির কাজে ব্যবহৃত হাতুড়ি দিয়ে সেলিনার মাথায় আঘাত করেন তিনি।

এ বিষয়ে পুলিশ সুপার শাহাদাত হোসেন বলেন, আদালতে ফয়েজের জবানবন্দির মাধ্যমে মামলাটির অনেকটা অগ্রগতি হলো। এখন চেষ্টা থাকবে যত দ্রুত সম্ভব আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া। আমরা এখন সেইভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছি।

বাদী নাহিদুল ইসলাম বলেন, তার বোন কখনোই অন্য পুরুষের সঙ্গে কথা বলতেন না। বরং ফয়েজ বহু নারীতে আসক্ত ছিলেন। এই নিয়ে তার বোনের সঙ্গে দাম্পত্য বিরোধ চলছিল। অন্য নারীর সঙ্গে কথা বলতে বারণ করলেই নির্যাতন চালানো হতো।

রাজীবুল হাসান/এফএ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।