জোড়া খুনের মামলায় আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি গ্রেফতার
লক্ষ্মীপুরে পরকীয়া প্রেমিক ইউসুফসহ স্ত্রী রিনা বেগমকে হত্যার দায়ে আমৃত্যু সশ্রম কারাদণ্ড প্রাপ্ত আসামি ইব্রাহিম খলিলকে (৪০) গ্রেফতার করেছে র্যাব।
মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) ভোরে চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার তকিরহাট এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। ইব্রাহিম রামগতি উপজেলার চরলক্ষ্মী গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে।
র্যাব-১১ এর নোয়াখালী ক্যাম্পের কোম্পানি অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কমান্ডার মাহমুদুল হাসান জাগো নিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, জোড়া খুনের ঘটনা ইব্রাহিমের আমৃত্যু সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। কিন্তু তিনি দীর্ঘদিন পলাতক ছিলেন। তাকে গ্রেফতারের পর পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য রামগতি থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: স্কুল ছাত্রীকে ইভটিজিং, যুবকের ৬ মাসের জেল
লক্ষ্মীপুর জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) জসিম উদ্দিন বলেন, পরকীয়া প্রেমিক ইউসুফসহ স্ত্রী রিনাকে হত্যা করেন ইব্রাহিম। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ১৫ ফেব্রুয়ারি জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. রহিবুল ইসলাম তাকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেন। একই সঙ্গে ১০ হাজার টাকা জরিমানাও করা হয়। তবে রায়ের সময় আসামি পলাতক ছিলেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, রামগতির চরলক্ষ্মী গ্রামের বেলাল মাঝির ছেলে ইউসুফ ইব্রাহিমের সঙ্গে ফেনীর একটি ইটভাটার শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। এতে প্রায়ই ইউসুফ তার বাড়িতে যেতেন। একপর্যায়ে ইব্রাহিমের স্ত্রী রিনার সঙ্গে ইউসুফের পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। ২০১৭ সালের ৩ জুন ইফতারের সময় ইউসুফ ওই বাড়ি যায়। সেদিন ইব্রাহিম ফেনী থেকে বাড়ি এসে রিনা ও ইউসুফকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ইব্রাহিম দুজনকেই ঘরে থাকা ধারালো ছুরি দিয়ে কুপিয়ে জখম করেন।
ইউসুফকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান। এ ঘটনায় তার স্ত্রী তছলিমা বেগম বাদী হয়ে রামগতি থানায় মামলা করেন। অন্যদিকে আহত অবস্থায় রিনাকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ৬ জুন চিকিৎসাধীন অবস্থায় রিনা মারা যান। পরে রিনার মা জানু বেগম নোয়াখালীর সুধারাম থানায় একটি জিডি করেন।
আরও পড়ুন: যশোরে স্বামী হত্যার দায়ে স্ত্রীর যাবজ্জীবন
এদিকে হত্যা দুটি একই ঘটনা হওয়ায় ১১ জুন মামলাটি রামগতি থানার মামলার সঙ্গে সংযুক্ত করে আদালতে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়। একই বছরের ১২ নভেম্বর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও রামগতি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ফরিদ আহম্মদ আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। দীর্ঘ শুনানি ও সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত ইব্রাহিমকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেন।
কাজল কায়েস/জেএস/এএসএম