সৈয়দপুরে রাস্তা সংস্কারের দাবিতে ইজিবাইকচালকদের বিক্ষোভ

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি নীলফামারী
প্রকাশিত: ০৭:২৩ পিএম, ২৫ অক্টোবর ২০২৩

নীলফামারীর সৈয়দপুরে রাস্তা সংষ্কারের দাবিতে ও ইজিবাইক আটকের প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছেন ইজিবাইক মালিক এবং চালকরা।

বুধবার (২৫ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে সৈয়দপুর পৌরসভা কার্যালয় চত্বরে এই কর্মসূচি পালন করা হয়। এতে শহরের তামান্না সিনেমা হল মোড় থেকে ঢেলাপীরগামী সব ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক চালকরা অংশগ্রহণ করেন।

পৌরসভা চত্বরে অনুষ্ঠিত কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেন উপজেলা ইজিবাইক মালিক সমবায় সমিতির সভাপতি হাজি আসলাম। তার সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন ইজিবাইক শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন, চালক জাবেদ আলম, ফরহাদ হোসেন, আরমান আলী প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, সৈয়দপুর শহরের ৮০ শতাংশ সড়কেরই জরাজীর্ণ অবস্থা। বিশেষ করে প্রধান সড়কগুলো বেহাল। তামান্না মোড় থেকে ওয়াপদা মোড় পর্যন্ত চার কিলোমিটার সড়ক একেবারেই চলাচল অযোগ্য। প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। ভাঙছে যানবাহন, নষ্ট হচ্ছে মালামাল এবং আহত হচ্ছে লোকজন।

তারা বলেন, দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে অসহনীয় দুর্ভোগ পোহাচ্ছে সৈয়দপুরবাসী। পৌরসভা কর্তৃপক্ষ জনভোগান্তি লাঘবে কোনো ব্যবস্থায়ই নিচ্ছে না। মাঝে আন্দোলন করায় ২৮ লাখ টাকা খরচ দেখিয়ে লোক দেখানো থুক পালিশ করে জনগণের টাকা তসরুপ করা হয়েছে। এক মাসও টেকেনি ওই জোড়াতালির সংষ্কার। আবার বর্ষার সময় মাটি ও রাবিশ দিয়ে রাস্তার বড় বড় গর্ত ভরাট করায় কাদাপানিতে একাকার হয়ে তা আরও কষ্ট হয়ে দাঁড়িয়েছে।

jagonews24

আন্দোলনকারীরা বলেন, এমতাবস্থায় আমরা খুবই ঝুঁকি নিয়ে কষ্ট করে চলাচল করছি। রাস্তা খারাপ থাকায় যেমন অতিরিক্ত সময় লাগে তেমনি যাত্রীও কম হয়। এতে শ্রম বেশি হলেও আয় নেই। এই পরিস্থিতিতে পৌর কর্তৃপক্ষ নাগরিকদের পাশে দাঁড়ানোর পরিবর্তে উল্টো মরার ওপর খাড়ার ঘা মারছে। অটো প্রতি লাইসেন্স বাবদ দুই হাজার টাকা আদায়সহ প্রতিদিন পয়েন্টে পয়েন্টে ১০ টাকা করে পার্কিং ট্যাক্স নিচ্ছে।

তারা আরও বলেন, এতে আমরা শোষণের শিকার হচ্ছি। তাই বাধ্য হয়ে আন্দোলনে নেমেছি। গত ১২ অক্টোবর থানার ওসিসহ পৌর প্যানেল মেয়র কথা দেন এক সপ্তাহের মধ্যে রাস্তা সংষ্কার কাজ শুরু করা হবে। আর রাস্তা ঠিক করা না হওয়া পর্যন্ত কোনো পার্কিং ট্যাক্স নেওয়া হবে না এবং লাইসেন্সের জন্য কোনো অটোরিকশা ধরাও হবে না। কিন্তু ১২ দিন পার হলেও রাস্তা ভালো করার কোনো উদ্যোগ নাই। আবার নিয়মিত পার্কিং ট্যাক্স নিচ্ছে এবং জোর করে ধরে এনে লাইসেন্সের দুই হাজার টাকা আদায় করা হচ্ছে। তাই মেয়রের কাছে এসেছি। কিন্তু তিনি আমাদের আসার কথা জেনে পালিয়েছেন। আজ আমরা দাবি না মানা পর্যন্ত যাব না।

পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম আন্দোলনকারীদের উদ্দেশ্যে বলেন, তামান্না মোড় থেকে ওয়াপদা মোড় পর্যন্ত রাস্তা সংষ্কারের জন্য প্রকল্প প্রস্তাব বিশ্ব ব্যাংকে অনুমোদনের অপেক্ষায়। দুই-তিন মাসের মধ্য বাজেট পেলেই কাজ শুরু হবে। এই কথায় অটোচালক মালিকরা ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে।

এসময় পৌরসভার প্যানেল মেয়র শাহীন হোসেন এসে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করেন। তিনি বলেন, আমি নিজেই বুঝি রাস্তাগুলোর করুণ দশা। আমরা সঠিকভাবে কাজ করতে পারিনি। তাই সবার ভোগান্তি হচ্ছে। যান চালকদের আরও দূরূহ অবস্থা। তবে এত বড় রাস্তা সহসাই ঠিক করা সম্ভব নয়। অনেক টাকার প্রয়োজন। তাই আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে মেইনটেনেন্স করে আপাতত চলাচলযোগ্য করা হবে। এর আগে কোনো ট্যাক্স বা লাইসেন্স বাবদ টাকা নেওয়া হবে না।

এদিকে, তার আশ্বাসের পর আন্দোলনকারীরা কর্মসূচি স্থগিত করেন।

এমআরআর/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।