জব্দ করা চালের বস্তা সরাতে গিয়ে খাদ্যগুদাম কর্মকর্তা ধরা

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি শরীয়তপুর
প্রকাশিত: ০৯:৪৬ এএম, ১৩ নভেম্বর ২০২৩

‘কয়লা ধুলে ময়লা যায় না’ বাংলায় এ প্রবাদ বাক্যটি বহুল প্রচলিত। আর এ প্রবাদ বাক্যটি এবার সত্যিকারের রূপ দিলেন শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলা খাদ্যগুদাম কর্মকর্তা ইকবাল মাহমুদ।

সরকারি অনুমতি ছাড়াই খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল নিজ বাসভবনে মজুত রাখার দায়ে বাসাটি সিলগালা করে দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। সেই ঘটনার ৪৮ ঘণ্টা না পেরোতেই ঘটিয়ে বসেন অবাক করা আরেক কাণ্ড। রাতের আধারে সেই সিলগালা বাসার গ্রিল কেটে জব্দ করা চালের বস্তা সরিয়ে নিচ্ছিলেন তিনি। তবে শেষ রক্ষা হয়নি, ধরা পড়লেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) হাতে।

উপজেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, শনিবার (১১ নভেম্বর) দুপুরে ভেদরগঞ্জ উপজেলা খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকবাল মাহমুদের বাসভবনে অভিযান চালিয়ে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ৩০ কেজির ৩ বস্তা ও ৫০ কেজির ১০ বস্তা চাল এবং ১ হাজার ১০০টি খালি চালের বস্তা জব্দ করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। পরে ওই বাসভবনটি সিলগালা করে দেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক ও ভেদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আব্দুল্লাহ আল মামুন।

আরও পড়ুন: খাদ্যগুদাম কর্মকর্তার বাসায় মিললো ১৩ বস্তা সরকারি চাল 

এ বিষয়ে খাদ্যগুদাম কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসক এবং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত প্রতিবেদন দেওয়া হয়। এ ঘটনার পর রোববার (১২ নভেম্বর) সন্ধ্যায় খাদ্যগুদাম কর্মকর্তা ইকবাল মাহমুদ ভেদরগঞ্জ বাজারের ভাই ভাই ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপ থেকে কর্মচারী সজিব ছৈয়ালকে ভাড়া করে এনে বাসভবনের উত্তর দিকের জানালার চারটি রড বৈদ্যুতিক মেশিন দিয়ে কেটে খাদ্য গুদামের নৈশপ্রহরী আবু হানিফকে ভেতরে পাঠিয়ে চালের প্লাস্টিক ও পাটের বস্তাসহ বেশ কিছু সুতা সরিয়ে নিচ্ছিলেন।
বিষয়টি টের পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে খাদ্য কর্মকর্তাসহ বৈদ্যুতিক কাটার মেশিন পরিচালনাকারী সজিব ছৈয়ালকে আটক করে। এ সময় পালিয়ে যান নৈশপ্রহরী আবু হানিফ।

শরীয়তপুর জেলা খাদ্য কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, জানালার গ্রিল কাটার বিষয়টি অত্যন্ত লজ্জাজনক। বিষয়টি নিয়ে আমরা লজ্জিত। গতকালের ঘটনার পর তার বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছিল।

এ বিষয়ে ভেদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আব্দুল্লাহ আল মামুন জাগো নিউকে বলেন, সন্ধ্যার একটু আগে আমার কাছে একটি ফোন আসে যে সিলগালাকৃত বাসার গ্রিল কেটে জব্দকৃত চালের বস্তা সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে এবং উপজেলা প্রশাসনের কার্যক্রমকে মিথ্যা প্রমাণিত করার চেষ্টা চলছে। এ সংবাদ পাওয়ার পরই আমি সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) নিয়ে এসে উপজেলা খাদ্যগুদামের কর্মকর্তা ইকবাল মাহমুদকে হাতেনাতে ধরি। তিনি যে গর্হিত কাজটি করেছেন সেটি একটি ফৌজদারি অপরাধ। আমরা বিষয়টি জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে দুদককে জানাবো। দুদক তার আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে।


বিধান মজুমদার অনি/এসজে/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।