কামারুজ্জামানের ফাঁসি কার্যকরের দাবি স্ত্রীর বড় ভাইয়ের
মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতের সিনিয়র সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের ফাঁসি দ্রুত কার্যকরের দাবি জানিয়েছেন তার স্ত্রীর (কামারুজ্জামানের স্ত্রী নুরুন্নাহার) বড় ভাই আবু সালেহ নুরুল ইসলাম হীরু। রোববার দুপুরে শেরপুরে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত জেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভায় তিনি ওই দাবি জানান।
তবে তিনি ঘাতক কামারুজ্জামানের স্ব-গোত্রীয় বা আদর্শের অনুসারী নন, তিনি সম্পূর্ণ বিপরীত আদর্শের এক বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা। কেবল তাই নয়, তিনি মুক্তিযোদ্ধা সংসদ শেরপুর জেলা ইউনিট কমান্ডের নির্বাচিত কমান্ডার এবং অগ্রণী ব্যাংকের সাবেক এজিএম।
সভা সূত্রে জানা যায়, সভায় বিজয়ের মাসকে কেন্দ্র করে মহান বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানাদিসহ স্পর্শকাতর স্থাপনা এবং ২৫ ডিসেম্বর বড়দিন, ৩১ ডিসেম্বর থার্টি ফার্স্ট নাইট, ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আলবদর প্রধান কামারুজ্জামানের মামলার সাক্ষিদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণসহ হাইকোর্টের আপিল বিভাগে বহাল থাকা দণ্ড দ্রুত কার্যকরের দাবি জানিয়ে কমিটির কয়েকজন সদস্যের বক্তব্য রাখেন। একপর্যায়ে তাদের বক্তব্যের সাথে একাত্মতা পোষণ করে জেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভায় বক্তব্য রাখেন জেলা মুক্তিযোদ্ধা ইউনিট কমান্ডার নুরুল ইসলাম হীরু।
এ সময় তিনি বলেন, ঘাতক কামারুজ্জামান আমার ঘনিষ্ঠ আত্মীয় হলেও সকলের দাবির সাথে একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে আমিও একমত পোষণ করি এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে তার ঘৃণ্য ভূমিকার নিন্দাসহ উচ্চ আদালতে বহাল থাকা মৃত্যুদণ্ড দ্রুত কার্যকরের দাবি জানাচ্ছি।
একই সাথে তিনি আক্ষেপ করে বলেন, তাকে (কামারুজ্জামানকে) বয়কট করার কারণে পরিবার ও আত্মীয়-স্বজন থেকে আমি অনেকটাই একা হয়ে আছি। এরপরও তার ফাঁসি দ্রুত কার্যকরের মধ্য দিয়ে জাতির কলঙ্ক মুক্তির স্বাদ আমিও পেতে চাই।
সভায় জেলায় সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতিতে সন্তোষ প্রকাশ করা হয়। সেই সাথে কামারুজ্জামানের মামলার মূল ঘটনাস্থল নালিতাবাড়ীর সীমান্তবর্তী সোহাগপুর বিধবাপল্লীর নিরাপত্তাসহ অন্যান্য সাক্ষি ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের জনপ্রতিনিধিদের নিরাপত্তা জোরদার করার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
শেরপুরের জেলা প্রশাসক ও জেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ জাকীর হোসেনের সভাপতিত্বে সভায় কমিটির উপদেষ্টা হুইপ আতিউর রহমান আতিক উপস্থিত ছিলেন।
অন্যান্যের মধ্যে পুলিশ সুপার মেহেদুল করিম, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট অঞ্জন চন্দ্র পাল, শেরপুর পৌরসভার মেয়র হুমায়ুন কবীর রুমান, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান ছানুয়ার হোসেন ছানু, সিভিল সার্জন ডা. আনোয়ার হোসেন, শেরপুর সরকারি কলেজের উপাধ্যক্ষ সারোয়ার জাহান, জেলা মুক্তিযোদ্ধা ইউনিট কমান্ডার নুরুল ইসলাম হীরু, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী ইন্দ্রজিৎ দেবনাথ, পল্লী বিদ্যুতের জেনারেল ম্যানেজার মাশরুল হক খান, জেলা আনসার অ্যাডজুডেন্ট শফিকুল ইসলাম খান, জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট নারায়ণ চন্দ্র হোড়, প্রেসক্লাব সভাপতি রফিকুল ইসলাম আধার, জেল সুপার মজিবুর রহমান, স্পেশাল পিপি অ্যাডভোকেট গোলাম কিবরিয়া বুলু, ঝিনাইগাতী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ এসএমএ. আব্দুল্লাহ হেল ওয়ারেজ নাঈম, চেম্বারের সিনিয়র সহ-সভাপতি প্রকাশ দত্ত, পৌর প্যানেল মেয়র মতিউর রহমান, মুক্তিযোদ্ধা গোলাম রব্বানী প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।