পুকুর থেকে বালু তুলে রাস্তা ভরাট, ভাঙনের মুখে মসজিদ-মন্দির

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি সাতক্ষীরা
প্রকাশিত: ০১:০৮ পিএম, ২৪ নভেম্বর ২০২৩

সাতক্ষীরা সদরে ড্রেজার বসিয়ে পুকুর থেকে কাদাবালু উত্তোলন করে দেওয়া হচ্ছে রাস্তায়। কয়েকদিন আগে স্থানীয় ভূমি কর্মকর্তা বালু উত্তোলন বন্ধ করলেও সেটি আর বেশি দিন এগোয়নি। আবারও শুরু হয়েছে কাদাবালু উত্তোলন। এতে পুকুরের পাড়ে অবস্থিত মসজিদ ও মন্দির ভাঙনের মুখে পড়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার বাঁশদহা ইউনিয়নের বাঁশদহা বলফিল্ডের পশ্চিম পাশে জিন্নাত আলীর মালিকানাধীন পুকুরের একপাড়ে মসজিদ অপরপাড়ে মন্দির। ভবানীপুর ব্রিজের পাশ থেকে ট্যাংরাগামী পর্যন্ত সড়ক কার্পেটিংয়ের জন্য ভরাট করা হচ্ছে। বালুমহাল থেকে বালু এনে ওই রাস্তায় দেওয়ার কথা থাকলেও পুকুর থেকে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। কয়েকদিন আগে স্থানীয় ভূমি অফিসের নায়েব এসে তা বন্ধ করে দেন। তবে আবারও কাদাবালু উত্তোলন করে রাস্তায় দিচ্ছে ঠিকাদারের লোকজন।

jagonews24

অভিযোগ আছে, বাঁশদহা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মফিজুর রহমান ও ৭ নম্বর ওয়ার্ড মেম্বর বদরুজ্জামান খোকা বালু উত্তোলনে সরাসরি নেতৃত্ব দেওয়ায় বন্ধ হচ্ছে না ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন। বরং পুকুর থেকে কাদাবালু উত্তোলনের কারণে মসজিদ ও মন্দির ধ্বসে পুকুরে পড়ে যাওয়ার আশঙ্কায় আছেন স্থানীয়রা। তবে ভয়ে কেউ কোনো কথা বলতে সাহস পাচ্ছেন না।

সড়কের সাব ঠিকাদার শহিদুল ইসলাম বলেন, বালু তো আমি উঠাচ্ছি না। বালু উঠাচ্ছে ইউপি সদস্য ও চেয়ারম্যান। আমি সাব ঠিকাদার হিসেবে শুধু কাজের তদারকি করছি।

ড্রেজার মেশিনের মালিক শফিকুল ইসলাম কালু বলেন, বালু উত্তোলন করে রাস্তায় দিচ্ছি। এ বিষয়ে জানতে আপনারা ইউপি সদস্যের সঙ্গে কথা বলেন।

ড্রেজার বসিয়ে বালু তোলার বিষয়ে জানতে চাইলে ইউপি সদস্য বদরুজ্জামান বলেন, চেয়ারম্যানসহ পরিষদের সব মেম্বারদের সিদ্ধান্তে পুকুর থেকে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। বালু উত্তোলন করে রাস্তায় না দিলে কাজটি ফিরে যেত। এজন্য চেয়ারম্যান উপজেলায় কথা বলেছেন। তবে বালু উত্তোলনে আমাদের কোনো ব্যক্তিগত স্বার্থ নেই।

তবে চেয়ারম্যানের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।

তবে বাঁশদহা ইউনিয়ন উপ-সহকারী ভূমি কর্মকর্তা মহাসীন আলী জাগো নিউজকে বলেন, বিষয়টি জানতে পেরে কয়েক দিন আগে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন বন্ধ করে দিয়েছিলাম। তবে আবার বালু উত্তোলন হচ্ছে শুনে ঘটনাস্থলে যাই। এ সময় বালু উত্তোলনকারীরা বলেন, ইউএনওর কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে নাকি তারা বালু উত্তোলন করছেন।

jagonews24

সাতক্ষীরা সদর উপজেলা প্রকৌশলী এয়াকুব আলী জাগো নিউজকে বলেন, রাস্তায় বালু ভরাট করা হচ্ছে বলে জেনেছি। তবে কোথা থেকে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে সেটি জানি না। এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে দেখবো।

সাতক্ষীরা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফাতেমা-তুজ-জোহরা জাগো নিউজকে বলেন, পুকুর থেকে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে কি না তা বলতে পারবো না। তবে কেউ লিখিত অভিযোগ দিলে এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আহসানুর রহমান রাজীব/এসজে/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।