ছুটিতে পর্যটকের ভিড় বেড়েছে সুন্দরবনে
বিজয় দিবসের ছুটিতে পর্যটকের ঢল নেমেছে সুন্দরবনে। শনিবার (১৬ ডিসেম্বর) সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত সুন্দরবনের করমজলে সবচেয়ে বেশি পর্যটক ভ্রমণ করেছেন। করমজল পর্যটন ও বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রে প্রায় দুই হাজার পর্যটক আসেন।
এরআগে শুক্রবার এসেছিলেন প্রায় দেড় হাজার পর্যটক। চলতি মাসের মধ্যে শুক্র ও শনিবার এ দুদিনেই সবচেয়ে বেশি পর্যটক এসেছেন করমজলে। এ মাসের বিগত দিনগুলোতে করমজলে পর্যটকদের আগমনের সংখ্যা ছিল গড়ে প্রায় তিনশোর মতো।

করমজলে দর্শনার্থীদের উপভোগের জন্য রয়েছে দীর্ঘ ফুট টেইলর, সুউচ্চ ওয়াচ টাওয়ার, কুমির ও কচ্ছপের প্রজনন কেন্দ্র। রয়েছে সংরক্ষিত বনের মায়াবী হরিণ ও বানর। বনের বৃক্ষরাজির পরিচিতি জানতে গাছের গায়ে লিখে রাখা হয়েছে নামও। এছাড়া রয়েছে একটি জাদুঘর। সেখানে রয়েছে বনের বাঘ, হরিণ, কুমিরসহ বিভিন্ন প্রাণীর কংকাল। মমি করে রাখা আছে নানা ধরনের বন্যপ্রাণীর মরদেহ।
সুন্দরবন ভ্রমণে আসা রংপুরের মীর আনোয়ার আলী বলেন, ‘আগে কখনো সুন্দরবনে আসা হয়নি। আজ প্রথমবারের মতো করমজলে এলাম। বনের ভেতর ঘুরে দেখলাম অনেক কিছু। মনটা ভরে গেছে।’

ঢাকার আদাবর থেকে আসা বুশরা চৌধুরী রুবা বলেন, ‘স্কুল-কলেজ বন্ধ তাই ছুটিতে পরিবার নিয়ে সুন্দরবন ভ্রমণে এসেছি। সুন্দরবনে আসার পথে পশুর নদীতে সারি সারি জাহাজ (কার্গো, কোস্টার) ও জেলেদের নৌকায় মাছ ধরতে দেখে খুব ভালো লেগেছে। সেইসঙ্গে বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনের প্রাণ-প্রকৃতি দেখে পরিবারের সবাই মিলে আনন্দ উপভোগ করেছি।’
খুলনার বটিয়াঘাটা থেকে এসেছেন সালমা বেগম। তিনি বলেন, ‘শ্বশুরবাড়ির আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে করমজলে ঘুরতে এসেছি। পরিবারসহ বনের ভেতরে ঘুরে ঘুরে পশুপাখি ও গাছপালা দেখে ভালো লেগেছে। তবে বেশি আনন্দ পেয়েছে বাচ্চারা।’

এ বিষয়ে মোংলা বন্দর জালিবোট (পর্যটনবাহী নৌযান) মালিক সমিতির সভাপতি এইচ এম দুলাল বলেন, শীত মৌসুমে সুন্দরবনে পর্যটকদের আগমন বেড়ে যায়। বর্তমানে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে হরতাল-অবরোধসহ চলমান নির্বাচন প্রস্তুতি চলায় লোকজনের আগমন আশানুরূপ বাড়েনি। তবে ছুটির দিন হওয়ায় শুক্র ও শনিবার লোকজন বাড়ায় আমাদের জালিবোটের ভাড়া ও ট্রিপ বাড়ানো হয়েছে।
পর্যটন ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান ও রমজান আলী বলেন, ‘এখন মূলত প্যাকেজ (৩ দিনের) ট্যুর বেশি হচ্ছে। আশা করছি নির্বাচনের পর দেশের পরিস্থিতি ভালো হলে পর্যটকদের আগমন বাড়বে।

তবে মোংলা থেকে সবচেয়ে কাছাকাছি হওয়ায় করমজলেই অন্যান্য স্পটের তুলনায় দর্শনার্থীদের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি হয়ে থাকে বলে জানান করমজল পর্যটন ও বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজাদ কবির।
তিনি বলেন, ১৬ ডিসেম্বর ছুটির দিনে করমজলের পাশাপাশি হাড়বাড়িয়া, নীলকমল, হিরণপয়েন্ট, কটকা, কচিখালী ও আন্ধারমানিকসহ অন্যান্য পর্যটন কেন্দ্রেও ভিড় বেড়েছে।
আবু হোসাইন সুমন/এসআর/এএসএম