সিরাজগঞ্জ
পত্রিকার এজেন্টকে মারধর, ভাইস চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মামলা
পত্রিকার এজেন্টকে মারধরের ঘটনায় সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলা ভাইস-চেয়ারম্যান ইউসুফ আলীর (৪২) বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) দুপুরে ভুক্তভোগীর ছেলে মোমিন মণ্ডল বাদী হয়ে বেলকুচি থানায় মামলাটি করেন।
মামলার এজাহারে জানা যায়, দৌলত মণ্ডল রাজনীতির সঙ্গে জড়িত না হলেও তার দুই ছেলে মোমিন মণ্ডল ও ছোট ছেলে নাবিন মণ্ডল সিরাজগঞ্জ-৫ আসনে ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ বিশ্বাসের সমর্থক ছিলেন। কিন্তু নির্বাচনে বিজয়ী হন নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আব্দুল মমিন মণ্ডল এমপি। সোমবার দৌলত মণ্ডলের ছোট ছেলেকে প্রাণনাশের হুমকি দেন উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ইউসুফ আলী ও তার লোকজন।
মঙ্গলবার সকালে বেলকুচি আদালত পাড়ায় পত্রিকা বিতরণের সময় দৌলত মণ্ডলকে বাড়ি ছেড়ে চলে যাবার হুমকি দেন উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ইউসুফ আলী। এরপর তাদের ভাড়ার বাড়িতে গিয়ে দৌলত মণ্ডল ও তার বড় ছেলে মোমিন মণ্ডলকে মারধর করেন ইউসুফ ও তার লোকজন।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী দৌলত মণ্ডল বলেন, এর আগেও নৌকার প্রার্থীর সমর্থক মণ্ডল গ্রুপের জিএম প্রকৌশলী আমিনুল ইসলাম মণ্ডল ও সাবেক শ্রমিক নেতা মোতালেব আমার দুই ছেলেকে মারধর করেছিলেন। ওই দুটি ঘটনায় থানায় মামলা করলেও আগের ওসি আসামিদের সঙ্গে যোগসাজশ করে আমিনুল ও মোতালেবসহ সব আসামিকে অব্যাহতি দেয়।
বেলকুচি পৌরসভার মেয়র সাজ্জাদুল হক রেজা জাগো নিউজকে বলেন, দৌলত মণ্ডলের পরিবার ঈগলের প্রতীকের সমর্থক ছিলেন। এ জন্য সংসদ নির্বাচনের নৌকার সমর্থকরা অন্যায়ভাবে অত্যাচার করছে।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বেগম আশানুর বিশ্বাস বলেন, ওসি আনিসুর রহমান শুরু থেকেই বিতর্কিত আচরণ করছেন। এ ঘটনায় তদন্ত সাপেক্ষে সঠিক বিচার দাবি করছি।
এ প্রসঙ্গে ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আব্দুল লতিফ বিশ্বাস অভিযোগ করে বলেন, ওসি আনিছুরের কারণে নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা বেড়েছে।
অভিযুক্ত নৌকা প্রতীকের সমর্থক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ইউসুফ আলী বলেন, দৌলত মণ্ডলের ছেলে মোমিন ইয়াবা সেবনকারী ও ছোট ছেলে নাবিন সন্ত্রাসী। তারা ভোটের দিন আমার ছেলেকে মারধর করেছে। সেজন্য দৌলত মণ্ডলের বাড়িতে গিয়ে পুলিশের সামনে ছেলেদের নিয়ে এলাকা থেকে অন্যত্র চলে যেতে বলেছি।
বেলকুচি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনিছুর রহমান বলেন, বাদীর লিখিত এজাহার অনুযায়ী মামলা হয়েছে। এর আগে তার বাবার জিডিও এন্ট্রি করা হয়েছিল। আর আসামি গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
এ প্রসঙ্গে সিরাজগঞ্জ পুলিশ সুপার (এসপি) আরিফুর রহমান মণ্ডল বলেন, দৌলত মণ্ডল ও তার ছেলে মোমিন মণ্ডলকে মারধরের ঘটনায় মামলা হয়েছে। এ মামলার আসামি গ্রেফতারের বিষয়ে থানার পাশাপাশি সার্কেল এএসপি ও ডিবি পুলিশকেও দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
এম এ মালেক/আরএইচ/জেআইএম