চাঁদপুর
শীতের প্রভাবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে উপস্থিতি কমছে
ঘন কুয়াশা আর কনকনে শীতে চাঁদপুরের স্কুলগুলোতে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কমতে শুরু করেছে। জেলায় এক হাজার ১৫৬ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ঠান্ডাজনিত কারণে ছাত্র-ছাত্রীরা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।
হাসপাতালগুলোতে ৫-১০ বছর বয়সী শিশুদের ঠান্ডাজনিত জ্বর-সর্দি রোগের চিকিৎসা নিতে দেখা মিলছে।
চাঁদপুর শহরের শিশু কল্যাণ বিদ্যালয়ের শিক্ষক শাহাদাত হোসেন শান্ত জানান, সম্প্রতি তাদের স্কুলে তৃতীয় শ্রেণির এক ছাত্র দীর্ঘদিন মাথা ব্যথায় আক্রান্ত হয়ে শীতের মধ্যে মারা যায়। পরে বিষয়টি নজরে আসলে জেলা প্রশাসন ওই স্কুলের সব শিক্ষার্থীদের জন্য কম্বল বরাদ্দ দেয়। এছাড়া চাঁদপুর সদর উপজেলা প্রশাসন উটের মাংস বিতরণ করেছে। শিক্ষকরা বলছে, কুয়াশা ও শীতের কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে উপস্থিতি কম।
হাজীগঞ্জ উপজেলার মোহাম্মদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মুহাম্মদ কামাল হোসাইন চৌধুরী বলেন, শহরের তুলনায় গ্রামের স্কুলগুলোতে শিক্ষার্থীরা কম আসছে। শীতে শিক্ষকরা যথাসময়ে উপস্থিতি থাকলে শিক্ষার্থীরা একটু ধীরে ধীরে আসে। তাই শীতে ক্লাস কিছুটা দেরিতে শুরু করতে হয়।

চাঁদপুর শহরের ষোলঘর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী আবরার ফাইয়াজের মা ইশরাত জাহান ইভা জানান, প্রচুর ঠান্ডা। সকাল বেলা আসতে অনেক কষ্ট হয়। যেসব শিশুদের ঠান্ডা জনিত সর্দি-কাঁশি-জ্বর হয়। ঠান্ডা লাগলে শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায়। শীতে ঘুম থেকে উঠে দেরি হয়। শিশুদের নিয়ে বিদ্যালয়ে যেতে বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে।
শহরের বিষ্ণুদী ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার শিক্ষার্থী সিয়াদ হোসেন বলেন, বাইরে অনেক ঠান্ডা। ক্লাস করতে খুব কষ্ট হয়। ঠান্ডা বেশি হলে বাসা থেকে বের হই না।
ষোলঘর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোস্তফা কামাল বাবুল জানান, শীতে উপস্থিতির হার প্রায় ২০ ভাগ কমেছে। আগে ৯০-৯৫ ভাগ উপস্থিতি থাকলেও এখন শতকরা ৬০-৬৫ ভাগ শিক্ষার্থী স্কুলে আসছে। অনুপস্থিত শিক্ষার্থীদের খোঁজ নিতে গেলে অভিভাবকেরা বলছেন, ঠান্ডা লেগেছে অসুস্থ।
হাজীগঞ্জ উপজেলার রায়চোঁ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শিরীনা শামিম বলেন, প্রচণ্ড শীতে শিশুদের নিয়ে বিপাকে আছেন। ৯৫-৯৬ ভাগ শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিল। কিন্তু শীতে শিশুরা অসুস্থ হয়ে পড়ছে। তাই উপস্থিতি কম। শীতের কারণে নিয়মিত সমাবেশ বন্ধ রাখা হয়েছে। ২-১ দিন পরপর সমাবেশ করা হয়।
জেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবদুর রেজ্জাক ছিদ্দিকী জানান, জেলার এক হাজার ১৫৬ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দুই লাখ ৪৩ হাজার ৮৩৯ জন শিক্ষার্থী। এছাড়া প্রাক-প্রাথমিকে ৪৭ হাজার ১৭৪ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। কিন্ডার গার্ডেনের সংখ্যা ৫৬৮টি। শীতের প্রকোপে স্কুলগুলোতে শিক্ষার্থীর উপস্থিতি কিছুটা কমেছে। তবে সরকারিভাবে শীতে শিক্ষার্থীদের জন্য কোন শীতবস্ত্রের বরাদ্দ নেই।
শরীফুল ইসলাম/আরএইচ/জিকেএস