সমলয় পদ্ধতিতে বোরো আবাদে নতুন সম্ভাবনা
সিরাজগঞ্জে এবার কৃষি মন্ত্রণালয়ের পাইলট প্রোগ্রামের আওতায় সদর ও তাড়াশ উপজেলার ৩০০ বিঘা জমিতে সমলয় পদ্ধতিতে হাইব্রিড ধান চাষ করা হবে। এ দুটি উপজেলার কৃষি পুনর্বাসন বাস্তবায়ন কমিটির মাধ্যমে এ পাইলট স্কীমের কার্যক্রম মনিটরিং করছে কৃষি বিভাগ। কার্যক্রম সফল হলে জেলার কৃষি খাত নতুন দিগন্তে পা রাখবে।
কৃষি বিভাগের সূত্রমতে, সমলয় চাষাবাদ পদ্ধতি হলো একটি নির্দিষ্ট মাঠে একই সময়ে একই জাতের ফসল চাষাবাদের মাধ্যমে ফসলের রোপন ও কর্তনের মাধ্যমে সময় এবং উৎপাদন খরচ কমানো। একই সঙ্গে নতুন প্রযুক্তির সঙ্গে কৃষকদের মেলবন্ধন তৈরি করা। আগামী দিনে আধুনিক কৃষির এক অপরিহার্য উদ্যোগ।
রোববার দুপুরে সদর উপজেলার বহুলী ইউনিয়ন রঘুরগাঁতী গ্রামে গেলে দেখা যায়, ডুমুর ব্লক নামে সমলয় পদ্ধতিতে চার হাজার ৫০০ প্লাস্টিকের ফ্রেম বা ট্রেতে বীজ বপন করা হয়েছে। এ মাসের শেষের দিকে এ চারা ১৫০ বিঘা জমিতে রাইস ট্রান্সপ্ল্যান্টারের মাধ্যমে রোপণ করা হবে। একই পদ্ধতিতে তাড়াশ উপজেলার আরও ১৫০ বিঘা জমিতে বোরো রোপণ করা হবে বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ।

সোমবার (২২ জানুয়ারি) বিকেলে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ সূত্রে জানা যায়, এ মৌসুমে জেলার ৯টি উপজেলায় বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে এক লাখ ৪১ হাজার ৫৭৫ হেক্টর। এ পর্যন্ত বীজ রোপণ করা হয়েছে ১২ হাজার ২২৫ হেক্টর জমি।
রঘুরগাঁতী গ্রামের সুবিধাভোগী কৃষক আবুল হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, আগে কখনও এ পদ্ধতিতে চাষাবাদ দেখিনি। অনেকটা কৌতুহল বশত হয়ে কৃষি বিভাগের পরামর্শে এবার চার বিঘা জমিতে বোরোর চাষাবাদ শুরু করবো। জমি আর সেচের খরচ বাদে সব কিছু নাকি সরকার দিবে। এ পদ্ধতি অনুসরণ করে বোরোতে লাভবান হলে আগামীতে আরও পরিধি বাড়াবো।
সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার কৃষি উপ-সহকারী এসএম শাহীন আলম জাগো নিউজকে বলেন, মানুষ বাড়লেও, বাড়ছে না কৃষি জমি। তাই স্বল্প জমিতে অধিক ধান উৎপাদন করে মানুষের খাদ্য চাহিদা পূরণ করতে হবে। এ লক্ষ্যে কৃষি বিভাগ উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে সমলয় পদ্ধতিতে বোরো ধান চাষাবাদ শুরু করেছে। এতে কৃষকরা বেশ উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন।

সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আনোয়ার সাদাত জাগো নিউজকে বলেন, সমলয় পদ্ধতিতে সরকার প্রতিটি ব্লকের আওতায় ১৫০ বিগা জমিতে বোরো চাষের প্রণোদনা দিয়েছে। প্রণোদনা কার্যক্রমের মাধ্যমে কৃষকের জমি এবং সেচের খরচ বাদে ধানের বীজতলা তৈরি থেকে শুরু করে সমুদয় ব্যয় বহন করবে সরকার।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বাবলু কুমার সূত্রধর জাগো নিউজকে বলেন, বোরো ফসল আরও অধিক উৎপাদন করার লক্ষ্যে এ পদ্ধতি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এতে কৃষকরা বেশি ফলন পাবে। প্রাথমিকভাবে দুটি উপজেলায় ৩০০ বিঘা জমিতে এ পদ্ধতিতে বোরো ধান চাষ করা হবে। আশা করছি ভালো ফল পাওয়া যাবে।
এম এ মালেক/এনআইবি/জেআইএম