শীতে মরছে মৌমাছি, লোকসানের আশঙ্কায় চাষিরা

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি সিরাজগঞ্জ
প্রকাশিত: ০২:৪০ পিএম, ২৪ জানুয়ারি ২০২৪

সিরাজগঞ্জে ফুলে ফুলে ভরে গেছে সরিষা ক্ষেত। চারপাশে এখন সরিষা ফুলের গন্ধ। সেই ফুলের মধু সংগ্রহে ব্যস্ত মৌচাষিরা। তবে তীব্র শীতের কারণে বিভিন্ন অঞ্চল থেকে মধু সংগ্রহ করতে আসা মৌচাষিরা পড়েছেন বিপাকে। কেননা ঘন কুয়াশা আর কনকনে শীতে প্রতিদিন মরছে হাজারও মৌমাছি।

সরেজমিনে দেখা গেছে, মৌচাষিরা সরিষাক্ষেতের পাশে শত শত মৌ-বাক্স বসিয়ে মধু সংগ্রহ করছেন। কিন্তু গত এক সপ্তাহের অধিক সময় ধরে ঘন কুয়াশা ও তীব্র শীতের কারণে মধু সংগ্রহ ব্যহত হচ্ছে। ঘন কুয়াশা আর কনকনে শীতের কারণে বাক্স থেকে মৌমাছি বের হচ্ছে না। যেসব মৌমাছি বাক্স থেকে বের হচ্ছে তীব্র শীতের কারণে সেগুলো মারা যাচ্ছে। আবার অনেক মৌমাছি বের হয়ে ঘন কুয়াশার পুনরায় বাক্সে ফিরতে পারছে না। বিভিন্ন পদ্ধতি ব্যবহার করেও রক্ষা করা যাচ্ছে না মৌমাছি।

জেলা কৃষি অফিস জানায়, চলতি মৌসুমে জেলায় ৮৫ হাজার ১৭০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ হয়েছে। এসব জমির পাশে ২৯ হাজার ১১৬ মৌমাছির বাক্স বসিয়ে মধু সংগ্রহ করছেন মৌচাষিরা।

বুধবার (২৪ জানুয়ারি) জেলার বাঘাবাড়ি প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া অফিস তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে ৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা মঙ্গলবার (২৩ জানুয়ারি) ছিল ৬ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

কথা হয় সাতক্ষীরার শ্যামনগরের হরিনগর গ্রাম থেকে মধু সংগ্রহে আসা ইয়াছিন আলীর সঙ্গে। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, প্রতি বছরই সিরাজগঞ্জের সরিষা ক্ষেত থেকে মধু সংগ্রহ করেন। এবছর তাড়াশের সগুনা ইউনিয়নে প্রায় ২৫০টি মৌ বাক্স স্থাপন করেছেন। কিন্তু শৈত্যপ্রবাহের কারণে বাক্সগুলো পাটের বস্তা ও গরম কাপড় দিয়ে ঢেকে রেখেছেন। শীতে প্রতিদিন মৌমাছি মারা যাচ্ছে, বাক্স থেকে বের হতে পারছে না। ফলে মধু সংগ্রহও সম্ভব হচ্ছে না। এভাবে চলতে থাকলে এবার লোকসানে পড়বো।

আরেক মৌচাষি বেল্লাল হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, কর্মক্ষম মৌমাছি মরলে বেশি ক্ষতি। খারাপ আবহাওয়ার কারণে মৌমাছির বিভিন্ন রোগ ধরছে। যেমন- ঠাণ্ডা লাগা, পাতলা পায়খানা, ঘন কুয়াশার কারণে উড়তে না পারা। এসব কারণে চরম ক্ষতির মধ্যে পড়েছি। আর কিছুদিন এভাবে চললে লাভ দূরের কথা মুলধন উঠানোই কষ্টকর হয়ে যাবে।

নাটোর থেকে আসা মৌচাষি শওকত বলেন, এখানে আগাম সরিষা আবাদ হয় শুনে অনেক আশা নিয়ে এসেছিলাম। ভেবেছিলাম বেশি মধু সংগ্রহ করতে পারবো। কিন্তু তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় ক্ষতি হচ্ছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-সহকারী কর্মকর্তা শামিনুর ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, জেলায় প্রচুর সরিষা চাষ হওয়ায় বিভিন্ন এলাকা থেকে মৌচাষিরা আসেন। কিন্তু ঘন কুয়াশা ও তীব্র শীতের কারণে মধু আহরণে সমস্যা হচ্ছে। এ জন্য কৃষি বিভাগ থেকে মাঠ পর্যায়ে বিভিন্ন পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

এম এ মালেক/এএইচ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।