ভাগাড়ে পড়ে ছিল শকুন, খাইয়ে সুস্থ করার চেষ্টা

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি নেত্রকোনা
প্রকাশিত: ০৭:২৫ পিএম, ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

নেত্রকোনা শহরের ময়লার ভাগাড়ে দুর্বল অবস্থায় পড়ে ছিল একটি হিমালয়ান শকুন। অসুস্থ শকুনটিকে উদ্ধার করে চিকিৎসা দিয়ে বনবিভাগে হস্তান্তর করেছেন পরিবেশকর্মীরা।

সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে জেলা শহরের রাজুর বাজার এলাকায় পৌরসভার ময়লার ভাগাড়ে শকুনটি পাওয়া যায় বলে জানান বাংলাদেশ রিসোর্স সেন্টার ফর ইনডিজেনাস নলেজ (বারসিক) নেত্রকোনার আঞ্চলিক সমন্বয়কারী অহিদুর রহমান।

তিনি বলেন, সকালে শহরের একটি ড্রেনে পড়ে ছিল হিমালয়ান শকুনটি। পৌরসভার পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা শকুনটিকে ড্রেন থেকে তুলে শহরের রাজুর বাজারের ময়লাকান্দা এলাকায় ময়লার ভাগাড়ে নিয়ে ফেলে রাখেন। বিষয়টি জানতে পেরে বন্যপ্রাণী ও বৃক্ষপ্রেমী আব্দুল হামিদকে সঙ্গে নিয়ে ময়লার ভাগাড়ে গিয়ে দেখি, শারীরিকভাবে দুর্বল অবস্থায় শকুনটিকে পড়ে রয়েছে। শকুনটি তখনো জীবিত আছে বুঝতে পেরে উদ্ধার করা হয়। এটিকে বাঁচাতে দ্রুত নিয়ে যাই সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ হাসপাতালে।

অহিদুর রহমান বলেন, আবাসস্থল ও খাদ্য সংকটে শকুন কমে এসেছে। শকুন আমাদের পরিবেশের উপকারী ও প্রয়োজনীয় প্রাণী। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় বন্যপ্রাণীর প্রতি সবাইকে যত্নশীল হওয়া প্রয়োজন।

বন্যপ্রাণী ও বৃক্ষপ্রেমী আব্দুল হামিদ বলেন, হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক শকুনটিকে দেখে জানান, খাবার সংকটে এটি বেশ দুর্বল হয়ে পড়েছে। চিকিৎসক স্যালাইনসহ কিছু ওষুধ দেন আর খাবার দিতে বলেন। তখন সেখানে উপস্থিত সবাই ১০-২০ টাকা করে চাঁদা তুলে ওষুধ আর মুরগি কিনে শকুনটিকে খেতে দেই। পরে এটিকে বনবিভাগের কর্মকর্তাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

জেলা প্রাণি হাসপাতালের ভেটেরিনারি সার্জন মিজানুর রহমান বলেন, খাদ্য সংকটের কারণে শকুনটি দুর্বল হয়ে গাছ থেকে পড়ে গিয়ে থাকতে পারে। প্রাণীটিকে মাল্টিভিটামিন, স্যালাইন ও প্রয়োজনীয় খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, এটি একটি হিমালয়ান গ্রিফন শকুন। এটির বৈজ্ঞানিক নাম ‘জিপস হিমালয়েনসিস’। আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘ বা আইইউসিএনের লাল তালিকায় হিমালয়ান গ্রিফন শকুনকে রাখা হয়েছে ‘প্রায়-বিপদগ্রস্ত’ ক্যাটাগরিতে। এর মানে হলো, এই প্রাণীর প্রজাতি নিকট ভবিষ্যতে বিপদগ্রস্ত হয়ে পড়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।

জেলা বনবিভাগের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুর রফিক বলেন, শকুনটিকে সুস্থ-সবল করতে সবধরনের চেষ্টা চলছে। আশা করছি, এক সপ্তাহের মধ্যে সুস্থ, সবল অবস্থায় আবার নিজ বাসস্থানে ফিরতে পারবে শকুনটি।

এইচ এম কামাল/এসআর/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।