কাজ না করেই প্রকল্পের টাকা তুলে নিলেন সভাপতি

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি নেত্রকোনা
প্রকাশিত: ০৪:১৬ পিএম, ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

নেত্রকোনার মোহনগঞ্জে কাজ না করে ভুয়া মাস্টাররোল জমা দিয়ে দুটি গ্রামীণ সড়ক নির্মাণ প্রকল্পের টাকা উত্তোলনের অভিযোগ উঠেছে প্রকল্পের সভাপতির বিরুদ্ধে। প্রকল্প দুটির সভাপতি স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার সোনা মিয়া।

এ ঘটনার তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি হাবিবুর রহমান হাবীব এলাকবাসীর পক্ষে বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) এ অভিযোগ করেন।

অভিযোগ ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার (পিআইও) কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার জৈনপুর গ্রামে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় দুটি সড়কে মাটি কাটার জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়। প্রকল্প দুটি হলো জৈনপুর উত্তরপাড়া কিশোর মিয়ার বাড়ি থেকে গোরস্থান ও আলমগীরের জমি থেকে খায়রুলের জমি পর্যন্ত রাস্তা নির্মাণ। এরমধ্যে একটি টিআর ও অপরটি কাবিখা প্রকল্প। একটির বরাদ্দ দুই লাখ টাকা, অপরটির চার মেট্রিক টন চাল। প্রকল্প দুটির সভাপতি ইউপি মেম্বার সোনা মিয়া। ওই দুটি সড়কে মাটি না কেটে কাজের ভুয়া মাস্টাররোল জমা দিয়ে পিআইও অফিস থেকে সম্পূর্ণ টাকা তুলে নিয়েছেন প্রকল্পের সভাপতি।

অভিযোগকারী স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, ‘ওই দুটি সড়কে মাটি কাটা হলে গ্রামের মানুষ হাওর থেকে ধান সহজে বাড়িতে নিয়ে আসতে পারবে। কিন্তু প্রকল্পের সভাপতি মেম্বার সোনা মিয়া কাজ না করেই টাকা তুলে নিয়েছেন। এতে এলাকার মানুষ হাওর থেকে ধান ঘরে তুলতে বিপদে পড়বে। এ ঘটনা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।’

এর আগে মেম্বার সোনা মিয়া ৩০-৩৫ জন উপকারভোগীর টিসিবি কার্ড আটকে রেখে পণ্য তুলে বিক্রি করে দেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।

এ বিষয়ে জৈনপুর গ্রামের কানন মিয়া, আল আমিন, খাদেম মোড়ল ও আবু সাইদ ইমন বলেন, ‘এতদিন আমরা জানতামই না যে দুটি সড়কে মাটি কাটার বরাদ্দ এসেছে। সম্প্রতি গ্রামের এক ব্যক্তি পিআইও অফিসে গিয়ে খোঁজ নিয়ে বিষয়টি জেনেছেন।’

জানতে চাইলে প্রকল্প সভাপতি ও ইউপি মেম্বার সোনা মিয়া বলেন, ভেকু মেশিন না পাওয়ায় কাজ করতে দেরি হচ্ছে। এখন ভেকুর ব্যবস্থা করেছি। দ্রুত কাজ শুরু করবো।

তিনি আরও বলেন, ‘পিআইও অফিসের সঙ্গে সম্পর্ক থাকলে কাজ না করে টাকা তোলা যায়। তবে টাকা তোলা হলেও তা জমা আছে।’

ইউপি চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘টাকা জমা আছে। ভেকুর কারণে কাজ দেরি হয়েছে। কালকেই কাজ শুরু হবে। এ নিয়ে টেনশনের কিছু নেই।’

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মেহেদি হাসান বলেন, ‘ভুয়া মাস্টাররোল জমা দিয়ে ওই দুটি প্রকল্পের বিল উত্তোলন করেছেন সভাপতি। বিষয়টি জানার পর কাজের জন্য চাপ দেওয়া হয়েছে। দ্রুত কাজ শুরু করার অঙ্গীকার করেছেন ইউপি চেয়ারম্যান।’

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হাফিজা জেসমিন বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এইচ এম কামাল/এসআর/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।