অনুমতি ছাড়াই প্রবাসে ইউপি সদস্য, সেবাবঞ্চিত ওয়ার্ডবাসী

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি ফরিদপুর
প্রকাশিত: ১০:৩৯ এএম, ০১ মার্চ ২০২৪

ফরিদপুরের সালথা উপজেলার আটঘর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য (মেম্বার) অনুমতি ছাড়াই প্রাবাসে পাড়ি জমিয়েছেন। ইউপি সদস্য না থাকায় বিভিন্ন সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন ওয়ার্ডবাসী। তাছাড়া পরিষদের মাসিক সভাসহ বিভিন্ন কাজে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে সংশ্লিষ্টদের।

অভিযুক্ত ওই ইউপি সদস্যের নাম মো. কাউছার মাতুব্বর। তিনি উপজেলার আটঘর ইউনিয়নের গোয়ালপাড়া গ্রামের মধ্যপাড়ার মৃত গোলাম মহিউদ্দিনের ছেলে।

স্থানীয় বাসিন্দা ও ইউনিয়ন পরিষদ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার গোয়ালপাড়া ও খোয়াড় গ্রাম নিয়ে আটঘর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড গঠিত। সেখানে মোট ভোটার ২ হাজার ৩৬৬ জন এবং জনসংখ্যা প্রায় ৩ হাজারের বেশি। ইউপি সদস্য (মেম্বার) কাউছার মাতুব্বর স্থানীয়ভাবে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত এবং ২০১৭ সালে আটঘর ইউনিয়নের আলোচিত জিয়া হত্যা মামলার ৪ নম্বর আসামি।

জিয়া নিহতের পর কাউছার ৬-৭ মাস প্রবাসে কাটান। এরপর বাড়িতে অবস্থান করে ইউপি নির্বাচন করে সাধারণ সদস্য (মেম্বার) পদে বিজয়ী হন। প্রায় ৪-৫ মাস আগে মামলার রায় ঘোষণার খবরে প্রশাসনিক কোনো অনুমতি না নিয়েই সৌদি আরবে চলে যান তিনি। মেম্বার কাউছার মাতুব্বর দেশে না থাকায় ৫ নম্বর ওয়ার্ডের প্রায় ৩ হাজারের বেশি বাসিন্দা বিভিন্ন সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

এ ব্যাপারে ৫নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা আব্দুর রাজ্জাক মাতুব্বর ও মিনারা বেগম বলেন, কাউছার মাতুব্বর নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই ঠিকমতো বাড়িতে থাকেন না। তাকে খুঁজে পেতে বেগ পেতে হয়। সর্বশেষ কয়েকমাস আগে তিনি সৌদি আরবে কাজের জন্য গিয়েছেন। মেম্বার না থাকায় আমাদের নানান সমস্যা হচ্ছে। নতুন একজন মেম্বার চেয়ে সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন তারা।

এ ব্যাপারে আটঘর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মো. শহিদুল ইসলাম জানান, তিন-চার মাসের বেশি সময় ধরে কাউছার মাতুব্বর পরিষদে আসেন না। শুনেছি তিনি বিদেশে আছেন। তার অনুপস্থিতিতে অনেক সময় নানা ধরনের অসুবিধায় পড়তে হয়।

এ ব্যাপারে ইউপি সদস্য (মেম্বার) কাউছার মাতুব্বরের স্ত্রী ইতি বেগম বলেন, পরিষদে তেমন কোনো কাজকর্ম নেই। তাই আমার স্বামী কাজের জন্য প্রবাসে গেছেন। তবে যেকোনো মুহূর্তে দেশে ফিরে আসতে পারেন। আমরা টাকা পয়সা খরচ করে মেম্বার হয়েছি, সম্ভব হলে এই দায়িত্বটা আমাকে দেন। আমি এলাকায় থেকে মানুষের সেবা করবো। সরকারি সকল নিয়ম কানুন মেনে চলবো।

আটঘর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শহিদুল হাসান খান (সোহাগ) বলেন, প্রথম থেকেই কাউছার মাতুব্বর পরিষদের কাজে সময় দেন না। সর্বশেষ তিনি কয়েক মাস আগে সৌদি আরবে কাজের জন্য গিয়েছেন। তার অনুপস্থিতিতে ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাজ করতে সমস্যা হচ্ছে।

এ বিষয়ে সালথা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আনিছুর রহমান বালী বলেন, আইন অনুযায়ী একজনের দায়িত্ব আরেকজনের পালনের কোনো সুযোগ নেই। কাউছার মাতুব্বরের অনুপস্থিতির বিষয়টি প্রমাণসহ জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। এখনও কোনো সিদ্ধান্ত পাওয়া যায়নি। মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত মোতাবেক পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

এন কে বি নয়ন/এফএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।