নজর কাড়ছে নুদারের হাতে লেখা দৃষ্টিনন্দন কোরআন

ইকবাল হোসেন মজনু ইকবাল হোসেন মজনু , নোয়াখালী
প্রকাশিত: ০৯:৫৫ এএম, ০৪ মার্চ ২০২৪

নয় বছর বয়সে নূরে জারিন নুদারের হাতে লেখা দৃষ্টিনন্দন কোরআন শরীফ দেখে বিস্মিত এলাকাবাসী। সে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বসুরহাট পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের আদর্শপাড়ার নুরুল হুদা মামুন ও শারমিন আক্তার দম্পতির মেয়ে।

২০২২ সালে নূরে জারিন নুদার স্থানীয় ইকরা আরাবিয়া মাদরাসায় চতুর্থ শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় ১০ মাস সময় নিয়ে তিন খণ্ডের এ কোরআন শরীফ লেখে। নুদারের বর্তমান বয়স ১১ বছর। সে এখন বসুরহাট পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের দারুল ইহসান গার্লস মাদরাসায় ষষ্ঠ শ্রেণিতে অধ্যয়নরত।

নুদারের বাবা নুরুল হুদা মামুন জাগো নিউজকে বলেন, চতুর্থ শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় সুন্দর আরবি হাতের লেখা দেখে তাকে কোরআন শরীফ লিখতে উদ্বুদ্ধ করি। এতে তাকে ৬০০ পৃষ্ঠা কাগজ ও ৫৫টি কলম কিনে দিই। পরে তার লেখা কোরআন ইকরা আরাবিয়া মাদরাসার শিক্ষক মুফতি মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল নোমান ভুলত্রুটি শুদ্ধ করে দেন।

নজর কাড়ছে নুদারের হাতে লেখা দৃষ্টিনন্দন কোরআন

তিনি আরও বলেন, নুদারের হাতে লেখা কোরআন তিনখণ্ডে বাঁধাই করে সংরক্ষণ করা হয়েছে। আমরা প্রচারের উদ্দেশ্যে নয়, শুধুমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য নুদারকে কোরআন লিখতে উৎসাহ দিয়েছি। এরইমধ্যে সে বেশ কয়েকটি পুরস্কারও পেয়েছে। তার উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চাই।

নুদারের মা শারমিন আক্তার জাগো নিউজকে বলেন, আমরা স্বামী-স্ত্রী স্কুল-কলেজে পড়েছি। কিন্তু দ্বীনি শিক্ষার জন্য নুদারকে মাদরাসায় ভর্তি করি। চতুর্থ শ্রেণিতে ওঠার পর তার হাতের লেখা দেখে কোরআন লিখতে উৎসাহ দিই। লেখার পর এখন অনেক আত্মীয়-স্বজন তার লেখা কোরআন শরীফ দেখতে আসেন। বিষয়টি আমাদের কাছে অনেক ভালো লাগে।

ইকরা আরাবিয়া মাদরাসার শিক্ষক মুফতি মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল নোমান জাগো নিউজকে বলেন, নুদার অত্যন্ত মেধাবী একজন ছাত্রী। এ বয়সে তার এমন প্রতিভা দৃষ্টান্তের দাবি রাখে। আমি সাধ্যমতো তাকে সহযোগিতা করার চেষ্টা করেছি। নুদারের মতো অন্য শিক্ষার্থীরা কোরআন লেখায় এগিয়ে এলে তাদেরও সার্বিক সহযোগিতা করা হবে।

নজর কাড়ছে নুদারের হাতে লেখা দৃষ্টিনন্দন কোরআন

নূরে জারিন নুদারের সহপাঠী লামিয়া বলেন, নূরে জারিন নুদারের মতো আমরাও ভালো কিছু করতে চাই। সে খুব ভালো। সবার সঙ্গে সুন্দর করে কথা বলে। তার লেখা দৃষ্টিনন্দন কোরআন ছুঁয়ে দেখছি। অনেক ভালো লেগেছে।

দারুল ইহসান গার্লস মাদরাসার গণিতের শিক্ষক রাবেয়া বসরী জাগো নিউজকে বলেন, ক্লাসে নুদার অন্যদের থেকে আলাদা। সে অত্যন্ত মেধার পরিচয় দেয়। নুদারকে ধন্যবাদ যে সে এ বয়সে আমাদের ভালো লাগার পবিত্র কোরআন শরীফ হাতে লিখেছে। তার বাবা-মা ও সহযোগিতাকারী শিক্ষককেও ধন্যবাদ।

নজর কাড়ছে নুদারের হাতে লেখা দৃষ্টিনন্দন কোরআন

ওই মাদরাসার আরবি শিক্ষক আলী হোসাইন মাহমুদ জাগো নিউজকে বলেন, যে বয়সে বাচ্চারা মোবাইল ফোন নিয়ে ব্যস্ত থাকে, ঠিক সেই বয়সে মেধাবী ছাত্রী নুদারের হাতে লেখা কোরআন সবাইকে মুগ্ধ করেছে। আমি তার জন্য দোয়া করি। সে যেন ভবিষ্যতে আরও অনেক বড় কিছু করতে পারে।

jagonews

কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আনোয়ার হোসাইন পাটোয়ারি জাগো নিউজকে বলেন, বিষয়টি আপনার মাধ্যমে জেনেছি। খোঁজ নিয়ে ওই ছাত্রীকে সার্বিক সহযোগিতা করা হবে।

এফএ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।