গাজীপুর
বঙ্গবন্ধুর গানম্যানের পরিবারের কাছে টাকা দাবি, ২ পুলিশ প্রত্যাহার
বঙ্গবন্ধুর গানম্যানের পরিবারের কাছে টাকা দাবি করায় গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের গাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ও এএসআইকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার তাদের পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করেন।
তারা হলেন, গাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহ আলম ও সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) আল আমিন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের গানম্যান ও দেহরক্ষী বীর মুক্তিযোদ্ধা মৃত মোহাম্মদ ইসলামের পরিবার গাজীপুর মহানগরীর গাছা থানার বাদশা মিয়া স্কুল রোড এলাকায় জমি কিনে বসবাস করে আসছেন। পাঁচ মাস আগে মহানগরীর মোগরখাল এলাকার আব্দুল মান্নানের কাছ থেকে ২৫ লাখ টাকায় ৮ শতাংশ জমি কিনেন বঙ্গবন্ধুর দেহরক্ষী মোহাম্মদ ইসলামের ছেলে মো. আ. জলিল। ২৫ লাখ টাকার মধ্যে ওই জমি নগদ সাড়ে ৯ লাখ টাকা পেয়ে বাকি ১৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা বাকি রেখে জমির রেজিস্ট্রি করে নেন। কথা ছিল ২-৩ মাস পর জমির বাকি ১৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা পরিশোধ করবেন। কিন্তু মো. আব্দুল জলিল অন্য আরেকটি জমি বিক্রি করে ওই টাকা পরিশোধের কথা থাকলেও তিনি ওই জমি বিক্রি করতে না পেরে জমির বাকি টাকা নির্ধারিত সময়ে পরিশোধ করতে পারেননি। এনিয়ে জমি বিক্রেতার সাথে মনোমালিন্য হলে একটি উকিল নোটিশ পাঠান আব্দুল মান্নান। চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে জমি বিক্রেতা আব্দুল মান্নান গাছা থানায় মো. আব্দুল জলিলকে বাদী করে একটি অভিযোগ দেন।
মো. আব্দুল জলিল জানান, অভিযোগটি তদন্ত করতে ১১মার্চ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তাদের বাড়িতে সাদা পোশাকে যান গাছা থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) আল আমিন। বাড়িতে যাওয়ার পরই এএসআই আল আমিন হন্য হয়ে তাকে খুঁজতে থাকে। ঠিক ওই সময়ে তিনি বাথরুমে থাকায় তার ছেলে এগিয়ে গিয়ে পুলিশের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে ছেলের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন তিনি। পরে তিনি বেরিয়ে আসলে তার সঙ্গেও বাজে আচরণ ও গালিগালাজ করা হয়। পরে তাদের মধ্যে আলাপ আলোচনার একপর্যায়ে এএসআই আল আমিন তার কাছে ২৫ হাজার টাকা দাবি করেন। টাকা দিলে তিনি জমি বিক্রেতার কাছ থেকে কয়েক মাসের সময় নিয়ে দিবেন বলে জানান। কিন্তু টাকা দিতে অস্বীকার করায় তার সঙ্গে আরও খারাপ ব্যাবহার করা হয়।
তিনি আরও জানান, তাকে গাছা থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। গাছা থানার নিচ তলায় নারী ও শিশু হেল্প ডেস্কে বসিয়ে রেখে তার সাথে বাজে ব্যবহার করা হয়। এক পর্যায়ে জলিলের গায়ে হাত তুলেন এএসআই আল আমিন।
বিষয়টি তাৎক্ষণিক ভাবে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ আলমকে জানালে তিনি কোনো প্রতিকার না করে তাকে পাওনাদারের টাকা দ্রুত পরিশোধ করতে বলেন। পরদিন ১২ মার্চ ব্যবসায়ী মো. আব্দুল জলিল বিষয়টি গাজীপুর মহানগর পুলিশের কমিশনার মাহাবুব আলমকে মৌখিক ভাবে এবং পরে লিখিত ভাবে অভিযোগ করেন।
এ বিষয়ে মো. আব্দুল জলিল বলেন, আমি আত্মবিশ্বাস নিয়ে পুলিশ কমিশনারের কাছে অভিযোগ দিয়েছি। তিনি এর সঠিক বিচার করেছেন।
ওই উপ-পুলিশ কমিশনার জানান, ওই ব্যবসায়ীর অভিযোগ তদন্ত করে প্রাথমিকভাবে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় বৃহস্পতিবার গাছা থানার ওসি মো. শাহ আলম এবং সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) আল আমিনকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করেন।
এম এ আই/আরএইচ/এএসএম