এসএসসি

দেশসেরার মুকুট পুনরুদ্ধার করেছে যশোর বোর্ড

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি যশোর
প্রকাশিত: ০৩:৪০ পিএম, ১২ মে ২০২৪

এসএসসি পরীক্ষায় পাসের হারে দেশসেরা যশোর বোর্ড। এ বছর এসএসসির ফলাফলে যশোর বোর্ডের পাসের হার ৯২ দশমিক ৩৩। যা দেশের সব শিক্ষাবোর্ডের মধ্যে সর্বোচ্চ। ২০২২ সালেও ৯৫ দশমিক ১৭ শতাংশ পাসের হার নিয়ে দেশসেরা হয়েছিল এ বোর্ড। তবে গত বছর পাসের হার ৯ শতাংশ করে ৮৬ দশমিক ১৭ ভাগে নেমে যাওয়ায় শীর্ষস্থান হাতছাড়া হয়েছিল। তবে জিপিএ-৫ প্রাপ্তি গত বছরের তুলনায় সামান্য বেড়েছে। এ বছর জিপিএ-৫ পেয়েছে ২০ হাজার ৭৬১ জন; গতবছর এই সংখ্যা ছিল ২০ হাজার ৬১৭।

রোববার (১২ মে ) প্রকাশিত ফলাফলে যশোর বোর্ডের এ চিত্র উঠে এসেছে। বোর্ড কর্তৃপক্ষ বলছে, শিক্ষক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের যথাযথ নজরদারি এবং অভিভাবকদের সহযোগিতায় শিক্ষার্থীরা যথাযথ প্রস্তুতি নিতে পারায় এ ফলাফল অর্জন সম্ভব হয়েছে।

যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ড. বিশ্বাস শাহিন আহম্মদ জানান, এ বছর যশোর বোর্ডে এক লাখ ৬০ হাজার ৯২৬ জন শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়। এদের মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছে এক লাখ ৪৮ হাজার ৫৭৭ জন। পাসের হার ৯২ দশমিক ৩৩ ভাগ। পাসের হারের এ ফলাফলে যশোর বোর্ড এবার দেশসেরা অবস্থান ফিরে পেয়েছে।

এরআগে ২০২২ সালেও দেশসেরা হয়েছিল যশোর বোর্ড। এছাড়া এ বছর জিপিএ-৫ পেয়েছে ২০ হাজার ৭৬১ জন। এদের মধ্যে ছাত্রী ১১ হাজার ৪৩১ ও ছাত্র ৯ হাজার ৩৩০ জন।

যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, গত বছর (২০২৩ সালে) যশোর বোর্ডে এক লাখ ৫৫ হাজার ৭৫৯ জন শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিল। এদের মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছিল এক লাখ ৩৪ হাজার ২১৩ জন। পাসের হার ছিল ৮৬ দশমিক ১৭ ভাগ। জিপিএ-৫ পেয়েছিল ২০ হাজার ৬১৭ জন। এদের মধ্যে ছাত্রী ১১ হাজার ৩৭০ ও ছাত্র ৯ হাজার ২৪৭ জন।

২০২২ সালে যশোর বোর্ডে এক লাখ ৬৯ হাজার ৫০১ জন শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিল। এদের মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছিল এক লাখ ৬১ হাজার ৩১৪ জন। পাসের হার ছিল ৯৫ দশমিক ১৭ ভাগ। জিপিএ-৫ পেয়েছিল ৩০ হাজার ৮৯২ জন। এ ফলাফলে দেশসেরা হয়েছিল যশোর। এবারও দেশসেরা হলেও ২০২২ সালের পাসের হারকে অতিক্রম করতে পারেনি।

২০২১ সালের সংক্ষিপ্ত সিলেবাস ও পরীক্ষায় যশোর বোর্ডে এক লাখ ৭৮ হাজার ৭৯৫ জন শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিল। এদের মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছিল এক লাখ ৬৬ হাজার ৪৩৯ জন। পাসের হার ছিল ৯৩ দশমিক ৯ ভাগ। জিপিএ-৫ পেয়েছিল ১৬ হাজার ৪৬১ জন।

২০২০ সালে যশোর বোর্ডে এক লাখ ৬০ হাজার ৬৩৫ জন শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিল। এদের মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছিল এক লাখ ৪০ হাজার ২৪৩ জন। পাসের হার ছিল ৮৭ দশমিক ৩১ ভাগ। জিপিএ-৫ পেয়েছিল ১৩ হাজার ৭৬৪ জন।

২০১৯ সালে যশোর বোর্ডে এক লাখ ৮২ হাজার ৩১০ জন শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিল। এদের মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছিল এক লাখ ৬৫ হাজার ৬৮৮ জন। পাসের হার ছিল ৯০ দশমিক ৮৮ ভাগ। জিপিএ-৫ পেয়েছিল ৯ হাজার ৯৪৮ জন।

২০১৮ সালে যশোর বোর্ডে এক লাখ ৮৩ হাজার ৫৮৫ জন শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে উত্তীর্ণ হয়েছিল এক লাখ ৪০ হাজার ৬৯৯ জন। পাসের হার ছিল ৭৬ দশমিক ৬৪ ভাগ। জিপিএ-৫ পেয়েছিল ৯ হাজার ৩৯৫ জন।

২০১৭ সালে যশোর বোর্ডে এক লাখ ৫৩ হাজার ৬৭৩ জন শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিল। এদের মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছিল এক লাখ ২২ হাজার ৯৯৫ জন। পাসের হার ছিল ৮০ দশমিক ৪ ভাগ। জিপিএ-৫ পেয়েছিল ৬ হাজার ৪৬০ জন।

২০১৬ সালে যশোরে বোর্ডে এক লাখ ৪৮ হাজার ৬৪ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে এক লাখ ৩৫ হাজার ৯৯৪ জন উত্তীর্ণ হয়েছিল। পাসের হার ছিল ৯১ দশমিক ৮৫ ভাগ। জিপিএ-৫ পেয়েছিল ৯ হাজার ৪৪৪। ২০১৬ সালের এ পাসের হার যশোর বোর্ডের হিসেবে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ছিল। এ বছর পাসের হার এর চেয়ে বেশি হওয়ায় সেটি তৃতীয় স্থানে নেমে গেছে।

যদিও ২০১৫ সালে যশোর বোর্ডে পাসের হার বেশ কম ছিল। ওই বছর এক লাখ ২৭ হাজার ৬৮৫ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছিল এক লাখ ৭ হাজার ৯০৮ জন। পাসের হার ছিল ৮৪ দশমিক ৫১ ভাগ। আর জিপিএ-৫ পেয়েছিল সাত হাজার ১৯৮ জন শিক্ষার্থী।

এরআগে ২০১৪ সালে এ বোর্ড থেকে এক লাখ ২৯ হাজার ২২৮ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে এক লাখ ১৯ হাজার ২২৫ জন উত্তীর্ণ হয়েছিল। পাসের হার ছিল ৯২ দশমিক ২৬ ভাগ। ২০১৪ সালে জিপিএ-৫ পেয়েছিল ১০ হাজার ৯৬৯ জন শিক্ষার্থী।

২০১৩ সালে যশোর বোর্ড থেকে এক লাখ ১৮ হাজার ৩২৭ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে এক লাখ ৯ হাজার ৬১৯ জন উত্তীর্ণ হয়েছিল। পাসের হার ছিল ৯২ দশমিক ৬৪ ভাগ। জিপিএ-৫ পেয়েছিল ৯ হাজার ১০১ জন শিক্ষার্থী।

এ বছর বিজ্ঞান বিভাগে ৪১ হাজার ৪৬৭ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে ৩৯ হাজার ৮৬৭ জন। পাসের হার ৯৬ দশমিক ১৪ ভাগ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৭ হাজার ৯৪৭৬ জন। জিপিএ-৫ প্রাপ্তির ক্ষেত্রে এগিয়ে আছে মেয়েরা। সর্বোচ্চ এ ফল অজর্নকারীদের মধ্যে ৮ হাজার ৮৪৮ জন ছাত্রী ও ৮ হাজার ৬২৮ জন ছাত্র।

বোর্ডে পাসের হারে বিজ্ঞানের পরেই রয়েছে ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ। এ বিভাগ থেকে ১৭ হাজার ৯৬৮ জন পরীক্ষায় অংশ নিয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে ১৬ হাজার ৯৮০ জন। পাসের হার ৯৪ দশমিক ৫০ ভাগ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ হাজার ৪৮ জন। এদের মধ্যে ছাত্রী ৭০০ ও ছাত্র ৩৪৮ জন।

মানবিক বিভাগ থেকে এক লাখ এক হাজার ৪৯১ জন পরীক্ষায় অংশ নিয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে ৯১ হাজার ৭৩০ জন। পাসের হার ৯০ দশমিক ৩৮ ভাগ। জিপিএ-৫ পেয়েছে দুই হাজার ২৩৭ জন। এদের মধ্যে ছাত্রী এক হাজার ৮৮৩ জন, ছাত্র ৩৫৪ জন।

যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ড. বিশ্বাস শাহিন আহম্মদ জানান, শিক্ষক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নজরদারি এবং অভিভাবকদের সহযোগিতায় শিক্ষার্থীরা সঠিকভাবে প্রস্তুতি নিতে পারায় এ ফলাফল অর্জন সম্ভব হয়েছে। বিশেষ করে যশোরে বোর্ডে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত প্রশ্নব্যাংকের মাধ্যমে প্রশ্ন হওয়ায় শিক্ষার্থীরা সেভাবেই গড়ে উঠেছে।

মিলন রহমান/আরএইচ/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।