সাতক্ষীরায় বিএনপি নেতাদের নেতৃত্বে সরকারি দীঘির মাছ লুট

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি সাতক্ষীরা
প্রকাশিত: ১১:৫৭ এএম, ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

সাতক্ষীরার শ্যামনগরে বিএনপি নেতাদের নেতৃত্বে ১৪ বিঘা আয়তনের কালিঞ্চি সরকারি দীঘি থেকে লক্ষাধিক টাকা মূল্যের মাছ লুটের অভিযোগ উঠেছে।

এ ঘটনায় অভিযোগ এসেছে স্থানীয় বিএনপির তিন নেতার নামে। তাদের মধ্যে একজন অভিযোগ স্বীকার করলেও বাকিরা তা অস্বীকার করেছেন।

শনিবার সকাল ছয়টার দিকে তাদের যোগসাজশে উপজেলার কালিঞ্চি গ্রামের প্রশান্ত, শাহিনুর ও সুকুমার নামের তিন ব্যক্তি জেলেদের নিয়ে জাল টেনে পুকুরের মাছ লুটে নেন বলে অভিযোগ।

লুটকৃত মাছের মধ্যে প্রায় ২২ কেজি ওজনের ভেটকিসহ রুই, মৃগেল, পাঙাশ ও কাতল মাছ ছিল বলেও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান।

কালিঞ্চি গ্রামের আব্দুল হামিদ লাল্টু জানান, শনিবার ভোর থেকে ১০/১২ জন জেলে নিয়ে কালিঞ্চি সরকারি দীঘিতে জাল টানতে শুরু করেন প্রশান্ত, সুকুমার ও শাহিন। স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যেয়ে মাছ ধরতে নিষেধ করলে তারা বিএনপি নেতা সোহরাব হোসেনের নির্দেশে মাছ ধরার কথা জানান।

দীঘি থেকে ধরা প্রায় সাত বস্তা মাছ তারা স্থানীয় সোনারমোড় মৎস্য আড়তে বিক্রি করেন বলেও জানান আব্দুল হামিদ।

একই এলাকার ৯ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আজগর আলী বুলু জানান, বহিরাগত জেলেদের নিয়ে সকাল থেকে মাছ লুট করা হয়। তিনটি মোটরসাইকেলে বস্তায় করে এসব মাছ সোনারমোড় আড়তে নিয়ে গেছে তারা। কয়েকটি ভেটকি মাছের ওজন ২০ কেজিরও ওপরে বলে তিনি দাবি করেন।

আশপাশের ছয় গ্রামের প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার মানুষ ওই দীঘির পানি ব্যবহার করে জানিয়ে তিনি বলেন, এভাবে জাল টেনে মাছ শিকারের ফলে স্থানীয়রা দীঘি থেকে খাওয়ার উপযোগী পানি নিতে পারছে না।

মাছ লুটের বিষয়ে জানতে চাইলে সুকুমার মন্ডল বলেন, সোহরাব মেম্বারের নির্দেশে তারা মাছ ধরেছেন। প্রায় পাঁচ বছর আগে তিনি (সোহরাব) এসব মাছ ছেড়েছিলেন বলেও জানান সুকুমার।

অভিযোগের বিষয়ে সোহরাব আলী জানান, অসুস্থতার কারণে তিনি বাড়িতে অবস্থান করছেন। তবে সাতক্ষীরা জেলা পরিষদের ওই দীঘি লিজ নেওয়া জনৈক রাকিব হোসেন ও ইউনিয়ন বিএনপি নেতা আব্দুল মজিদ আগে এসব মাছ সেখানে ছেড়েছিলেন বলে তিনি দাবি করেন।

এ নিয়ে আব্দুল মজিদ জানান, মাছ ধরার বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। সাতক্ষীরা জেলা ছাত্রদলের সাবেক নেতা রাকিব তাকে মাছ ধরার কথা জানিয়েছিলেন।

নিজেকে জেলা ছাত্রদলের সাবেক নেতা পরিচয় দিয়ে রাকিব হোসেন জানান, প্রাক্তন আওয়ামী লীগ নেতা গোলাম মোস্তফা মুকুল জেলা পরিষদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে তার ডাকের দীঘির মাছ লুটে নিয়েছিলেন। বাধ্য হয়ে তিনি তার ছাড়া মাছ এতদিন পর তুলে নিতে বাধ্য হয়েছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাতক্ষীরা জেলা পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা (চলতি দায়িত্ব) মো. খলিল হোসেন জাগো নিউজকে জানান, এভাবে মাছ ধরার কথা না। কাউকে ইজারা দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। এখনই তত্ত্বাবধায়ককে ঘটনাস্থলে পাঠিয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আহসানুর রহমান রাজীব/এমএইচআর/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।