ঘুরে দাঁড়িয়েছে শেয়ারবাজার

এক কার্যদিবস দরপতনের পর দেশের শেয়ারবাজারে আবার ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মিলেছে। সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবস সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) দাম বাড়ার তালিকায় বেশি প্রতিষ্ঠান থাকার পাশাপাশি বেড়েছে সবকটি মূল্যসূচক। সেইসঙ্গে বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে দাম বাড়ার তালিকায় বেশি প্রতিষ্ঠান থাকলেও অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) দাম কমার তালিকায় রয়েছে বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। এরপরও এ বাজারটিতেও বেড়েছে মূল্যসূচক। তবে লেনদেনের পরিমাণ কমেছে।
এর আগে গত সপ্তাহে লেনদেন হওয়া পাঁচ কার্যদিবসেই শেয়ারবাজারে ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মেলে। তবে চলতি সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস শেয়ারবাজারে দরপতন হয়। অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমার পাশাপাশি কমে সবকটি মূল্যসূচক। সেইসঙ্গে লেনদেনের পরিমাণও কমে।
এমন পরিস্থিতিতে সোমবার ডিএসইতে লেনদেন শুরু হওয়ার অল্প সময়ের মধ্যেই দাম কমার তালিকায় চলে আসে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। ফলে আবারও দরপতনের শঙ্কা পেয়ে বসে বিনিয়োগকারীদের। কিন্তু লেনদেনের শেষ দুই ঘণ্টায় বাজারে ক্রেতার আধিক্য দেখা যায়। সেইসঙ্গে কমে বিক্রির চাপ।
এতে দাম কমার তালিকা থেকে বেশি কিছু প্রতিষ্ঠান দাম বাড়ার তালিকায় চলে আসে। ফলে একদিনে দাম বাড়ার তালিকা বড় হয়, অন্যদিকে সবকটি মূল্যসূচক বেড়ে দিনের লেনদেন শেষ হয়। এমনকি ডিএসইতে ৯টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ার সর্বোচ্চ সীমাও স্পর্শ করে।
এ নয় প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- সোনালি পেঁপার, পেপার প্রসেসিং, আলহাজ্ব টেক্সটাইল, পাওয়ার গ্রীড, খুলনা প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং, ইনটেক লিমিটেড, খুলনা পাওয়ার এবং কাট্টালী টেক্সটাইল। লেনদেনের একপর্যায়ে এ প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ার দিনের সর্বোচ্চ দামে বিপুল ক্রয় আদেশ আসে। বিপরীতে শূন্য হয়ে পড়ে বিক্রয় আদেশের ঘর।
দাম বাড়ার ক্ষেত্রে এ প্রতিষ্ঠানগুলোর দাপট দেখানোর দিনে ডিএসইতে সবমিলিয়ে ১৬৬ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার তালিকায় স্থান হয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৬৫টির। এছাড়া ৭০টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৮ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ১৭৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৫ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ১৪৯ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০ কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় দশমিক ৩৮ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৯১২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
দিনভর ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৪২০ কোটি ৬৫ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৩৭৪ কোটি ১০ লাখ টাকা। সে হিসাবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন বেড়েছে ৪৬ কোটি ৫৫ লাখ টাকা।
এ লেনদেনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে বিচ হ্যাচারির শেয়ার। টাকার অঙ্কে কোম্পানিটির ৯ কোটি ৮৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা বিডি থাই অ্যালুমিনিয়ামের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৮ কোটি ১৯ টাকার। এছাড়া ৮ কোটি ১৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ।
ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- ইস্টার্ন হাউজিং, ওরিয়ন ইনফিউশন, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন, এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজ, আরডি ফুড, মালেক স্পিনিং এবং এনার্জি প্যাক পাওয়ার জেনারেশন।
অন্য শেয়ারবাজার সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে এক পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২১০ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৮৩টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৮৬টির এবং ৪১টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ৩ কোটি ৬৫ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৫ কোটি ৩০ লাখ টাকা।
এমএএস/এমএএইচ/