এক টাকা কম আসুক করদাতার মুখে হাসি ফুটুক
কর আদায়ের ক্ষেত্রে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে আরও মানবিক ও করদাতাবান্ধব হওয়ার তাগিদ দিয়েছেন অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এমএ মান্নান। তিনি বলেছেন, আপনারা (এনবিআর) আইন প্রয়োগ করবেন, কিন্তু আইন যাতে হাসির মধ্য দিয়ে প্রয়োগ করা হয়, সেটা খেয়াল রাখবেন। এনবিআর রাজস্ব আহরণে চাপে আছে। কিন্তু রাজস্ব আহরণে সৌজন্যতাবোধ, দয়া, ভ্রাতৃত্ববোধ যেন দেখানো হয়, তাতে যেন কোনো ঘাটতি না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
মঙ্গলবার সেগুনবাগিচায় এনবিআর সম্মেলন কক্ষে ‘জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের নিরাপত্তা বিষয়ক অংশীদারিত্বমূলক সংলাপে’ প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন প্রতিমন্ত্রী।
এম এ মান্নান বলেন, যদি কর আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা থেকে এক টাকা কমও পাই সমস্যা নেই। এতে যদি করদাতাদের হাসির পরিমাণ বৃদ্ধি পায়, জনগণের সঙ্গে সম্প্রীতি, বন্ধুত্বের পরিমাণ বৃদ্ধি পায় তবে তা হবে এনবিআরের অনেক অনেক গুণ বেশি অর্জন।
তার ভাষায়, মুখে হাসি আর কম ব্যথা দিয়ে কীভাবে রাজস্ব আহরণ করা যায় সে চেষ্টা করতে হবে। সেক্ষেত্রে কর্মকর্তাদের পেশাদারিত্ব আর মুন্সিয়ানা দেখাতে হবে। এনবিআরের কাছে আমাদের আশা থাকবে রাজস্ব আহরণের ক্ষেত্রে সবচেয়ে কম কঠোরতা দেখিয়ে আমরা রাজস্ব আহরণ করব।
একশ অপরাধী বের হয়ে যাক তবুও যেন একজন নিরপরাধী ব্যক্তি শাস্তি না পায়- এমন কথারও উদাহরণ দেন তিনি।
সংলাপে সভাপতির বক্তব্যে এনবিআর চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমান বলেন, আমরা পরপর তিনবার রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা শুধু অর্জনই করিনি, অতিক্রমও করেছি। আমাদের সামনে বেশকিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে। আমাদের দক্ষতা ও জনবল বাড়াতে হবে। এ মূহূর্তে নিরাপত্তার চ্যালেঞ্জটা আমাদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের সহকর্মীরা যখন মাঠ পর্যায়ে কাজ করে বিশেষ করে কাস্টমস বিভাগের কর্মকর্তারা সীমান্ত এলাকায় দিবারাত্রি কাজ করতে হয়, যারা দীর্ঘদিন আয়কর ফাঁকি দিয়ে আসছে তাদের করের আওতায় আনতে ঝুঁকি নিতে হয়। এক্ষেত্রে বেশ কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে। এনবিআরের একজন সদস্য দুষ্কৃতকারীদের গুলিতে আহত হয়েছেন। এ ছাড়া কয়েকটি অপারেশনে কিছু সহকর্মী আক্রান্ত হয়েছেন। এসব ক্ষেত্রে এখন সময়ের দাবি এনবিআর কর্মকর্তা-কর্মচারিদের নিরাপত্তা বিধান।
সংলাপে আরও উপস্থিত ছিলেন- অতিরিক্ত আইজিপি মো. মোখলেসুর রহমান, বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল আলী আহমেদ খান, বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর উপমহাপরিচালক দিলীপ কুমার বিশ্বাস, বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের উপমহাপরিচালক কমল অরিন্দা, বিজিবির অতিরিক্ত মহাপরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল হাসনাত, ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার বজলুর করীম চৌধুরী, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের মহাপরিচালক জামাল উদ্দিন আহমেদ।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. মইনুল খান।
এমএ/এনএফ/এমএস