জনসমুদ্র মেলা প্রাঙ্গণ

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৮:৩১ পিএম, ২৬ জানুয়ারি ২০১৮

দেখতে দেখতে শেষ সময় ঘনিয়ে এসেছে ২৩তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার। ইতোমধ্যে পেরিয়ে গেছে মেলার ২৫টি দিন। মেলার আর বেশিদিন বাকি না থাকায় আজ মেলামাঠে নামে রাজধানী ও আশপাশের অঞ্চলের বাসিন্দাদের ঢল। সেই ঢলে একপ্রকার জনসমুদ্রে পরিণত হয়ে মেলা প্রাঙ্গণ। হিসাব মতো এটিই এবারের মেলার শেষ শুক্রবার।

মেলার গেটে দায়িত্বপালনকারী এবং ভেতরে অংশ নেয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মীদের তথ্য মতে, মেলার শেষ সময়ে এসে বেড়েছে ক্রেতা-দর্শনার্থীর সংখ্যা। গতকাল সিংভাগ প্রতিষ্ঠানের স্টলে ছিল ক্রেতা-দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড়। তাদের এমন উপস্থিতিতে স্টলগুলোতে বিকিকিনি জমজমাট হয়ে ওঠে।

অনেক স্টলে এমনকি মেলার ফাঁকা স্থানগুলোতেও তিল ধারণের জায়গা ছিল না। ফলে মেলার ভেতরে ক্রেতা-দর্শনার্থীদের চলাচলে বেশ সমস্যা হয়। অবস্থা এমন দাঁড়ায় ধাক্কাধাক্কি ছাড়া কোথাও যাওয়া অসম্ভব হয়ে পড়ে।

বিক্রেতারা জানান, মেলার শেষ সময়ে এসে ক্রেতা-দর্শনার্থীর সংখ্যা যথেষ্ট বেড়েছে। বেড়েছে পণ্য বিক্রির পরিমাণও। তবে মেলার প্রথমদিকের চিত্র এমন ছিল না। প্রথমদিকে দর্শনার্থী-ক্রেতার উপস্থিতি ছিল একেবারেই কম।

মেলা প্রাঙ্গণে অবস্থান করে দেখা যায়, মেলার গেট খুলে দেয়ার পরপরই মেলা প্রাঙ্গণে প্রবেশ করতে থাকেন দর্শনার্থীরা। সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়তে থাকে উপস্থিতির সংখ্যাও। দুপুরের পর লোকসমাগমের ঢল নামে। দেখতে দেখতে এক প্রকার জনসমুদ্রে পরিণত হয় মেলা প্রাঙ্গণ। বিকেলের দিকে তিল ধারণের ঠাঁই খুঁজে পাওয়াই দুষ্কর হয়ে পড়ে।

fair

ক্রেতা-দর্শনার্থীদের এমন উপস্থিতির প্রভাব পড়ে গাড়ি পার্কিংয়ের স্থানেও। অনেকে গাড়ি পার্কিংয়ের স্থান না পেয়ে ফিরে যান। যারা গাড়ি পার্কিংয়ের সুযোগ পেয়েছেন তাদেরও দীর্ঘসময় অপেক্ষা করতে দেখা যায়।

মেলার ইজারাদার প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্টরা বিকেলে জানান, পর্যাপ্ত ক্রেতা-দর্শনার্থীর উপস্থিতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। আগের শুক্রবারগুলোতেও দর্শনার্থীদের ভিড় ছিল। তবে এদিন সব রেকর্ড ভঙ্গ করবে। আশা করছি টিকিট বিক্রির সংখ্যা দুই লাখ ছাড়িয়ে যাবে।

এদিকে মেলায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের পণ্য কিনে নগদ ছাড়সহ বিভিন্ন পুরস্কার পাচ্ছেন ক্রেতারা। মেলার শেষ সময়ে এসে ছাড়ের পরিমাণ আরও বেড়ছে। ফলে মেলা থেকে পণ্য কিনতে ক্রেতাদের আগ্রহেরও শেষ নেই। তবে প্রথমদিকের মতো এদিনও বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোর তুলনায় দেশীয় প্যাভিলিয়নগুলোতে ক্রেতাদের ভিড় বেশি।

মেলার ১৪ নম্বর প্রিমিয়ার প্যাভিলিয়নে খেলনা ও গৃহস্থালিসামগ্রী বিক্রি করছে বেস্ট বাই। প্যাভিলিয়নটির ইনচার্জ মো. শোহেব আহমেদ বলেন, আগে আমরা পণ্যে ১০ শতাংশ পর্যন্ত নগদ ছাড় দিয়েছি। এখন ক্রেতারা ৫৫ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় পাচ্ছেন। এছাড়া মেলায় নতুন নতুন পণ্যও আনা হয়েছে। ঘর সাজানোর জন্য বিভিন্ন ধরনের ফুল বিক্রি হচ্ছে। এসব ফুল বিদেশ থেকে আনা।

বিক্রির পরিস্থিতি সম্পর্কে তিনি বলেন, শেষ সময়ে এসে খুব ভালো বিক্রি হচ্ছে। আমাদের পণ্যের মান ভালো, যে কারণে ক্রেতারা সহজেই পছন্দ করছেন। প্রথমদিকের মতো এখনো ক্রাউন টুল মেলার ক্রেতারা বেশি পছন্দ করছেন।

থ্রি-পিস বিক্রির প্রতিষ্ঠান জান্নাত এন্টারপ্রাইজের ম্যানেজার মো. জুয়েল বলেন, ছুটির দিনে বিক্রি ভালো। তবে আপনি যদি প্রত্যেক শুক্রবার পোলাও ভাত খান, আর বাকি ছয়দিন না খেয়ে থাকেন কেমন লাগবে? আমাদের অবস্থা হয়েছে এমন। শুক্রবারে বিক্রি ভালো, বাকি দিনগুলোতে বিক্রি নেই। সার্বিকভাবে এবার বিক্রির পরিস্থিতি খুব খারাপ।

মেলা থেকে আরএফএল পণ্য কেনা মিরপুরের রোকসানা বলেন, মেলায় আসি আসি করে এতোদিন আসা হয়নি। মেলার তো আর বেশি সময় নেই। সামনে আর শুক্রবারও পাওয়া যাবে না। তাই চলে এলাম। আরএফএল প্যাভিলিয়ন থেকে বাসার প্রয়োজনীয় কিছু পণ্য কিনেছি। ছেলে-মেয়ের জন্য আরো কিছু পণ্য কিনে সন্ধ্যার আগেই বের হয়ে যাবো।

এমএএস/এমএআর/এমআরএম/আইআই

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।