ঈদ-গরমে বেড়েছে ফ্রিজ বিক্রি

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৭:১৩ পিএম, ২১ এপ্রিল ২০২২

অডিও শুনুন

ঈদ আসলেই ফ্রিজের চাহিদা বেড়ে যাওয়া কয়েক বছর ধরে অনেকটা রীতিতে পরিণত হয়েছে। এবারও এর ব্যতিক্রম নয়। আসন্ন ঈদুল ফিতরের আগে রাজধানীসহ সারাদেশে ফ্রিজ বিক্রি বেড়েছে কয়েকগুণ। ঈদের সঙ্গে গরমও এই বিক্রি বাড়ার পেছনে ভূমিকা রেখেছে।

ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, রোজার শুরু থেকেই এবার ফ্রিজের বিক্রি বেড়েছে। স্বাভাবিক সময়ে যে ফ্রিজ বিক্রি হয়, এখন সেটা বেড়ে প্রায় তিনগুণ হয়েছে। ফ্রিজের এই বাড়তি চাহিদা আগামী কোরবানির ঈদ পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।

তারা বলছেন, যে কোনো সময়ের তুলনায় কোরবানির ঈদের আগে ফ্রিজের চাহিদা বেশি থাকে। সে কারণে এখন থেকেই কোরবানি ঈদকেন্দ্রিক প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন ব্যবসায়ীরা। তবে এবারের রোজার ঈদের আগেও ফ্রিজ বেশ ভালো বিক্রি হচ্ছে।

ঈদ উপলক্ষে দেশের ইলেকট্রনিক্স রিটেইল চেইন ভিশন এম্পোরিয়াম নিয়ে এসেছে ‘Full-ঝুড়ি মেগা অফার সিজন-৪’ ক্যাম্পেইন। এ ক্যাম্পেইনের আওতায় ক্রেতারা ভিশনের যে কোনো ফ্রিজ কিনলেই পাচ্ছেন ১৭ সেটের মেগা গিফট বক্স। এর সঙ্গে আছে দেশব্যাপী ফ্রি হোম ডেলিভারি।

ঈদ আসলেই ফ্রিজের চাহিদা বেড়ে যাওয়া কয়েক বছর ধরে অনেকটা রীতিতে পরিণত হয়েছে। এবারও এর ব্যতিক্রম নয়। আসন্ন ঈদুল ফিতরের আগে রাজধানীসহ সারা দেশে

গ্রাহকদের চাহিদা ও সামর্থ্যের কথা চিন্তা করে নন-ফ্রস্ট, গ্লাসডোর টেকনোলজি, ইনসাইড লার্জ স্পেস ডিপ ফ্রিজসহ বিভিন্ন রং ও ডিজাইনের ৩০০টিরও বেশি মডেলের ফ্রিজ নিয়ে এসেছে প্রতিষ্ঠানটি। এর মধ্যে ঈদ উপলক্ষে এসেছে আটি নতুন মডেল। রাজধানী ঢাকাসহ দেশব্যাপী থাকা ভিশন এম্পোরিয়ামের প্রতিটি আউটলেটেই এসব ফ্রিজ পাওয়া যাবে। ৫০ থেকে ৫৫৯ লিটার পর্যন্ত এসব ফ্রিজ পাওয়া যাবে ১২ হাজার ৫০০ থেকে এক লাখ টাকার মধ্যে।

‘Full-ঝুড়ি মেগা অফার সিজন-৪’ ক্যাম্পেইনটি ক্রেতাদের বেশ আকৃষ্ট করছে। খিলগাঁও ভিশন এম্পোরিয়াম আউটলেট থেকে ফ্রিজ কেনেন আরমান। জাগো নিউজকে তিনি বলেন, আমাদের গ্রামের বাড়িতে ভিশনের একটি ফ্রিজ আছে। ফ্রিজটির সার্ভিস বেশ ভালো। ঢাকার বাসার জন্য একটি ফ্রিজ কিনতে বেশ কয়েকটি কোম্পানির শোরুম ঘুরে দেখেছি। ভিশনের একটি মডেল আমার খুব পছন্দ হয়েছে। দাম বাজেটের মধ্যে থাকায় কিনে নিয়েছি। সঙ্গে ১৭ সেটের মেগা গিফট বক্স পেয়েছি। এই গিফট বক্স পেয়ে আমি বেশ খুশি।

যোগাযোগ করা হলে ভিশন রেফ্রিজারেটরের সহকারী মহাব্যবস্থাপক মোহিত চক্রবর্তী জাগো নিউজকে বলেন, রোজা ও কোরবানি এই দুই ঈদে আমাদের ফ্রিজ বিক্রি অনেক বেড়ে যায়। এবারও আমরা ক্রেতাদের খুব ভালো সাড়া পাচ্ছি। স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় এখন আমাদের বিক্রি দ্বিগুণ বেড়েছে। ক্ষেত্রবিশেষে আমরা ডেলিভারি দিয়ে পারছি না।

তিনি বলেন, এখন আমাদের অফারের মধ্যে ‘Full-ঝুড়ি মেগা অফার সিজন-৪’ চলছে। এর আগে সিজন-৩ ছিল। এই অফারে আমরা ক্রেতাদের কাছ থেকে খুব ভালো সাড়া পাচ্ছি। যে কারণে সিজন-৪ নিয়ে আসা হয়েছে। এই অফারের পাশাপাশি আমরা ক্রেতাদের বিভিন্ন ধরনের সুবিধাও দিচ্ছি। আমাদের ভিশন এম্পোরিয়ামের আউটলেট থেকে ক্রেতারা ফ্রিজ কিনলে ফ্রি হোম ডেলিভারি সুবিধা পাচ্ছেন। এছাড়া ১৮টি ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডে শূন্য শতাংশ সুদে ১২ মাস কিস্তিতে কেনার সুযোগ পাচ্ছেন ক্রেতারা। একই সঙ্গে আমাদের আউটলেট থেকে কোনো বাড়তি খরচ বা সুদ ছাড়াই ৯ মাসের কিস্তিতেও ফ্রিজ কিনতে পারছেন ক্রেতারা।

ঈদ উপলক্ষে নানা রং ও ডিজাইনের বেশকিছু নতুন ফ্রিজ নিয় এসেছে ওয়ালটন। এ প্রতিষ্ঠানটির দায়িত্বশীলরাও জানিয়েছেন, এবারের রোজার ঈদকেন্দ্রিক ফ্রিজের বিক্রি বহুগুণ বেড়ে গেছে।

ঈদ আসলেই ফ্রিজের চাহিদা বেড়ে যাওয়া কয়েক বছর ধরে অনেকটা রীতিতে পরিণত হয়েছে। এবারও এর ব্যতিক্রম নয়। আসন্ন ঈদুল ফিতরের আগে রাজধানীসহ সারা দেশে

এ বিষয়ে ওয়ালটনের চিফ মার্কেটিং অফিসার ফিরোজ আলম জাগো নিউজকে বলেন, প্রথম রোজা থেকেই এবার আমরা ফ্রিজের বেশ ভালো ক্রেতা পাচ্ছি। গড়ে প্রতিদিন ১২-১৪ হাজার ফ্রিজ বিক্রি হচ্ছে। স্বাভাবিক সময়ে গড়ে প্রতিদিন ৩-৪ হাজার ফ্রিজ বিক্রি হয়। এবারের রোজার ঈদ উপলক্ষে আমরা ৬০-৬৫ রং ও ডিজাইনের নতুন ফ্রিজ এনেছি।

তিনি বলেন, ফ্রিজ সব থেকে বেশি বিক্রি হয় কোরবানির ঈদে। সে কারণে আগামী কোরবানির ঈদকেন্দ্রিক আমরা প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করে দিয়েছি। আগামী কোরবানির ঈদের আগেই আমাদের প্রায় ২০০ নতুন ধরনের ফ্রিজ আসবে। বর্তমানে আমাদের যে ফ্রিজ আছে সেগুলো ১২ হাজার ৯৯০ টাকা থেকে ৯৯ হাজার টাকার মধ্যে। আমরা এক লাখ ৩০ হাজার টাকা দামের উন্নত মানের একটি ফ্রিজ আনতে যাচ্ছি। আগামী কোরবানির ঈদের আগেই এটি বাজারে আনা সম্ভব হবে বলে আশা করছি।

ফিরোজ আলম আরও বলেন, মধ্যবিত্ত পরিবারের সদস্যরা এখন ফ্রিজ বেশি কিনছেন। ২৫ থেকে ৩৫ হাজার টাকার মধ্যে থাকা ফ্রিজ এখন সব থেকে বেশি বিক্রি হচ্ছে।

সিঙ্গারের ঢাকা জেলা ব্যবস্থাপক মো. জাহিদুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, কিছু সুবিধা সংযুক্ত করে সম্প্রতি আমরা নতুন ফ্রিজ নিয়ে এসেছি। এ কারণে আমাদের বিক্রি ভালোই বেড়েছে। বৈশ্বিক দাম বাড়ার কারণে আমরা ফ্রিজে দাম একটু বাড়িয়েছি। তবে এই মাসে আমাদের যে লক্ষ্যমাত্রা ছিল, সে অনুযায়ী বেশ ভালো একটা গ্রোথ আছে।

তিনি বলেন, প্রথমদিকে মানুষ একটু বাজার পর্যবেক্ষণ করে। বিভিন্ন মার্কেট ঘোরাঘুরি করে এবং তারপর কেনে। এখন পর্যন্ত এই মাসে আমরা ৫৪ শতাংশ পর্যন্ত আমাদের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পেরেছি। আশা করছি, এ মাসে আমরা লক্ষ্যমাত্রার শতভাগ পূরণ করতে পারবো। আমরা নতুন আটি মডেলের ফ্রিজ এনেছি। এতে ক্রেতাদের বেশ ভালো সাড়া পাচ্ছি।

এমএএস/কেএসআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।