বে-লিজিং: অস্বাভাবিক আর্থিক হিসাব অনুসন্ধানে বিএসইসি

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৩:৫৯ পিএম, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২২

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত অ-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠান বে-লিজিং অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের ২০২১ সালের ব্যবসায় প্রান্তিকগুলোর আর্থিক হিসাবে অস্বাভাবিক উত্থান-পতনের কারণ অনুসন্ধানের উদ্যোগ নিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

এ লক্ষ্যে বৃহস্পতিবার (২২ সেপ্টেম্বর) তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিএসইসি। কমিটির সদস্যরা হলেন— উপ-পরিচালক কাজী মো. আল-ইসলাম, সহকারী পরিচালক মো. কাউসার আলী ও মো. আতিকুর রহমান। কমিটিকে আগামী ২০ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

কোম্পানিটির ৯ মাসের অনিরীক্ষিত ও ১২ মাসের নিরীক্ষিত আর্থিক হিসাবের মধ্যে কোনো জালিয়াতি হয়েছে কি না, ইনসাইডার ট্রেডিং আছে কি না, ওই অস্বাভাবিক আর্থিক হিসাবের কারণে শেয়ার দরে প্রভাব ও মার্কেট ম্যানুপুলেশন হয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে তদন্ত কমিটিকে।

২০২১ সালের লভ্যাংশ সংক্রান্ত বে-লিজিংয়ের পরিচালনা পর্ষদের সিদ্ধান্ত ১৫ সেপ্টেম্বর ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়। সেইসঙ্গে ২০২১ সালের আর্থিক চিত্রের সারসংক্ষেপও প্রকাশ করেছে কোম্পানিটি।

বে-লিজিংয়ের প্রকাশিত তথ্যানুযায়ী, ২০২১ সালের ব্যবসায় সমন্বিতভাবে কোম্পানিটি মোট ১৩ কোটি ৯১ লাখ টাকা লোকসান করেছে। এতে শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ৯৯ পয়সা। অথচ এ কোম্পানিটিই ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর শেষে প্রকাশিত আর্থিক প্রতিবেদনে তথ্য দেয়— ২০২১ সালের প্রথম নয় মাসের ব্যবসায় সমন্বিতভাবে মোট মুনাফা হয়েছে ৩৮ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। এতে শেয়ারপ্রতি মুনাফা দাঁড়ায় ২ টাকা ৭৫ পয়সা।

প্রথম নয় মাসের ব্যবসায় কোম্পানিটি যে মুনাফা দেখায় তার মধ্যে বছরের প্রথম তিন মাসে বা জানুয়ারি-মার্চ সময়ে দেখানো হয়, ৪ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। এপ্রিল-জুন সময়ের দেখানো হয় ৬ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। আর জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে দেখানো হয় ২৭ কোটি ৪৪ লাখ টাকা।

বছরের প্রথম নয় মাসে এমন বড় মুনাফা দেখানো কোম্পানিটির বছর শেষে লোকসান দেখানো অস্বাভাবিক বলছেন শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্টরা। এনিয়ে ১৫ সেপ্টেম্বর ‘৯ মাসে মুনাফা ৩৯ কোটি, বছর শেষে লোকসান দেখালো ১৪ কোটি’ শিরোনামে জাগো নিউজে একটি বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশ কর হয়।

এরপর বিষয়টি নিয়ে গত শনিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) ঢাকার হোটেল ওয়েস্টিনে সিএমজেএফ ও বিএমবিএ আয়োজিত ‘বাংলাদেশের পুঁজিবাজার: বর্তমান ও ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে আলোচনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. আল-আমিন বলেন, একটি কোম্পানির নয় মাসে ইপিএস ছিল ২ টাকা ৭৫ পয়সা। যা ভালো ব্যবসা এবং বিনিয়োগযোগ্য। কিন্তু ১ বছরের ব্যবসায় কোম্পানিটি ইপিএস দেখালো ৯৯ পয়সা নেগেটিভ। এখন যেসব বিনিয়োগকারী ৯ মাসে ২ টাকা ৭৫ পয়সা দেখে বিনিয়োগ করলো, তাকে কি এখানে দোষ দেওয়া যাবে। সে তো ঠিকই ফান্ডামেন্টাল দেখে বিনিয়োগ করেছিল। এ ধরনের অ্যাকাউন্টস যারা প্রকাশ করে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।

এমএএস/এমএএইচ/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।