ইইউ’র সঙ্গে বাণিজ্য বাড়াতে কাউন্সিল গঠন করবে সরকার
ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সঙ্গে বাণিজ্য বাড়াতে সরকার একটি বাণিজ্যিক কাউন্সিল গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ।
বুধবার সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে বাংলাদেশে সফররত ইউরোপিয়ন ইউনিয়ন পার্লামেন্ট সদস্য জিয়ান লামবার্ট-এর নেতৃত্বে ১০ সদস্যের উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে মতবিনমিয় শেষে এ কথা জানান তিনি।
তোফায়েল আহমেদ বলেন, ইউরোপিয়ন ইউনিয়ন বাংলাদেশে বিনিয়োগ ও বাণিজ্য বৃদ্ধি করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। বাংলাদেশের শ্রমিকদের কর্মবান্ধব পরিবেশ এবং অধিকার প্রতিষ্ঠায় সরকার ও শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিকদের গৃহীত পদক্ষেপ এবং অগ্রগতিতে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন তারা।
মন্ত্রী বলেন, ইউরোপিয়ন ইউনিয়নের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির সুবিধার্থে বাংলাদেশের অবস্থানরত ৮টি ইউরোপিয়ন দেশের রাষ্ট্রদূত এবং বিনিয়োগ ও বাণিজ্যের সাথে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি নিয়ে একটি বিজনেস কাউন্সিল গঠন করা হবে। এতে বেসরকারি সেক্টরের প্রতিনিধিদের রাখার বিষয় পরীক্ষা নিরীক্ষা করে দেখা হবে।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পকে একটি শক্ত ভিত্তির উপর দাঁড় করাতে সবধরনের সফল পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে সরকার। অপ্রত্যাশিত রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পর সরকার ও মালিক পক্ষ থেকে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের ফলে বাংলাদেশে আর কোন দুর্ঘটনা ঘটেনি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের শিল্প কারাখানা বিগত যে কোন সময়ের চেয়ে নিরাপদ ও কর্মবান্ধব। ইপিজেডসহ সকল কারখানায় শ্রমিকদের অধিকার, নিরাপদ কাজের পরিবেশ ও উপযুক্ত মজুরি নিশ্চিত করা হয়েছে। ক্রেতা গোষ্ঠীর সংগঠন অ্যাকোর্ড, অ্যালায়েন্স এবং ন্যাশনাল ইনেশিয়েটিভ প্রায় তিনহাজার আটশত ফ্যাক্টরি পরিদর্শ করে সন্তুষ প্রকাশ করেছে।
তোফায়েল আহমেদ জানান, ক্রুটিপূর্ণ ৩৭টি ফ্যাক্টরি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে এবং ৪২টি মধ্যে কিছু সমস্যা আছে, সেগুলো ক্রুটিমুক্ত করা হচ্ছে। শ্রম পরিদফতরকে অধিদফতরে পরিণত করা হয়েছে, পদির্শক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। শ্রম আইন সংশোধন করা হয়েছে। ক্রেতাদের সকল শর্ত পূরণ করা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, ইউরোপিয়ন ইউনিয়ন বাংলাদেশকে জিএসপিসহ সবধরনের ব্যবসায়ীক সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ অস্ত্র ছাড়া সকল পণ্য রফতানিতে ডিউটি ও কোটা ফ্রি সুবিধা পাচ্ছে। গত ২০১০ সালে ইউরোপিয়ন ইউনিয়নে রফতানি ছিল ৮ দশমিক ২২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, ২০১৫ সালে তা দাঁড়িয়েছে ১৭ দশমিক ৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে।
মতবিনিময় অনুষ্ঠানে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন, ইউরোপিয়ন ইউনিয়ন পার্লামেন্ট সদস্য জিয়ান লামবার্ট, রিচার্ড হাউইট ইভান ইস্টিফেন্স, ড. সাজ্জাদ করিম এবং ঢাকায় নিযুক্ত ইউরোপিয়ন ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত পিয়েরি মেউডনএবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
এসএ/এসকেডি/আরএস/এবিএস