ট্রানজিট চুক্তি

ভুটানের সঙ্গে ব্যবসা আরও সহজ হবে, আশা বাণিজ্যমন্ত্রীর

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৫:২২ পিএম, ২২ মার্চ ২০২৩

বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য সহজতর করার লক্ষ্যে ‘এগ্রিমেন্ট অন দ্য মুভমেন্ট অব ট্রাফিক ইন ট্রানজিট অ্যান্ড প্রোটোকল’ সই হয়েছে। বাংলাদেশের পক্ষে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি এবং ভুটানের শিল্প, বাণিজ্য ও কর্মসংস্থান মন্ত্রী কর্মা দর্জি এ চুক্তিতে সই করেন। এই ট্রানজিট চুক্তির আওতায় বাংলাদেশে বিমান, রেল, স্থল, নৌবন্দর ও সমুদ্রবন্দর ব্যবহারের সুযোগ পাবে ভুটান।

বুধবার (২২ মার্চ) ভুটানের রাজধানী থিম্পুতে এই চুক্তি সই হয়। এ সময় ভুটানের শিল্প, বাণিজ্য ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব দাশ তাশি ওমাং, শক্তি ও নবায়নযোগ্য সম্পদ বিষয়ক সচিব দাশ কর্মা শেরিং, ভুটান চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি এবং ভুটানের বিভিন্ন অধিদপ্তরের মহাপরিচালকরা উপস্থিত ছিলেন।

চুক্তি সই অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, যুগান্তকারী এই চুক্তি সইয়ের মধ্য দিয়ে দুই দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য আরও সহজতর হওয়ার পাশাপাশি বাণিজ্য সম্পর্ক নতুন মাত্রা পাবে। এই চুক্তি দেশের জন্য কূটনৈতিক, অর্থনৈতিক, সংযোগ এবং কৌশলগত সুবিধা বয়ে আনবে বলেও জানান তিনি।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিচক্ষণ নেতৃত্বে প্রতিবেশী রাষ্ট্রসমূহের মধ্যে বাংলাদেশ আন্তঃযোগাযোগ বৃদ্ধি ও আঞ্চলিক ভ্যালু চেইন সমৃদ্ধ করার মাধ্যমে ব্যবসা বাণিজ্যের প্রসার ঘটাতে চায়। এর অংশ হিসেবে চারিদিকে স্থলভাগ বেষ্টিত ভুটানকে বাংলাদেশ ট্রানজিট চুক্তির আওতায় বিমান, রেল, স্থল, নৌবন্দর ও সমুদ্রবন্দর ব্যবহারের সুযোগ দিচ্ছে।

এই চুক্তির ফলে উভয় দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক বৃদ্ধি এবং আঞ্চলিক যোগাযোগে ব্যাপক প্রসার ঘটবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে ভুটানের পণ্য রপ্তানি ও আমদানি করলে বাংলাদেশ বিভিন্ন ফি এবং চার্জ লাভ করবে। এছাড়া অবকাঠামোগত উন্নয়ন ঘটবে। ট্রানজিট এগ্রিমেন্ট বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশের সমুন্দ্র বন্দরসমূহ অধিকতর কর্মক্ষম হবে এবং রাজস্ব আয় বাড়বে। অধিকন্তু কর্মসংস্থান বৃদ্ধিসহ বন্দরসমূহের সার্বিক কার্যক্রমে গতিশীলতা আনায়ন করবে।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে এই ঐতিহাসিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে পেরে আমি গর্বিত। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে মহান মুক্তিযুদ্ধের সমাপ্তির প্রাক্কালে ৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ সালে বাংলাদেশকে সর্বপ্রথম স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ায় তিনি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। একই সঙ্গে বাংলাদেশ-ভুটানের নিবিড় বন্ধুত্বকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্ক উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। দ্বিপাক্ষিক এই সহযোগিতা ও অংশীদারত্ব ভবিষ্যতে আরও সম্প্রসারিত ও শক্তিশালী করতে উভয় রাষ্ট্র প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

টিপু মুনশি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে গত এক দশকে অর্থ-বাণিজ্য, স্বাস্থ্য-শিক্ষা এবং যোগাযোগ ও অবকাঠামোসহ সব খাতে অসাধারণ সাফল্য অর্জিত হয়েছে। যার ফলে বাংলাদেশ এখন বিশ্বের ৩৫তম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশে রূপান্তরিত হয়েছে, পরিচিতি পেয়েছে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে।

এসময় বিগত বছরগুলোর ন্যায় সব আঞ্চলিক এবং বহুপাক্ষিক ফোরামে বাংলাদেশকে সমর্থন প্রদান অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান তিনি। পাশাপাশি জলবিদ্যুৎ উৎপাদনে সহযোগিতার মাধ্যমে বাংলাদেশের ট্রিলিয়ন ডলারের যাত্রায় ভুটানকে উন্নয়ন অংশীদার হওয়ার আহ্বান জানান মন্ত্রী।

চুক্তি সই অনুষ্ঠানের পর ভুটানের মন্ত্রী, সচিব ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন বাণিজ্যমন্ত্রী। এ সময় তিনি কৃষি খাতে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা বিশেষ করে মাশরুমসহ কৃষিপণ্যের বাণিজ্য বাড়ানোর বিষয়ে গুরুত্ব আরোপ করেন।

আইএইচআর/কেএসআর/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।