মার্কিন ভিসানীতি
আতঙ্ক কাটিয়ে বিমায় ভর করে ঘুরে দাঁড়িয়েছে শেয়ারবাজার
যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞার খবরে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লে সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার শেয়ারবাজারে বড় দরপতন হয়। তবে ধীরে ধীরে সেই আতঙ্ক কেটে যাওয়ার আভাস পাওয়া যাচ্ছে। ঊর্ধ্বমুখী ধারায় ফিরেছে শেয়ারবাজার। শেয়ারবাজারে এই ঊর্ধ্বমুখী ধারা ফেরাতে মূখ্য ভূমিকা পালন করছে বিমাখাত।
সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবস মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) লেনদেনের শুরুতে শেয়ারবাজারে দাম বাড়ার ক্ষেত্রে দাপট দেখাচ্ছে বিমাখাত। প্রায় সবকটি বিমা কোম্পানির শেয়ার দাম বেড়েছে। এর ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে অন্য খাতের ওপরও। ফলে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠান।
প্রথম আধাঘণ্টার লেনদেনে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সবকটি মূল্য সূচক ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে। সেই সঙ্গে দাম বাড়ার তালিকায় রয়েছে বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠান। তবে লেনদেনে ধীরগতি দেখা যাচ্ছে।
প্রথম আধাঘণ্টার লেনদেনে ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক বেড়েছে ১২ পয়েন্ট। আর লেনদেন হয়েছে ৬০ কোটি টাকার বেশি। দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ১০০-এর বেশি প্রতিষ্ঠান।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) প্রথম আধাঘণ্টার লেনদেনে মূল্য সূচক ঊর্ধ্বমুখী অবস্থায় রয়েছে। সেই সঙ্গে দাম বাড়ার তালিকায় রয়েছে বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠান। এ বাজারটিতেও লেনদেনে ধীরগতি দেখা যাচ্ছে।
এর আগে গত শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ভিসা নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি জানানো হয়। এতে কারো নাম উল্লেখ করা না হলেও যাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে তাদের বিষয়ে বলা হয়, তারা বাংলাদেশের বর্তমান ও সাবেক কর্মকর্তা, ক্ষমতাসীন ও বিরোধী রাজনৈতিক দলের সদস্য, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য, বিচারবিভাগের সদস্য এবং নিরাপত্তা সংস্থার সদস্য।
যাদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হচ্ছে সেসব ব্যক্তি বা তাদের পরিবারের সদস্যরা হয়তো যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন না বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়। বলা হয়, ভবিষ্যতে আরো কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচনী প্রক্রিয়া ক্ষুণ্ন করা বা এর সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ পাওয়া গেলে তারাও একই ভিসা নীতির আওতায় পড়তে পারেন।
যুক্তরাষ্ট্রের এই ভিষা নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা আসার পর রোববার শেয়ারবাজারে প্রথম লেনদেন হয়। এই নিষেধাজ্ঞার খবরে রোববার শেয়ারবাজারে বড় দরপতন হয়। ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লেখাতে পারে মাত্র ১২টি প্রতিষ্ঠান। এই বড় দরপতনের পর সোমবার বিমা কোম্পানিগুলোর ওপর ভর করে কোনো রকমে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখতে পায় শেয়ারবাজার।
এ পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ার মাধ্যমে। এ দাম বাড়ার ক্ষেত্রে নেতৃত্ব দেয় বিমা কোম্পানিগুলো। লেনদেন শুরু হতেই ডিএসইর প্রধান সূচক ২ পয়েন্ট বেড়ে যায়। লেনদেনের প্রথম আধাঘণ্টাজুড়েই বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের নাম বাড়ার ধারা অব্যাহত থাকে। এতে আধাঘণ্টার মাথায় ডিএসইর প্রধান সূচক ১২ পয়েন্ট বেড়ে যায়।
লেনদেনের শুরু থেকেই দাম বাড়ার ক্ষেত্রে দাপট দেখাতে থাকে বিমা কোম্পানিগুলো। লেনদেনের সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বিমা কোম্পানিগুলোর দাম বাড়ার প্রবণতা বাড়তে দেখা যাচ্ছে। এ প্রতিবেদন লেখার সময় ১০টা ৪৪ মিনিটে ৪৯টি বিমা কোম্পানির শেয়ার দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১টি বিমার।
বিমা খাতের এমন দাপটের মধ্যে সব খাত মিলে ডিএসইতে ১২২টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় রয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ২০টির। আর ৭২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
ফলে ডিএসইর প্রধান সূচক বেড়েছে ৮ পয়েন্ট। তবে অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই-৩০ সূচক ১ পয়েন্ট বেড়েছে। আর ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক ১ পয়েন্ট বেড়েছে। এ সময় পর্যন্ত ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৯১ কোটি ৪ লাখ টাকা।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৭ পয়েন্ট বেড়েছে। লেনদেন হয়েছে ৪৬ লাখ টাকা। লেনদেন অংশ নেওয়া ৫৫ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দাম বেড়েছে ৩১টির, কমেছে ১০টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১৪টির।
এমএএস/এসএনআর/এমএস