ইউআইইউতে ‘অস্থিরতা’র কারণ খুঁজতে স্বাধীন তদন্ত কমিটি

বেসরকারি ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে (ইউআইইউ) শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ও উপাচর্যসহ ১১ কর্মকর্তার পদত্যাগে সৃষ্ট অস্থিতিশীলতার কারণ খুঁজতে তিন সদস্যের স্বাধীন তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
সোমবার (২৮ এপ্রিল) বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের পক্ষ থেকে এ কমিটি গঠন করা হয়। আগামী সাতদিনের মধ্যে এ কমিটিকে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
কমিটিতে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক মো. মুজিবুর রহমানকে সভাপতি করা হয়েছে। এছাড়া ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. সাদিদ মুনিরকে সদস্য এবং সদস্যসচিব হিসেবে রয়েছেন স্কুল অব বিজনেস অ্যান্ড ইকোনমিক্সের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তারিক হাসান।
ট্রাস্টি বোর্ডের বিবৃতিতে বলা হয়, ইউআইইউ’র ট্রাস্টি বোর্ড ক্যাম্পাস ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সাম্প্রতিক ঘটনার ব্যাপারে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে। এসব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এবং বিভিন্ন অভিযোগ-দাবি ও গণমাধ্যমে প্রচারিত তথ্যের সত্যতা যাচাই সাপেক্ষে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
এতে আরও বলা হয়, দেশের উচ্চশিক্ষার উন্নয়নে অবদান রাখা এবং স্বচ্ছতার প্রতি ইউআইইউর অঙ্গীকারের অংশ হিসেবে পুরো ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের স্বাধীন তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
‘এ কমিটি সাম্প্রতিক ঘটনাবলী ও ক্যাম্পাসে অস্থিরতার বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ ও নিরপেক্ষ তদন্ত পরিচালনা করবে। আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে সব প্রাসঙ্গিক প্রমাণ, অনুসন্ধান ও সাক্ষ্যসহ বিস্তারিত প্রতিবেদন জমা দেবে। প্রতিবেদন অনুযায়ী বোর্ড অব ট্রাস্টি সবধরনের পদক্ষেপ নেবে।’
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অমানবিক আচরণ করার অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয়টির সিএসই বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ নুরুল হুদাকে চাকরি থেকে অব্যাহতিসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা। দাবি না মানায় তারা শনিবার (২৬ এপ্রিল) বিকেল থেকে আমরণ অনশন শুরু করেন।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলন দমাতে ইন্টারনেট বন্ধসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়ে ইউআইইউ কর্তৃপক্ষ। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে শিক্ষার্থীরা উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আবুল কাশেম মিয়ারও পদত্যাগের দাবি তোলেন।
আন্দোলনের মুখে একপর্যায়ে শনিবার রাত ৯টার দিকে পদত্যাগের ঘোষণা দেন উপাচার্য। এরপর তার সঙ্গে ডিন, বিভাগীয় প্রধান, পরিচালকসহ আরও ১০ কর্মকর্তা পদত্যাগপত্র জমা দেন।
তবে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের কৌশলী পদত্যাগপত্র দেওয়ার প্রতিবাদ এবং সব ডিন, বিভাগীয় প্রধানদের একযোগে পদত্যাগকে সাজানো নাটক অভিহিত করে তাদের অবরুদ্ধ করে রাখেন। রাতভর নানা নাটকীয়তা শেষে রোববার (২৭ এপ্রিল) ভোর সাড়ে ৪টার দিকে অবরুদ্ধদশা থেকে মুক্ত হন উপাচার্যসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষক।
এরপরও রোববার (২৭ এপ্রিল) দিনভর ক্যাম্পাসে অবস্থান কর্মসূচি, সংবাদ সম্মেলনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি করেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে অবশেষে সোমবার (২৮ এপ্রিল) বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ।
এএএইচ/এমএএইচ/এএসএম