মিটফোর্ড হত্যাকাণ্ড
প্রতিবাদ মিছিলে অশ্লীল ভাষার ব্যবহার কাম্য নয়: বুয়েট উপাচার্য
পুরান ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতালের (স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ) সামনে ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে ও পাথর মেরে হত্যার প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের মিছিল থেকে অশ্লীল ভাষার ব্যবহার কোনোভাবেই কাম্য নয় বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) উপাচার্য অধ্যাপক ড. আবু বোরহান মোহাম্মদ বদরুজ্জামান।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে উপাচার্য বলেন, ‘কয়েকদিন আগে মিটফোর্ডের সামনে একজন ব্যবসায়ীকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। এরপর প্রতিবাদ করার জন্য বুয়েট ও ঢাবি থেকে মিছিলের আয়োজন করা হয়েছিল, যা যথাযথভাবে প্রতিবাদ করারই কাজ। কিন্তু প্রতিবাদ মিছিলে অশ্লীল ভাষার ব্যবহার কোনোভাবেই কাম্য নয়।’
শুক্রবার (১৮ জুলাই) বুয়েটের জনসংযোগ দপ্তর থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। জুলাই পুনর্জাগরণ অনুষ্ঠানামালার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন তিনি।
বুয়েট উপাচার্য বলেন, প্রতিবাদের বিষয়ে আমরা অবশ্যই প্রতিবাদ করবো। কিন্তু সেটা নৈতিকতা বিসর্জন দিয়ে নয়। আশা করি, আমরা আবার সেই ফিনিক্স পাখির মতো জেগে উঠবো এবং আমাদের যে দায়িত্ব সেটা নিজ নিজ জায়গা থেকে পালন করবো। দেশের উন্নয়নে আমরা সবার সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করবো।’
আবু বোরহান মোহাম্মদ বদরুজ্জামান বলেন, জুলাই আন্দোলনের স্মৃতি শুধু স্মৃতি হিসেবেই থাকবে না। আমরা দেখেছি বর্বরতা, আমরা দেখেছি পিটিয়ে হত্যা করার মতো ঘটনা। পুনর্জাগরণের জন্য যারা যুদ্ধ করেছেন, নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন; তাদের উদ্দেশ্য সফল করার জন্য আমাদের সব ধরনের বর্বরতা ও অনৈতিক কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকতে হবে।’
তিনি বলেন, আমরা চেয়েছিলাম নৈতিক সোসাইটি তৈরি করতে। সে পথেই আমাদের এগোতে হবে। তা না হলে এ বলিদান, আত্মাহুতির কোনো মূল্য থাকবে না। আমি শুধু মুখে মুখে বলবো আর সেটা কাজকর্মে প্রকাশিত হবে না, তাহলে কিন্তু কোনো লাভ হবে না এবং উদ্দেশ্য ব্যর্থ হবে। আত্মাহুতি দেওয়া বিফলে যাবে। আমরা দ্বিতীয়বার সুযোগ পেয়েছি, হয়তো তৃতীয়বার আমাদের জন্য সে সুযোগ নাও আসতে পারে।
শুভেচ্ছা বক্তব্যে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. আব্দুল হাসিব চৌধুরী বলেন, সত্য ভাষণে যে শক্তি আছে, অশ্লীলতায় সেই শক্তি নেই। শক্তিহীন মানুষ তার অশ্লীল বাক্য দিয়ে নিজের ক্ষোভ প্রকাশ করতে চায়। বুয়েট শিক্ষার্থীরা এ কাজ করতে পারে না। পুনর্জাগরণে বুয়েট এ দেশকে অতীতেও পথ দেখিয়েছে, ভবিষ্যতেও দেখাবে।
অনুষ্ঠানে বুয়েটের বিভিন্ন অনুষদের ডিন, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা আন্দোলনে তাদের স্মৃতিচারণ ও অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন। সবশেষে ছোট পরিসরে একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে প্রাপ্ত প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়।
এএএইচ/এমএএইচ/