৪৪তম বিসিএসের সংশোধিত ফল এ সপ্তাহে প্রকাশের দাবি এনসিপির
রিপিট ক্যাডার ইস্যুতে ঝুলে থাকা ৪৪তম বিসিএসের সংশোধিত ফলাফল এ সপ্তাহেই প্রকাশের দাবি জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। একই সঙ্গে তারা চলতি বছরের মধ্যেই এ বিসিএসে চূড়ান্ত সুপারিশপ্রাপ্তদের গেজেট প্রকাশ করার জোর দাবি তুলেছেন।
রোববার (২৬ অক্টোবর) দুপুরে সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোবাশ্বের মোনেমের সঙ্গে আলোচনা করে এসব দাবি জানান এনসিপির একটি প্রতিনিধিদল। এতে নেতৃত্ব দেন দলটির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ।
ঝুলে থাকা ও চলমান বিসিএস পরীক্ষাগুলোর অগ্রগতিবিষয়ক আলোচনায় এনসিপির পক্ষ থেকে মোট ১৫টি দাবি লিখিতভাবে পিএসসি চেয়ারম্যানকে দেওয়া হয়। তাতে বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষায় ১০০ নম্বর, প্রিলিমিনারি ও লিখিত পরীক্ষার নম্বর প্রকাশ ও ৪৪তম বিসিএসের সংশোধিত প্রকাশসহ গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয় তুলে ধরা হয়।
সভা শেষে হাসনাত আব্দুল্লাহ সাংবাদিকদের বলেন, জুলাই অভ্যুত্থান শুরুই হয়েছিল বিসিএসে বৈষম্য রোধের জন্য। কিন্তু এখনও পিএসসির মধ্যে সমন্বয়হীনতা রয়েছে।
তিনি বলেন, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সর্বত্র গুন্ডামি। মন্ত্রণালয়ে যারা আছেন, তারা এখনকার সময়ে দাঁড়িয়েও যুগের সঙ্গে তাল মেলাতে পারছেন না। তাদের প্রাধান্য তালিকায় চাকরিপ্রার্থীরা নেই। যার ফলস্বরূপ এ প্রজন্মের ক্রোধ তাদের দেখতে হবে।
বিসিএস নিয়ে এনসিপির ১৫ দফা
১. প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরে ঝুলে থাকা নন-ক্যাডার বিধি সংশোধন করতে হবে। পরীক্ষার্থীদের স্বার্থে দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য পিএসসি থেকে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর চিঠি ইস্যু করে হবে। ৪৩ বিসিএস থেকেই যেন সংশোধিত বিধি প্রয়োগ করা যায়, তা নিশ্চিত করতে হবে।
২. জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় কর্তৃক পিএসসিতে ৪৩তম বিসিএস নন-ক্যাডার প্রার্থীদের জন্য অধিযাচিত পদসমূহে দ্রুততম সময়ে সুপারিশ কার্যক্রম সম্পন্ন করতে হবে।
৩. ৪৪তম বিসিএসে অধিযাচিত ৮৭০ পদ বৃদ্ধিসহ চলমান সপ্তাহেই পুনঃফলাফল বা সংশোধিত ফলাফল প্রকাশ করতে হবে। সবচেয়ে দীর্ঘ সময় ধরে এ বিসিএসের গেজেট চলতি বছরেই প্রকাশ করতে হবে।
৪. ২০২৩ সালের নন-ক্যাডার বিধির সংশোধন প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করে চলমান (৪৩, ৪৪,৪৫,৪৬ ও ৪৭তম) সব বিসিএস থেকে সর্বোচ্চ সংখ্যক নন-ক্যাডার পদে সুপারিশের ধারা অব্যাহত রাখতে হবে।
৫. ৪৩তম বিসিএস নন-ক্যাডার যারা পূর্বে ১২ গ্রেডের প্রধান শিক্ষক হিসেবে সুপারিশ পেয়েছেন, তাদের যেন মেধার ভিত্তিতে নতুন সার্কুলারে যুক্ত করা হয়।
৬. ৪৫তম বিসিএস ভাইভার হাজিরাপত্রে ভাইভার নম্বর ১০০ আপডেট করা।
৭. স্বচ্ছতা রক্ষায় প্রিলিমিনারি, লিখিত ও ভাইভার নম্বর প্রকাশ।
৮. চূড়ান্ত নম্বরপত্র ওয়েবসাইটে রোল নম্বর দিয়ে দেখার ব্যবস্থা করা।
৯. পুলিশ ভেরিফিকেশন জটিলতা হ্রাস ও একমাসের মধ্যে প্রক্রিয়া শেষ করা।
১০. ক্যালেন্ডার ইয়ারে প্রতিটি বিসিএস শেষ করা।
১১. শিক্ষা ও স্বাস্থ্য স্পেশাল বিসিএসে প্যানেল সিস্টেম রাখা।
১২. ভাইভা বোর্ডভিত্তিক নম্বরের তারতম্য হ্রাসে ক্যাটাগরি নির্ধারণ।
১৩. প্রিলিমিনারি থেকে লিখিত পরীক্ষার মধ্যবর্তী সময় দুই মাস বা ৫০ দিন রাখা ও লিখিত রুটিন আগে প্রকাশ।
১৪. চূড়ান্ত রেজাল্টের আগে ক্রস চেক করে সম বা নিচের ক্যাডার না পাওয়া নিশ্চিত করা।
১৫. পিএসসির পরীক্ষাগুলো গ্রেডভিত্তিক (ক্লাস্টার/সমন্বিত) আয়োজন।
পিএসসি চেয়ারম্যানের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে এনসিপির প্রতিনিধিদলে অন্যদের মধ্যে ছিলেন দলের যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরা শারমিন ও যুগ্ম সদস্যসচিব মোহাম্মদ মিরাজ মিয়া।
এএএইচ/এমআইএইচএস/জিকেএস