বই ছাড়াই চলছে ক্লাস, এখনো ছাপা বাকি ২ কোটির বেশি

মুরাদ হুসাইন
মুরাদ হুসাইন মুরাদ হুসাইন , জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৭:২৬ পিএম, ২১ জানুয়ারি ২০২৩
ফাইল ছবি

নতুন শিক্ষাবর্ষের ২১ দিন হয়ে গেলেও এখনো দুই কোটির বেশি বই মুদ্রণই হয়নি। এর মধ্যে মাধ্যমিক স্তরের বই সোয়া দুই কোটি এবং প্রাক-প্রাথমিক স্তরের এক লাখ ১০ হাজার। সে কারণে ঢাকা মহানগরসহ দেশের বিভিন্ন উপজেলায় বই ছাড়াই ক্লাস শুরু হয়েছে। তবে মুদ্রণশিল্প সমিতির দাবি, এখনো আট কোটি বই পৌঁছায়নি শিক্ষার্থীদের হাতে।

তবে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ফরহাদুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেছেন, ‘অধিকাংশ পাঠ্যবই চলে গেছে। সামান্য কিছু বই যায়নি। সেগুলোর মুদ্রণকাজ চলছে। জানুয়ারির মধ্যেই সব বই সরবরাহ করা সম্ভব হবে।’

জানা গেছে, সবচেয়ে বেশি সংকট তৈরি হয়েছে নতুন শিক্ষাক্রমের বই নিয়ে। প্রথম, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির বইয়ের কারিকুলাম পরিবর্তন হওয়ায় পুরোনো বই পড়ানো যাচ্ছে না বলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বইয়ের জন্য এক ধরনের হাহাকার তৈরি হয়েছে। কবে নাগাদ সব বই পাওয়া যাবে তা কেউ বলতে পারছে না। এই সুযোগে এক শ্রেণির ব্যবসায়ী বিনামূল্যের পাঠ্যবই বিক্রির মহোৎসবে মেতে উঠেছেন। ঢাকার বাইরে বিভিন্ন স্থান থেকে এরই মধ্যে বিনামূল্যের বই বিক্রি ও পাচারের অভিযোগ এসেছে।

আরও পড়ুন>> ভাঙারি দোকানে নতুন বই বিক্রি, প্রধান শিক্ষক কারাগারে

যদিও এনসিটিবিরই আরেকটি সূত্র জানায়, গত বৃহস্পতিবার (১৯ জানুয়ারি) পর্যন্ত প্রাথমিকে আট কোটি ৫০ লাখ আর মাধ্যমিকে ২১ কোটির ২০ লাখ বই সরবরাহ করা হয়েছে। গত তিনদিনে প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের আরও ৪০ লাখ বই চলে গেছে। সেই হিসাবে এখনো দুই কোটির বেশি বই পৌঁছানো বাকি রয়েছে। এবার সরকার সারাদেশে প্রায় ৩৩ কোটি ৯০ লাখ বিনামূল্যের পাঠ্যবই বিতরণ করবে।

মুদ্রণ সংশ্লিষ্টরা জানান, পাঠ্যবই সরবরাহে মধ্য ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময় লেগে যেতে পারে। এজন্য বিভিন্ন প্রকাশনা সংস্থা অতিরিক্ত এক থেকে দুই মাস সময় চেয়েছে। এর মূল কারণ কাগজ সংকট। সবচেয়ে বেশি বই আটকে আছে এমন প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বারোতোপা, অগ্রণী, ভয়েজার, দশদিশা, এসআর, প্রমাসহ অন্তত ২৪ প্রতিষ্ঠানের নাম পাওয়া গেছে।

আরও পড়ুন>> শিশুদের নতুন কারিকুলামের বই নিয়েও অনিশ্চয়তা

মুদ্রণশিল্প সমিতির সাধারণ সম্পাদক জহুরুল ইসলাম শনিবার (২১ জানুয়ারি) জাগো নিউজকে বলেন, ‘এখন পর্যন্ত মাধ্যমিকের পাঁচ কোটি ও প্রাথমিকের তিন কোটি বই বাকি রয়েছে। তার মধ্যে মোটাদাগে বারোতোপা প্রিন্টিং প্রেসে এক কোটি, অগ্রণী প্রেসে দুই কোটি বই এখানো বাকি রয়েছে। এছাড়াও ছোট-বড় অনেক প্রেস এখনো বই পাঠাতে পারেনি।’

তিনি বলেন, ‘আগামী মার্চেও এসব পাঠানো সম্ভব হবে না। কাগজ সংকটের নামে পরিদর্শন ছাড়াই নিম্নমানের ছয় কোটির অধিক বই ছাড়পত্র দিয়ে উপজেলায় পাঠানো হয়েছে। এনসিটিবি বই পাঠানোর যে হিসাব দিচ্ছে তা ঠিক নয়। অনেক উপজেলায় বই না পাঠিয়ে কাগজ-কলমে সেখানে পাঠিয়েছে বলে হিসাব দেখানো হচ্ছে।’

আরও পড়ুন>> দুই-একটি বই দিয়ে বরিশালে বই উৎসব

এ বিষয়ে এনসিটিবির চেয়ারম্যান বলেন, ‘এখানো যারা বই দিতে পারেনি তাদের এ মাসের মধ্যে দিতে বলা হয়েছে। এর বাইরে অতিরিক্ত সময় দেওয়া হবে না। এরপরও যারা দেরি করে বই দেবে, তাদের ক্ষেত্রে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এমএইচএম/ইএ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।