ব্যানবেইসের প্রতিবেদন

ছাত্রদের চেয়ে ছাত্রী বেশি, শিক্ষকতায় বহু পিছিয়ে নারীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৯:৪৫ এএম, ২৯ মার্চ ২০২৪

সারাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বেশ কয়েক বছর ধরেই ছাত্রদের চেয়ে ছাত্রীর হার বেশি। বাংলাদেশ শিক্ষা তথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরোর (ব্যানবেইস) সর্বশেষ প্রতিবেদনেও একই চিত্র উঠে এসেছে। ২০২৩ সালের তথ্যের ওপর ভিত্তি করে করা প্রতিবেদনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ছাত্রদের চেয়ে এক লাখ ৭ হাজার বেশি ছাত্রী।

শিক্ষার্থী পর্যায়ে ছেলেদের চেয়ে মেয়েরা এগিয়ে গেলেও এখনো শিক্ষকতায় নারী কম। শিক্ষকদের সিংহভাগই পুরুষ। মোট শিক্ষকের মধ্যে মাত্র ২৮ শতাংশ নারী। বাকি প্রায় ৭২ শতাংশ পুরুষ।

বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশ শিক্ষা তথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরোর (ব্যানবেইস) করা ‘বাংলাদেশ শিক্ষা পরিসংখ্যান-২০২৩’-এর খসড়া প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) বিকেলে ব্যানবেইসে অডিটরিয়ামে আয়োজিত কর্মশালায় এ তথ্য তুলে ধরা হয়। এরপর এটি চূড়ান্ত আকারে প্রকাশ করবে প্রতিষ্ঠানটি। কর্মশালায় এ তথ্য তুলে ধরেন ব্যানবেইসের পরিসংখ্যান বিভাগের প্রধান শেখ মো. আলমগীর। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব সোলেমান খান।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী—দেশে বর্তমানে মাধ্যমিক পর্যায় থেকে শুরু করে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান পর্যন্ত মোট শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১ কোটি ২ লাখ ৯৬ হাজার ৬৯৫ জন। এরমধ্যে ছাত্রী ৫২ লাখ ১ হাজার ৮৯০ এবং ছাত্র ৫০ লাখ ৯৪ হাজার ৮০৫ জন।

ছাত্রদের চেয়ে ছাত্রী বেশি, শিক্ষকতায় বহু পিছিয়ে নারীরা

অর্থাৎ, ছেলেদের চেয়ে ১ লাখ ৭ হাজার ৮৫ জন বেশি মেয়ে শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে। আর শতাংশের হিসাবে ছাত্রীর হার ৫০ দশমিক ৫২ শতাংশ এবং ছাত্র ৪৯ দশমিক ৪৮ শতাংশ।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

এদিকে, সারাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী পর্যায়ে গত কয়েক বছর ধরে ছাত্রীদের আধিপত্য দেখা গেলেও শিক্ষকতায় নারীরা এখনো বেশ পিছিয়ে। ব্যানবেইসের তথ্যানুযায়ী—২০২৩ সাল পর্যন্ত দেশে মোট শিক্ষক সংখ্যা ৬ লাখ ৪৬ হাজার ৩৯ জন।

যার মধ্যে নারী শিক্ষক মাত্র ১ লাখ ৮২ হাজার ২৮৮ জন। বাকি ৪ লাখ ৬৩ হাজার ৭৫১ জনই পুরুষ। মোট শিক্ষকের মধ্যে ৭১ দশমিক ৭৮ শতাংশ পুরুষ এবং ২৮ দশমিক ২২ শতাংশ নারী।

আরও পড়ুন

বিজ্ঞাপন

প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী—দেশে বর্তমানে মাধ্যমিক থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত মোট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৪৫ হাজার ৬২৬টি। এরমধ্যে ২ হাজার ৬৩৮টি প্রতিষ্ঠান সরকারি এবং বেসরকারি ৪২ হাজার ৯৮৮টি। অর্থাৎ, দেশে সরকারির চেয়েও ১৬ গুণ বেশি বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।

ব্যানবেইসের পরিসংখ্যান বিভাগের প্রধান শেখ মো. আলমগীর বলেন, ‘আমরা তথ্য সংগ্রহ করেছি এবং তা দিয়ে প্রতিবেদন করেছি। শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়ার কারণ, ছাত্রদের পিছিয়ে পড়া কিংবা নারীদের শিক্ষকতায় এখনো সেভাবে সরব উপস্থিতি না থাকার বিষয়টি সরকারের সংশ্লিষ্টরা এবং শিক্ষাবিদরা তুলে আনবেন।’

ছাত্রদের চেয়ে ছাত্রী বেশি, শিক্ষকতায় বহু পিছিয়ে নারীরা

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘ঠিক কী কারণে এটা হচ্ছে, সেই ব্যাখ্যা প্রাথমিকভাবে আমরা দিতে পারবো না। আমাদের দেওয়ারও কথা নয়। পরিসংখ্যানটা আমরা তুলে এনেছি। এখন আমাদের প্রতিবেদনের এ তথ্য ধরে সংশ্লিষ্টদের কাজ করার সুযোগ তৈরি হবে।’

ছাত্রীরা এগিয়ে যাচ্ছে এটা ভালো দিক বলে মনে করেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও গণসাক্ষরতা অভিযানের প্রধান নির্বাহী রাশেদা কে চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘প্রায় ৭-৮ বছর ধরে এটা লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে ছাত্রীরা বেশ এগিয়ে। এটা নিঃসন্দেহে ভালো দিক। আমরা চাইবো- ছাত্র এবং ছাত্রীরা সমান্তরালভাবে এগিয়ে যাক। কেউ বেশি পিছিয়ে পড়বে, কেউ বেশি এগিয়ে যাবে, সেটাও কাম্য নয়।’

শিক্ষকতায় নারীরা এখনো অনেক পিছিয়ে- এ প্রসঙ্গে রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, ‘ছাত্রীরা এগিয়ে যাচ্ছে, এটা খুব বেশি দিনের নয়। আগে শিক্ষকতায় নারী আরও কম ছিল। এখন বাড়ছে। আগামী দিনে হয়তো আরও বাড়বে। তবে সরকারকে এ বিষয়ে উদ্যোগী হতে হবে।’

বিজ্ঞাপন

জাগোনিউজের খবর পেতে ফলো করুন

তিনি বলেন, ‘শিক্ষকতায় নারীদের আগ্রহী করে তুলতে হবে। প্রতিষ্ঠানে সেই পরিবেশটাও নিশ্চিত করতে হবে। আমরা (গণসাক্ষরতা অভিযান) এবারও নারীদের শিক্ষকতায় আনতে বাজেট বরাদ্দ রাখার সুপারিশ করেছি। আশা করি, এক দশক পর শিক্ষকতায় নারীদের অংশগ্রহণও আশাব্যঞ্জক হবে।’

এএএইচ/এমকেআর/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন jagofeature@gmail.com ঠিকানায়।