বাপুসের মতবিনিময়

বইমেলা বাধাগ্রস্ত হলে জাতির সাংস্কৃতিক পরাজয়ের শামিল হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৯:৪১ পিএম, ১২ অক্টোবর ২০২৫
বইমেলা নিয়ে বাপুস আয়োজিত মতবিনিময় সভা

২০২৬ সালের অমর একুশে বইমেলা আয়োজনে সৃষ্ট অনিশ্চয়তা ও বিলম্ব নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতি (বাপুস)।

সংগঠনটির নেতারা বলছেন, অমর একুশে বইমেলা বাংলাদেশের স্বাধীনতা, ভাষা ও সংস্কৃতির প্রতীক। এটি কেবল একটি বাণিজ্যিক আয়োজন নয়, বরং জাতির আত্মপরিচয়ের সঙ্গে যুক্ত ঐতিহ্য। এই মেলা বাধাগ্রস্ত হলে তা জাতির সাংস্কৃতিক পরাজয়ের শামিল হবে।

রোববার (১২ অক্টোবর) বিকেলে বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে এক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। ‘অমর একুশে বইমেলা ২০২৬ : অনিশ্চয়তার সময়ে লেখক-পাঠক-প্রকাশক’ শীর্ষক এ সভা আয়োজন করে বাপুস।

মতবিনিময় সভায় দেশের শীর্ষস্থানীয় প্রকাশক, লেখক, পাঠক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

বক্তারা বলেন, নির্বাচন-পরবর্তী সময়ে মেলা আয়োজনের প্রস্তাব বাস্তবতার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। কারণ, ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহে জাতীয় নির্বাচন, এরপর রমজান ও ঈদুল ফিতর—এই সময়সারণির কারণে এপ্রিলের আগে মেলা আয়োজন কার্যত অসম্ভব। অন্যদিকে, এপ্রিলের তীব্র গরম ও পরবর্তী ঝড়-বৃষ্টির সময়ে বিশাল মেলার কাঠামো নিরাপদে নির্মাণ ও পরিচালনাও বাস্তবসম্মত নয়।

তারা আরও বলেন, বইমেলা বন্ধ বা বিলম্বিত হওয়ার যুক্তি হিসেবে যে নিরাপত্তা ঝুঁকির কথা বলা হচ্ছে, তা দক্ষ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে সমাধান করা সম্ভব। দেশের ইতিহাসে কখনো বইমেলা সন্ত্রাস বা বিশৃঙ্খলার কারণে বন্ধ হয়নি—এটিই প্রমাণ করে যে বইমেলা বরং জাতির ঐক্য ও প্রগতির প্রতীক।

এসময় তিনটি দাবি উত্থাপন করা হয়। দাবিগুলো হলো—
১) ২০২৬ সালের অমর একুশে বইমেলা ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫ থেকে ১৭ জানুয়ারি ২০২৬-এর মধ্যে আয়োজন করতে হবে।

২) সরকার ও বাংলা একাডেমিকে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হবে, যেন প্রকাশনা শিল্প, লেখক ও পাঠক সবাই যথাযথ প্রস্তুতি নিতে পারেন।

৩) নিরাপত্তা ও অন্য বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে সময়মতো মেলা আয়োজনের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়কে প্রয়োজনীয় সমন্বয়ের উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।

সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির বইমেলা স্ট্যান্ডিং কমিটির সভাপতি আবু বাশার ফিরোজ শেখ। বক্তব্য রাখেন- বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির সহ-সভাপতি গোলাম এলাহী জায়েদ, মনিরুজ্জামান খান (প্রকাশক, সঞ্চিতা), শিবলী আজাদ (লেখক), পুলীন বকসী (লেখক)।

এছাড়াও উন্মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন ইফতেখার আমিন (প্রকাশক, শব্দশৈলী), আবু বকর সিদ্দিক রাজু (প্রকাশক স্বরে অ), মঈন মুরসালিন (প্রকাশক, সম্পাদক) প্রমুখ।

এমএইচএ/এমকেআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।