নোবেল সাহিত্য পুরস্কারের শতবর্ষ: বিশদ আলোকপাত

মিজানুর রহমান মিথুন
মিজানুর রহমান মিথুন মিজানুর রহমান মিথুন , লেখক ও সাংবাদিক
প্রকাশিত: ১২:৩১ পিএম, ৩১ মার্চ ২০২৪

বিশ্বের শ্রেষ্ঠ পুরস্কার হচ্ছে ‘নোবেল পুরস্কার’। সঙ্গত কারণে তাই এ পুরস্কারটি নিয়ে বিশ্বের সব প্রান্তের মানুষের মাঝে ব্যাপক কৌতূহল রয়েছে। যেসব মানুষ তাদের কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে বিশ্বকে বদলে দেন, মানুষের কল্যাণে কাজ করেন; তাদের এ পুরস্কারে ভূষিত করা হয়।

‘নোবেল পুরস্কার’ যেন রূপকথার পরশ পাথর। কারণ এ পুরস্কারপ্রাপ্ত ব্যক্তি পুরস্কারের তালিকায় নাম লেখানোর সঙ্গে সঙ্গে হয়ে ওঠেন পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মানুষ। হয়ে যান বিশ্বের সব মানুষের শ্রদ্ধেয় ও পূজনীয় ব্যক্তি। ইতিহাসের পাতায় ঠাঁই নিয়ে হয়ে যান স্মরণীয়-বরণীয়।

‘নোবেল পুরস্কার’ পেলে পুরস্কারপ্রাপ্ত ব্যক্তি মহান মানুষে পরিণত হন। যে পুরস্কার মানুষকে মহান ও শ্রেষ্ঠ মানুষে পরিণত করে সেই মানুষটি আসলে কত মহান ছিলেন, তা বোধ হয় আমাদের অনেকেরই অজানা।

নোবেল পুরস্কারের ইতিহাসের চমকপ্রদ নানা দিক নিয়ে লেখক-গবেষক গাজী আজিজুর রহমান লিখেছেন দারুণ একটি বই। বইটির নাম ‘নোবেল সাহিত্য পুরস্কারের শতবর্ষ’। নাম শুনেই বোঝা যাচ্ছে- বইটিতে নোবেল পুরস্কারের সাহিত্য শাখার কথা বিশদভাবে আলোকপাত করা হয়েছে।

লেখক-গবেষক গাজী আজিজুর রহমানের ‘নোবেল সাহিত্য পুরস্কারের শতবর্ষ’ বইটি পাঠ করে পাঠক নোবেল পুরস্কারের ইতিহাসের কথাও জানতে পারবেন। জানতে পারবেন নোবেল পুরস্কারের প্রবর্তকের বর্ণাঢ্য জীবন ও স্বপ্ন সম্পর্কে।

‘নেবেল পুরস্কার’ প্রবর্তন করেছেন বিশ্ব বিখ্যাত সুইডিশ বিজ্ঞানী স্যার আলফ্রেড বার্নাড নোবেল। তিনি কী কারণে বিশ্বজুড়ে খ্যাতি লাভ করেছিলেন? এককথায় এর জবাব হচ্ছে ‘ডিনামাইট’। হ্যাঁ, তিনি ডিনামাইট নামক বোমা আবিষ্কার করেছিলেন! অথচ সেই বোমার অর্থে দেওয়া হচ্ছে বিশ্বসেরা পুরস্কার!

আরও পড়ুন

‘নোবেল সাহিত্য পুরস্কারের শতবর্ষ’ বইটির মুখবন্ধের শুরুটা এরকম, ‘আমরা নোবেল পুরস্কারের শতবর্ষ পেরিয়ে এলাম। সবচেয়ে মর্যাদাশীল এই পুরস্কার নিয়ে বিশ্ববাসীর আবেগ, আগ্রহ, উত্তেজনার শেষ নেই। বিশেষত সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার কে পাচ্ছে প্রতিবছর তা নিয়ে থাকে টান টান উত্তেজনা। যেন নোবেল পুরস্কার বলতে বোঝায় সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার। তাই সবচেয়ে তর্ক-বিতর্কের ঝড় ওঠে এই পুরস্কারটি নিয়ে।’ আসলেই নোবেল পুরস্কারটির নাম সেই শৈশবে প্রথম শুনেছি কবিগুরু বরীন্দ্রনাথের জীবনী পড়ে। সেই সময়ে আমি বুঝেছিলাম শুধু সাহিত্যকর্মের জন্যই কেবল এই পুরস্কারটি প্রদান করা হয়ে থাকে!

‘নোবেল সাহিত্য পুরস্কারের শতবর্ষ’ বইটিকে লেখক দুই ভাগে ভাগ করার চেষ্টা করেছেন বলে এটি পাঠ করে আমার তাই মনে হয়েছে। প্রথমভাগের ‘লর্ড ডিনামাইট’ এক কীর্তিস্তম্ভ মানুষের প্রতিনাম’ শিরোনামের লেখাটির শুরু কথা হচ্ছে, ‘সুপ্রসিদ্ধ রসায়ন বিজ্ঞানী, সমাজ বিজ্ঞানী, বহুভাষাবিদ, ব্যবসায়ী, কবি ও চিরকুমার স্যার আলফ্রেড বার্নাড নোবেল (১৮৮৩৩-৯৬) বিশ্ববিজ্ঞান ও মানবসভ্যতার ইতিহাসে একটি প্রাতঃস্মরণীয় নাম। সুইডেনের স্টকহোমে জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চার ঐতিহ্যবাহী পরিবারে তার জন্ম। পিতা আর্কিটেক্ট, গবেষক ও শিল্পপতি ইমানুয়েল নোবেল। মা ক্যারোলিনা।’

বইটির প্রথমভাগকে আটটি আলাদা আলাদা শিরোনামে সাজানো হয়েছে। শিরোনামগুলো হচ্ছে- ‘লর্ড ডিনামাইট’ এক কীর্তিস্তম্ভ মানুষের প্রতিনাম, নোবেল কী একটি বিতর্কিত পুরস্কার?, প্রথম মহাযুদ্ধ পর্ব, দ্বিতীয় মহাযুদ্ধ পর্ব, মহাযুদ্ধোত্তর পর্ব, নোবেল সাহিত্য পুরস্কার নির্বাচন সংস্কার চাই, নোবেল সাহিত্য পুরস্কার বিষয় কিছু টুকিটাকি সংবাদ ও পুরস্কারের বিভিন্ন পরিসংখ্যান। এই ৮টি শিরোনামের লেখায় নোবেল পুরস্কারের নানা দিক সবিস্তারে তুলে ধরা হয়েছে।

বইটির নাম যেহেতু ‘নোবেল সাহিত্য পুরস্কারের শতবর্ষ’ তাই দ্বিতীয়ভাগে ১৯০৯ থেকে ২০০০ সাল এই ১০০ বছরে বিশ্বের যেসব খ্যাতিমান লেখক সাহিত্যিক নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন, তাদের পরিচিতি একনজরে তুলে ধরা হয়েছে।

‘নোবেল সাহিত্য পুরস্কারের শতবর্ষ’ বইটি আলফ্রেড বার্নাড নোবেল ও তার প্রবর্তিত নোবেল পুরস্কার সম্পর্কে জানার নতুন দুয়ার খুলে দেবে। এজন্য লেখক গাজী আজিজুর রহমানকে ধন্যবাদ জানাই। এটি পাঠ করে উল্টে-পাল্টে খুঁজলাম লেখকের সঙ্গে পরিচয় হওয়ার জন্য। কিন্তু কোথাও লেখকের পরিচিতি পেলাম না। আশা করছি আগামী সংস্করণে বইটির এ অপূর্ণতাটুকুও থাকবে না।

এসইউ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।