১৯৮৫ সালের মামলায় ইমরান হাশমির স্ত্রী ইয়ামি

বিনোদন ডেস্ক
বিনোদন ডেস্ক বিনোদন ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৪:৪৩ পিএম, ২৪ এপ্রিল ২০২৫

বলিউড অভিনেত্রী ইয়ামি গৌতম ও অভিনেতা ইমরান হাশমি সম্প্রতি শেষ করলেন একটি কোর্টরুম ড্রামার শুটিং। যার কাহিনি সেই ১৯৮৫ সালের আলোচিত শাহ বানু বনাম আহমেদ খান মামলার উপর ভিত্তি করে নির্মিত।

হিন্দুস্তান টাইমসের এক প্রতিবেদনে জানা গেছে, এই সিনেমায় ইয়ামি গৌতম শাহ বানু চরিত্রে অভিনয় করেছেন। ইমরান হাশমি অভিনয় করছেন তার প্রাক্তন স্বামী আহমেদ খান অনুপ্রাণিত একটি চরিত্রে। সিনেমার শুটিং ইতোমধ্যেই শেষ হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

এই মামলাটি ভারতের আইন ও সমাজের ইতিহাসে একটি মোড় ঘোরানো মুহূর্ত হিসেবে বিবেচিত হয়। এটি ধর্মীয় বিশ্বাস ও গণতান্ত্রিক অধিকার, বিশেষ করে মুসলিম পার্সোনাল ল’ এবং লিঙ্গ সমতার প্রশ্ন নিয়ে ব্যাপক বিতর্কের সূচনা করেছিল।

১৯৭৮ সালে মধ্যপ্রদেশের ইন্দোরে, শাহ বানু নামের একজন মুসলিম মহিলা তার সাবেক স্বামীর বিরুদ্ধে আদালতে আর্থিক সাহায্যের আবেদন করেন। আহমেদ খান নামের ওই ব্যক্তি একজন নামকরা আইনজীবী ছিলেন। তারা ১৯৩২ সাল থেকে বিবাহিত ছিলেন এবং পাঁচ সন্তানের জনক-জননী।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

শাহ বানু তার আবেদনটি ফৌজদারি কার্যবিধির ১২৫ ধারা অনুসারে করেন, যেখানে বলা আছে- যদি কোনো নারী নিজে উপার্জন করতে না পারেন তবে তার স্বামী তাকে বিবাহ বিচ্ছেদের পরও খরচ দিতে বাধ্য থাকবেন।

তবে আহমেদ খান দাবি করেন, মুসলিম পার্সোনাল ল অনুযায়ী তিনি শুধু ইদ্দত পর্ব পর্যন্তই খরচ দিতে বাধ্য। ইদ্দত হচ্ছে বিবাহ বিচ্ছেদ বা স্বামীর মৃত্যুর পর একজন নারীর জন্য নির্ধারিত তিন মাসের অপেক্ষার সময়।

এই মামলায় অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ড আহমেদ খানের পক্ষ নেয় এবং দাবি করে, এই রকম পারিবারিক বিষয়ে আদালতের হস্তক্ষেপ ইসলামিক শরিয়াহ আইনের বিরুদ্ধে যাবে। তাদের মতে, ১৯৩৭ সালের মুসলিম পার্সোনাল ল (শরিয়ত) অ্যাপ্লিকেশন অ্যাক্ট অনুযায়ী, মুসলিমদের পারিবারিক বিষয় ইসলামি আইন অনুযায়ী মীমাংসা হওয়া উচিত।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

দীর্ঘ শুনানির পর, ১৯৮৫ সালে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট শাহ বানুর পক্ষে রায় দেয় এবং তাকে ফৌজদারি কার্যবিধি অনুযায়ী খরচ পাওয়ার অধিকার স্বীকৃতি দেয়। সেই সময়ের প্রধান বিচারপতি ওয়াই. ভি. চন্দ্রচূড় রায়ে বলেন, সিআরপিসি ধর্ম নির্বিশেষে সকল নাগরিকের জন্য প্রযোজ্য। আদালত রায় দেয়, শাহ বানু খরচ পাবেন। তার খরচের পরিমাণ আরও বাড়ানো হয়।

জাগোনিউজের খবর পেতে ফলো করুন

এই রায় ভারতের আইনি ব্যবস্থায় একটি ঐতিহাসিক দৃষ্টান্ত স্থাপন করে। এটি ইউনিফর্ম সিভিল কোড (সার্বজনীন দেওয়ানি আইন)-এর প্রয়োজনীয়তা ও নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠার বিষয়ে এক নতুন আলোচনার সূচনা করে।

এলআইএ/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন jagofeature@gmail.com ঠিকানায়।