লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন সৌমিত্র
টানা ২৩ দিন হাসপাতালের বেডে লড়ছেন কলকাতার বর্ষীয়ান অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। একবার শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়তো আবার অবনতি। করোনা আক্রান্ত হলেও আপাতত সেটি থেকে রক্ষা পেয়েছেন। তবে বর্তমানে অন্যান্য জটিলতায় ভুগছেন এ অভিনেতা। তাকে সুস্থ করতে প্রাণপণ লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন চিকিৎসকরা। শারীরিকভাবে বেঁচে থাকার লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন অশীতিপর সৌমিত্র।
প্রথমবারের মতো ডায়ালাইসিস করা হয়েছে কলকাতার তার। সফলভাবেই সম্পন্ন হয়েছে তার ডায়ালাইসিস। এর পাশাপাশি আরেকটি স্বস্তির খবর জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। সেটি হলো- নতুন করে আর অবস্থার অবনতি হয়নি সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের।
চিকিৎসক জানিয়েছেন, হাসপাতালের বিছানায় রীতিমতো ফাইট (লড়াই) করে যাচ্ছেন তিনি।
তবে শরীরে ইউরিয়ার মাত্রা জানতে বৃহস্পতিবার (২৯ অক্টোবর) ফের রক্তপরীক্ষা করা হবে। প্রয়োজনে ফের করা হতে পারে ডায়ালাইসিস।
কলকাতার সংবাদমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ৫০ শতাংশ ভেন্টিলেশন সাপোর্টে রাখা হয়েছে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়কে। এতে শ্বাস নিতে সমস্যা হচ্ছে না তার। নতুন করে জ্বর আসেনি তার, হয়নি রক্তপাতও। সচেতনতার মাত্রা গ্লাসগো কোমা স্কেলে ৯-১০।
করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত ৬ অক্টোবর থেকে হাসপাতালে ভর্তি আছেন ৮৫ বছর বয়সী এ অভিনেতা। একটা সময় তাকে বাইপ্যাপ সাপোর্টে দেয়া হয়েছিল। এরপর অবশ্য তার অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়। করোনা রিপোর্টও নেগেটিভ এসেছিল।
কিন্তু অবস্থার ফের অবনতি ঘটে গত ২৪ অক্টোবর। করোনা এনসেফ্যালোপ্যাথির সংক্রমণ বেড়েছিল সৌমিত্রের শরীরে। এরপরেই দেশ ও বিদেশের স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেয়া হয়। আগে থেকেই এনসেফালোপ্যাথির জটিল সমস্যায় আক্রান্ত ছিলেন পর্দার ‘অপু’। পাশাপাশি কমেছিল প্লাটিলেটের সংখ্যা। বেড়েছিল ইউরিয়া আর সোডিয়ামের মাত্রা। ইমিউনোগ্লোবিন এবং স্টেরয়েড দিয়ে একটা সময় পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও তা দীর্ঘস্থায়ী হয়নি।
প্রসঙ্গত, ১৯৩৫ সালের ১৯ জানুয়ারি নদীয়া জেলার কৃষ্ণনগরে জন্মগ্রহণ করেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের আমহার্স্ট স্ট্রিট সিটি কলেজে সাহিত্য নিয়ে পড়াশোনা করেন।
১৯৫৯ সালে তিনি প্রথম সত্যজিৎ রায়ের পরিচালনায় অপুর সংসার ছবিতে অভিনয় করেন। সত্যজিতের ৩৪টি সিনেমার ১৪টিতেই অভিনয় করেছেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়।
সিনেমা ছাড়াও তিনি বহু নাটক, যাত্রা এবং টিভি ধারাবাহিকে অভিনয় করেছেন। অভিনয় ছাড়া তিনি নাটক ও কবিতা লিখেছেন, নাটক পরিচালনা করেছেন। তিনি একজন আবৃত্তিকারও।
এফআর/পিআর