যে কারণে ঘটা করে পালিত হয় বন্ধু দিবস

ফিচার ডেস্ক
ফিচার ডেস্ক ফিচার ডেস্ক
প্রকাশিত: ১২:১৬ পিএম, ০৬ আগস্ট ২০২৩

বন্ধুত্ব কখনো পুরোনো হয় না, আবার বন্ধু হতেও কোনো বয়সের ধরাবাঁধা নিয়ম নেই। যে কোনো বয়সেই যে কেউ হয়ে উঠতে পারে আপনার প্রিয় বন্ধু। তবে বেশিরভাগ সময় দেখা যায় ছোটবেলার স্কুলের বন্ধুরাই থেকে যায় আজীবন। বন্ধুত্বের সম্পর্ক আসলে আত্মার।

এলবার্ট হুবার্ট লিখেছিলেন, বন্ধু হয় সেই ব্যক্তিরাই যারা আপনার সম্পর্কে সব জানে, সত্য-মিথ্যার বাইরে আপনাকে পছন্দ করে। বন্ধুদের খুঁজে পেতে অনেকেই শেষ বয়সে সোশ্যাল মিডিয়া কিংবা পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেন। অনেকে পেয়েও যান বন্ধুদের। কয়েক যুগ পর বন্ধুদের কাছে পাওয়ার সেই অনুভূতি আবেগ আপ্লুত করেছে সবাইকে।

jagonews24

যে কারণে বছরের একটি দিন বরাদ্দ করা আছে শুধু বন্ধু দিবস পালনের জন্য। সারা বছর যে বন্ধুদের সঙ্গে কাটান তাদেরকে বলা হয় না যে তাদের আপনি কতটা ভালোবাসেন আজকের দিনে বলুন। আবার যাদের বছরের পর বছর দেখা হয় না তাদের সঙ্গেও দেখা করতে পারেন আজ। আজ ফ্রেন্ডশিপ ডে বা বন্ধু দিবস। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আগস্টের প্রথম রোববার পালিত হয় এই বন্ধু দিবস।

আরও পড়ুন: আজ যত খুশি আইসক্রিম খান

বছরের সব দিনগুলোই বন্ধুদের দিন। তাও একটি বিশেষ দিন রয়েছে বন্ধুত্ব উদযাপনের জন্য, তা হলো ফেন্ডশিপ ডে। ওয়ার্ল্ড ফ্রেন্ডশিপ ক্রুসেডের পক্ষ থেকেই প্রথম ১৯৫৮ সালের ৩০ জুলাই আন্তর্জাতিক বন্ধুত্ব দিবসের প্রস্তাব উত্থাপিত হয়। বন্ধুত্বের মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ সংস্কৃতির স্থাপনের জন্য প্রচার চালায় এই সংস্থা।

দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশেও এরপর ছড়িয়ে যায় দিবসটি। বন্ধু দিবসে বন্ধুদের ফুল, কার্ড, রিস্ট ব্যান্ড ইত্যাদি উপহার দিয়ে বন্ধুদের প্রতি ভালোবাসা জ্ঞাপন করা হয়। একেক দেশে একেক তারিখে বন্ধু দিবস পালিত হয়। অনেকেই মনে করেন প্রথম দিকে বিভিন্ন কার্ড তৈরিকারী প্রতিষ্ঠান ফ্রেন্ডশিপ ডে’র চল শুরু করে। পরবর্তী সময়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধির সঙ্গে এই দিন উদযাপন বিশাল আকার ধারণ করে।

১৯৫৮ সালের ২০ জুলাই বিশ্বব্যাপী বন্ধুত্ব দিবস পালনের চিন্তা ডা. র্যামন আর্টেমিও ব্রাকোর মাথায় আসে। প্যারাগুয়ে শহরের পুয়ের্তো পিনাস্কোয়ে নিজের বন্ধুদের সঙ্গে নৈশভোজে বসেছিলেন তিনি। তখনই বন্ধুদের সঙ্গে মিলে গড়ে তোলেন মেরি গ্রুপ ওয়ার্ল্ড ফ্রেন্ডশিপ ক্রুসেড।

jagonews24

আরও পড়ুন: আজ ভুলে যাওয়ার দিন

এই সংস্থাটি জাতি, বর্ণ, ধর্ম, ভাষা, লিঙ্গ নির্বিশেষে নিঃস্বার্থ ও মানবদরদী বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য কাজ করে। এরপর ১৯৯৮ সালে রাষ্ট্রসংঘ তৎকালীন সাধারণ সচিব কোভি আন্নানের স্ত্রী ন্যান আন্নান উইনি দ্য পু কার্টুন চরিত্রকে বন্ধুত্বের দূত হিসেবে চিহ্নিত করেন।

তবে অনেক ইতিহাসবিদ মনে করেন ফ্রেন্ডশিপ ডে উদ্ভাবন করেন। ১৯৩০ সালের ২ আগস্ট হলমার্ক কার্ডের প্রতিষ্ঠাতা জয়েস হল বন্ধুত্ব দিবসের আয়োজন করেন। যেন সবাই একসঙ্গে মিলে বন্ধুত্বের উৎসব পালন করতে পারেন। তবে সবাই তখন বুঝতে পারেন যে, এটি গ্রিটিংস কার্ড বিক্রির কৌশল। তবে এখান থেকেই এই বন্ধু দিবসের ধারণা এসেছে বলেও মনে করেন অনেকে।

১৯৫৮ সালের ৩০ জুলাই প্রথম ফ্রেন্ডশিপ ডে উদযাপিত হওয়র পর ‘জেনারেল অ্যাসেম্বলি অব দ্য ইউনাইটেড নেশন’ ২০১১ সালের ৩০ জুলাই দিনটি আন্তর্জাতিক বন্ধু দিবস হিসেবে ঘোষণা করে রাষ্ট্রসংঘ। মূলত জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ জাতি, বর্ণ, লিঙ্গ, ধর্ম ইত্যাদি নির্বিশেষে বিভিন্ন দেশের মানুষের বন্ধুত্বের একটি শক্তিশালী বন্ধন তৈরি করার লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক বন্ধুত্ব দিবস ঘোষণা করে।

সূত্র: ন্যাশনাল টুডে

কেএসকে/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।